‘উদাসীন রাজ্য সরকার, নিষ্ক্রিয় পুলিশ’, হাইকোর্টে রিট পিটিশন জমা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের

VBU: সম্প্রতি, পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ের জেরে রোজকার খাবারটুকুও জুটছে না বলে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন উপাচার্য বিদ্য়ুত্‍ চক্রবর্তী।

'উদাসীন রাজ্য সরকার, নিষ্ক্রিয় পুলিশ', হাইকোর্টে রিট পিটিশন জমা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2021 | 1:55 AM

বীরভূম: অচলাবস্থা এখনও কাটেনি। তারমধ্যেই সরাসরি রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করে পুলিশ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে রিট পিটিশন জমা দিল বিশ্বভারতী (VBU) কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারই হাইকোর্টে এই মামলা পেশ হতে পারে। পাশাপাশি, ক্য়াম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল বিশ্বভারতী।

কী উল্লেখ করা হয়েছে সেই পিটিশনে? বলা হয়েছে, পুলিশ ও আধিকারিক নিয়োগ করে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করার নির্দেশ জারি করুক আদালত। পাশাপাশি, সেন্ট্রাল অফিসের সামনের গেটে পড়ুয়াদের তালা ঝোলানো, গেট টপকে উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশের চেষ্টা-সহ একাধিক অভিযোগ জানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় (VBU) কর্তৃপক্ষের তরফে। ৩৮ পাতার সেই পিটিশনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিক্ষোভের ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও সাহায্য় পাওয়া যায়নি। এমনকি, পুলিশ সুপারকে ফোন করেও কোনও লাভ হয়নি বলেই অভিযোগ। তাই পূর্বের স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরুক বিশ্বভারতী।

সম্প্রতি, পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ের জেরে রোজকার খাবারটুকুও জুটছে না বলে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের আচার্য নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন উপাচার্য বিদ্য়ুত্‍ চক্রবর্তী। ক্রমেই জটিল হচ্ছে বিশ্বভারতীর পরিস্থিতি। পড়ুয়া বিক্ষোভের জেরে বাড়তি নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশ প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (VBU) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পুলিশের কাছে চিঠি মারফত বাড়তি নিরাপত্তা চেয়েছেন উপাচার্য। এই চিঠির কথা স্বীকার করেছেন জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী। এদিকে উপাচার্য যখন বাড়তি নিরাপত্তা চাইছেন, তখন শ্লীলতাহানির অভিযোগে থানায় এফআইআর করেন দুই ছাত্রীও!

বিশ্বভারতীর উপাচার্যের আবেদন প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন তিনি পুরো বিষয়ের উপর বাড়তি নজর দিচ্ছেন। উল্লেখ্য, এরপরেই বুধবার বিশ্বভারতীর গেটের সামনে গত দিনের চেয়ে জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা। চোখে পড়েছে বাড়তি পুলিশ নজরদারি। সোমবারই উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ফেস্টুন লাগাতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের শ্লীলতাহানি করে বলে শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ করেছেন দুই ছাত্রী। তাঁদের বিস্ফোরক দাবি, সেখানে উপস্থিত উপাচার্য বলেন, “মেয়ারা নয়, শুধু পুরুষ কর্মীরা সামলাক।”

তিন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে ও তার কারণ জানতে চেয়ে আন্দোলনে নেমেছেন ছাত্রছাত্রীরা। উপাচার্যের বাড়ির বাইরে আন্দোলনে অনড় তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে একাধিক। শিক্ষকমহলের একাংশের প্রশ্ন, কেন এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করছেন না উপাচার্য? প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে উপাচার্য এই দায় কি এড়িয়ে যেতে পারেন, সে প্রশ্নও উঠছে।

শুক্রবার, বিশ্বভারতীর মূল সেন্ট্রাল অফিস ঘেরাও ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। সেই বিক্ষোভ তুলতে গেলে কার্যত হাতাহাতি বাধে বিশ্বভারতী নিরাপত্তাকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। বিশ্বভারতী নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে ছাত্রদের গায়ে হাত তোলেন বলে অভিযোগ। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিদুৎ চক্রবর্তী-র সিএস বা আপ্ত সহায়কের গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান পড়ুয়ারা। তখন তিনি পড়ুয়াদের গাড়ি চাপা দিতে উদ্যত হন বলে বিস্ফোরক অভিযোগ আন্দোলনরত পড়ুয়াদের। এর পর উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে করেন পড়ুয়ারা।

সেই বিক্ষোভ তুলতে গিয়ে কর্মী ও নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি বাধে ছাত্রদের। পড়ুয়াদের গাড়ি চাপা দিতে উদ্যত হন বলে অভিযোগ উপাচার্যের আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে। গাড়ি থেকে নেমে তাঁকে পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘কেন শুনব তোমাদের কথা?’ পরে অবশ্য পড়ুয়াদের নিয়ে অফিসে গিয়ে কথা বলতে রাজি হন তিনি বলে খবর। অভিযোগ, সেই আপ্ত সহায়কের রাজি হওয়ার পর চার দিন কেটে গেলেও দেখা মেলেনি কর্তৃপক্ষের। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। আরও পড়ুন: তালিকায় রয়েছে নাম, দুয়ারে সরকার প্রকল্পে আবেদনকারীর নথি যাচাই করতেই চোখ কপালে প্রশাসনের!