Maharashtra: ময়ূরে ময়ূরে ছয়লাপ গ্রামের রং এখন বিদ্যুতের মতো নীল! বিস্ময়ের অপর নাম মোরাচি চিঞ্চোলি

Peacock Heaven: পুনে থেকে দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। মোরাচি চিনচোলি নামে শান্ত গ্রামটিকে সবাই ডাকেন ময়ূর গাঁ নামেও। ৩৫০ একরের গ্রামের ঘরের চালে, বেড়ায়, তেঁতুলের ডালে শুধু নীল ময়ূর! প্রকৃতির অদ্ভুত সৃষ্টি ময়ূরের সঙ্গে নিত্যবাস গাঁয়ের বাসিন্দাদের।

Maharashtra: ময়ূরে ময়ূরে ছয়লাপ গ্রামের রং এখন বিদ্যুতের মতো নীল! বিস্ময়ের অপর নাম মোরাচি চিঞ্চোলি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 01, 2022 | 7:30 AM

কংক্রিটের প্রাণহীন শহর ঢেকে দিয়েছে আকাশ। প্রতিদিনের জ্যাম, ধুলো, ধোঁয়া আর কাজের স্ট্রেসে হয়ে আসছে দমবন্ধ। এমন সময় নগরজীবন থেকে কয়েকদিনের জন্য পালিয়ে না গেলে বাঁচার কোনও উপায় সত্যিই নেই। প্রশ্ন হল যাবেন কোথায়? একটু অচেনা জায়গায় যেতে না পারলে যেন চোখ আর মনের আরাম হয় না। সেক্ষেত্রে পালানোর ঠিকানা হতে পারে মহারাষ্ট্রের মোরাচি চিনচোলি (Morachi Chincholi)। পুনে (Pune) শহর থেকে মাত্রা ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে গ্রামটি। অনেকেই এই গ্রামকে পিকক ভিলেজ (Peacock Village) বলেও ডাকেন। এক হাজারের বেশি ময়ূরের বাস এই গ্রামে। ৩৫০ একরের এই গ্রামে যখন বিকেল নামে আর ফিরে আসতে থাকে ময়ূরের দল, গোধূলি বেলার আলো ঠিকরে পড়ে ময়ূরের নীল গাত্র থেকে— তৈরি হয় অপূর্ব দৃশ্যকল্প! তেঁতুলের ডালে, বাড়ির বেড়ায়, মেটো রাস্তায় ময়ূরের শান্ত পদচারণা যেন তৈরি করে মোহময় পরিবেশ। গ্রামের নামও তৈরি হয়েছে ময়ূর আর তেঁতুল গাছ থেকেই। তারণ ‘মোর’ কথার অর্থ ময়ূর আর মারাঠিতে চিঞ্চ শব্দের অর্থ তেঁতুল।

স্থানীয়দের কথায় এলাকায় প্রায় ২৫০০-এর বেশি ময়ূর ও ময়ূরীর বাস। পর্যটকরাও জানাচ্ছেন, সংখ্যাটা এমনই হওয়া স্বাভাবিক। পেশোয়া রাজবংশের শাসনকালে হাজার হাজার তেঁতুলগাছ রোপণ করা হয়েছিল ময়ূরদের আকৃষ্ট করার উদ্দেশ্যে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়েও তেঁতুলগাছগুলির যথেষ্ট যত্ন নেওয়া হয়।

মোরাচি চিঞ্চোলির বাসিন্দারা ময়ূর ও ময়ূরীদেরও অত্যন্ত সম্মান করে। রাখে খেয়ালও। আর এর ফলে গ্রামটি ময়ূর ও ময়ূরীদের নিশ্চিন্ত বিহারের স্থান হয়ে উঠেছে যা আবার একাধিক পর্যটকদের আকৃষ্ট করে এই গ্রামে।

তবে শুধু ময়ূর নয়, এই গ্রাম দর্শনের অন্য আরও একটি কারণ রয়েছে। কৃষি পর্যটনও এই গ্রামের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মোরাচি চিঞ্চোলি গ্রামে প্রবেশের আগে একাধিক রিসর্ট ও হোটেলের দেখা মিলবে। তবে সত্যিকারের প্রকৃতির স্বাদ পেতে চাইলে গ্রামের হোম স্টে’তে থাকাই ভালো। কারণ গ্রাম চিনতে এসে কংক্রিটের জালে আটকে থাকলে মাটির স্বাদ মিলবে কোথায়! হোম স্টে’তে থাকলে গ্রামের বাসিন্দারাই পর্যটকদের ট্র্যাক্টরে চাপিয়ে ঘুরিয়ে দেখাবে গ্রামের রাস্তাঘাট, শস্যক্ষেত্র, সকালের সূর্যোদয়, শীতল জীবন! যে জীবনে কোনও প্রতিযোগিতা নেই, ঈর্ষা নেই, নেই একটা ব্রান্ডেড জিনস কিংবা বিলাসবহুল মোটরগাড়ির লিপ্সা। কারণ নীল কণ্ঠ ময়ূরের কাছে কিংবা মৃদু বাতাস আর তেঁতুল পাতার আলাপের কাছে, বাসাবদলু পিঁপড়ের কাছে অর্থের সত্যিই কোনও অর্থ নেই। কখন যাবেন?

শীতকাল, অর্থাৎ ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস হল মোরাচি চিঞ্চোলি দর্শনের সেরা সময়। সকালের কুয়াশায় মোড়া গ্রাম যেন রহস্যময় ময়ূরের লীলক্ষেত্র হয়ে ওঠে তখন। তাছাড়া শীতকালে জমি থেকে তোলা হয় হুরডা নামে ফসল। হুরডা হল তাজা সবুজ জোয়ার। হুরডা দিয়ে তৈরি নানা টিফিন মাহারাষ্ট্র ও গুজরাতে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে গ্রামের বাড়িতে বসে সদ্য খেত থেকে সংগ্রহ করা হুরডা দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়ার অভিজ্ঞতার সঙ্গে অন্য কোনও কিছুর তুলনায় চলে না! তাই না? কবে যাবেন তাহলে?