Kalimpong: কালিম্পংয়ের গীতখোলা, গেলে মিলবে প্রাকৃতিক প্রশান্তি
Geetkhola: কালিম্পংয়ে এমন এক গ্রাম রয়েছে, যার ঠিকানা খুব কম মানুষই জানেন। কিন্তু এক সময় ব্রিটিশদের কাছে বেশ পরিচিত ছিল সেই গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর গোটা এলাকা। তবে এক সময় এই জায়গার প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করে দিয়েছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য।
কালিম্পং জেলার আনাচে-কানাচে লুকিয়ে রয়েছে অফবিট স্পট। এখন সারাবছরই মানুষ ভিড় জমায় উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি গ্রামগুলোতে। তবে, এমন এক গ্রাম রয়েছে, যার ঠিকানা খুব কম মানুষই জানেন। কিন্তু এক সময় ব্রিটিশদের কাছে বেশ পরিচিত ছিল সেই গ্রাম। যে গ্রামের চারদিক পাহাড় ও সবুজ জঙ্গলে ঘেরা আর রয়েছে ঝর্না। পাইনে ঘেরা ছোট্ট জনপদ। জায়গার নাম গীতখোলা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর গোটা এলাকা। তবে এক সময় এই জায়গার প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করে দিয়েছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য।
উনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশরা এই পাহাড়ি গ্রামের জঙ্গল থেকে গাছ কেটে আসবাবপত্র তৈরি করত। এমনকী এখানকার কাঠ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রপ্তানিও করা হত। তারপর ১৯৩৭ সালে এখানে একটা লোহার ব্রিজও তৈরি করে ব্রিটিশ সরকার। তারপর গীতখোলা থেকে কাঠ কাটার ব্যবসা আরও বেড়ে যায়। তবে, এখন আর কেউ এখানকার প্রাকৃতিক সম্পদে হাত দেয় না। বরং, এখানে মানুষের আনাগোনা খুব কম।
পাহাড়ের মাঝ দিয়ে অবিরাম বয়ে চলেছে ঝর্না। দু’পাশে ঘন সবুজ জঙ্গল। মাঝে এখনও রয়েছে ব্রিটিশদের তৈরি সেই লোহার ব্রিজ। লোহার ব্রিজের সঙ্গে এখানে ঢালাই করা ব্রিজও রয়েছে। সেটা একটু নীচের দিকে। এখন গ্রামের মানুষ ওই ব্রিজ উপর দিয়েই যাতায়াত করে। তবে আপনি হেঁটে পৌঁছে যেতে পারেন উপরের লোহার ব্রিজে। লোহার ব্রিজে উঠে যাওয়ার সময় সাবধান থাকা জরুরি। অযত্নে পড়ে থাকা ব্রিজের অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। তবে, এই ব্রিজ থেকে গীতখোলার ভিউ দেখা যাবে খুব সুন্দর।
যদিও এখানে একটা নয়, তিনটে ঝর্না একসঙ্গে নেমে আসে পাহাড়ের গা বেয়ে। তাই জায়গার নামও গীতখোলা থ্রি সিস্টার ওয়াটারফলস (Geet Khola Three Sister Waterfalls)। মেঘালয়ের সেভেল সিস্টার ওয়াটারফলসের মতো দৃশ্য যদিও এখানে পাবেন না, কিন্তু গীতখোলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও মন ভোলানো। এই তিনটে একসঙ্গে দেখতে গেলে ব্রিজের উপর দিয়ে হেঁটে যেতে হবে গীতখোলা ভিউ পয়েন্টে। এই ভিউ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে আপনি দেখতে পাবেন গীতখোলার আসল সৌন্দর্য।
গীতখোলা ভিউ পয়েন্টের রাস্তা ধরে মাত্র ৩ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাবেন নকডারা হ্রদ। নকডারা কালিম্পংয়ের অন্যতম অফবিট ডেস্টিনেশন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই নকডারা। ১০ হাজার ফুট এলাকা জুড়ে অবস্থিত নকডারা হ্রদ। সুতরাং, নকডারা থেকেও আপনি গীতখোলা আসতে পারেন। তবে, গীতখোলা যাওয়ার সবচেয়ে সহজ রাস্তা হল লুনসেন দিয়ে পৌঁছান। নিউমল জংশনে নেমে মালবাজার, ওদলাবাড়ি হয়ে পৌঁছে যান লুনসেল। লুনসেল থেকে কয়েক মিনিটের দূরত্বে এই গীতখোলা। গীতখোলায় রাত্রিযাপনের কোনও ব্যবস্থা নেই। তাই আপনাকে ঝান্ডি, লুনসেল কিংবা নকডারাতে রাত কাটাতে হবে।