এবার টেণ্ডার ডেকে বুক করুন ক্যাটারার
করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ যখন ধাক্কা মেরেছে, সেই সময়ে ভেঙে পড়া ক্যাটারিং শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে এই ভাবনা বেঙ্গল ক্যাটারার্স ক্লাবের কর্ণধার রবিন ঘোষের।
“আয় রে তবে চাওয়া যাক, মণ্ডা-মিঠাই খাওয়া যাক/ কোর্মা, কালিয়া, পোলাও, জলদি লাও… জলদি লাও।”
এরকম হোম ডেলিভারি বোধহয় কল্পনাতেই সম্ভব। গুপি-বাঘার কল্পলোকের গল্প নয়, একেবারে ঘোর বাস্তব। এবার থেকে যে কোনও অনুষ্ঠানে ক্যাটারার বুক করতে চাইলে যাচাই করে নিতে পারবেন প্রায় ৯০টি ক্যাটারিং সংস্থার মধ্যে থেকে। এক ছাদের তলায় এই বিশাল সংখ্যক ক্যাটারারকে আনল বেঙ্গল ক্যাটারার্স ক্লাব (Bengal Caterers Club)। ওই ক্যাটারিং সংস্থাগুলির সম্বন্ধে সব খুঁটিনাটি তথ্যও পাওয়া যাবে সেখানে। কী ঘরানার রান্না, কোন অঞ্চলে কাজ করে ওই ক্যাটারার, কত দিনের অভিজ্ঞতা, কত জন অতিথিকে এক সঙ্গে আপ্যায়নে সক্ষম ওই সংস্থা, সেই সমস্ত খোঁজ পাওয়া যাবে একসঙ্গে। এমনকি নিজের বাজেট এবং মেনু অনুসারে তুল্যমূল্য বিচার করে পার্সোনালাইজ়ড টেন্ডারও ডাকতে পারবেন ক্রেতা। যাঁরা ক্যাটারার, তাঁরাও পাবেন ক্রেতাদের দেওয়া টেন্ডারের নিলামে দর হাঁকার সুবিধা। একটা বিরাট অঞ্চলের ক্রেতাদের ফিডব্যাক এবং হোম ডেলিভারি পরিষেবা দেওয়ার সুযোগ। এই সব এবার এক ছাতার তলায় নিয়ে এল bengalcaterersclub.com।
ক্যাটারিং ইণ্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এই ব্যবসা অত্যন্ত অসংগঠিত ও বিচ্ছিন্নভাবে হয়। তার ওপর অতিমারির ফলে আরোপিত বিধিনিষেধে সামাজিক অনুষ্ঠানের অতিথি সংখ্যাতেও কোপ পড়েছে। তাই আরও বিপন্ন হয়ে পড়েছে এই ব্যবসা। আর এর সঙ্গে যুক্ত বিপুল সংখ্যক মানুষের অবস্থাও হয়েছে সঙ্গীন। এই ওয়েব পোর্টালের দ্বারা বিপুল সংখ্যক ক্রেতার সামনে এক বৃহত্তর বাজারের দরজা খুলে যাচ্ছে ক্যাটারারদের জন্য। একই সঙ্গে ক্রেতাদের কাছেও আসছে তুল্যমূল্য বিচার করে ক্যাটারার বুক করবার সুযোগ। ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে যোগাযোগটা হচ্ছে আরও সরাসরি। একটা বড় ভৌগোলিক অঞ্চল জুড়ে কাজ করতে পারছেন এক একজন ক্যাটারার। অনলাইন সেলসের মাধ্যমে বৃহত্তর সাপ্লাই চেইন এবং একটা বড় অঞ্চলের মানুষের ‘ফিডব্যাক’ পেতে পারবে একটি ক্যাটারার। এর ফলে পারস্পরিক সুবিধাযুক্ত একটি অর্থনীতি (Economics Of Mutual benefits)গড়ে উঠছে।
করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গ যখন ধাক্কা মেরেছে, সেই সময়ে ভেঙে পড়া ক্যাটারিং শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে এই ভাবনা বেঙ্গল ক্যাটারার্স ক্লাবের কর্ণধার রবিন ঘোষের। নোবেল পুরস্কার জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের ছাত্র রবিন বলছেন , “ভারতে ক্যাটারিং শিল্প ১৫ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে প্রতি বছরে এবং এই ব্যবসার বৃদ্ধির সূচক প্রতি বছরে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। তাই এই ই-কমার্স মঞ্চ আগামী দিনে ক্যাটারিং ব্যবসার ক্ষেত্রে হারা বাজি জিতিয়ে আনতে পারবে। শ্রেণীবদ্ধ বিজ্ঞাপন, ডিসপ্লে, গ্রাফিক্স আর ভিডিয়ো অ্যানিমেশনের মাধ্যমে ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে পারবে ক্যাটারিং সংস্থা। এই পোর্টালে যুক্ত হওয়ার জন্য ক্যাটারিং সংস্থাদের দেওয়া মেম্বারশিপ ফি ব্যবহার করে ভবিষ্যতে বেশ কিছু ওয়ার্কশপ, সেমিনার, ওয়েবিনার, ভার্চুয়াল ক্যাটারিং প্রদর্শনী, ব্র্যাণ্ড কনক্লেভ এবং নলেজ শেয়ারিং সেশন হবে বলেও জানিয়েছেন রবিন বাবু।
আরও পড়ুন- আপনি কি অন্তঃসত্ত্বা! তাহলেই অবশ্যই এড়িয়ে চলুন এই সবজি