শেষ আর্যদের গ্রামে একদিন, জেনে নিন কী-কী রাখবেন চেকলিস্টে

ঘন নীল আকাশের প্রেক্ষাপটে ধূসর হলদেটে পাথর দিয়ে তৈরি ছবির মত ঘরবাড়ি। উষ্ণতা খুব একটা বেশি না হওয়ায় স্নানের ঘরে মাংস আর শাকসবজি রাখেন ব্রোকপারা।

শেষ আর্যদের গ্রামে একদিন, জেনে নিন কী-কী রাখবেন চেকলিস্টে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 06, 2021 | 10:22 AM

নন্দন পাল

দেশের একমাত্র খাঁটি আর্য দেখতে হলে আপনাকে আসতে হবে লাদাখের লেহ জেলার দা-হানু উপত্যকায়। ব্রোকপা উপজাতিকে মনে করা হয় শেষ খাঁটি আর্য বংশোদ্ভুত জনজাতি। আর সেই ব্রোকপাদের গ্রামের মধ্যে একমাত্র এই দু’টি গ্রামই পর্যটকদের জন্য খুলে রেখেছে প্রশাসন। দারুণ রঙিন এই ব্রোকপাদের সাজগোজ ও বেশভূষা। লাদাখ অঞ্চলের অন্যান্য এলাকার থেকে বেশ কিছুটা নীচুতে অবস্থিত হওয়ার জন্য এখানে শীত অনেকটাই কম। লাদাখের অন্যান্য অঞ্চলের মতো জমে যাওয়া ঠাণ্ডা নয়। বলা ভাল চিরবসন্তের গ্রাম।

travel

আর্য রক্তের শুদ্ধতা বজায় রাখতে ব্রোকপারা কেবলমাত্র নিজেদের জনগোষ্ঠীর মধ্যেই বিয়ে করেন। নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় এখানে নারীদের মধ্যে বহু-বিবাহের রেওয়াজ আছে। এখন অবশ্য আধুনিক ব্রোকপারা অন্য গোষ্ঠীতেও বিবাহ করছেন। তবে সেক্ষেত্রে তাদের ঠাঁই হয় না গ্রামে। গ্রামের বাইরে অন্যত্র চলে যেতে হয়। গ্রামে একটু ঘুরলেই চোখে পড়বে আঙুর, আপেল, খুবানি, বার্লি আর আখরোটের বাগান। এই গ্রামে পাওয়া যায় কমলা রঙের এক ধরনের ফুল যা বহু বছর একই রকম থেকে যায়। এই গ্রামের শস্যের উৎসব ‘বনোনা’ আর উপজাতিদের ব্রোকপা ভাষা উৎসব। সেই সময়ে আরও রঙিন হয়ে ওঠে গ্রামগুলো। পুরুষ ও নারী উভয়েই সাজতে ভালবাসে। মাথায় ফুল এবং ধাতব গয়না দিয়ে ব্রোকপা উপজাতির সাজ জগৎখ্যাত।

travel

ঘন নীল আকাশের প্রেক্ষাপটে ধূসর হলদেটে পাথর দিয়ে তৈরি ছবির মত ঘরবাড়ি। উষ্ণতা খুব একটা বেশি না হওয়ায় স্নানের ঘরে মাংস আর শাকসবজি রাখেন ব্রোকপারা। এই কারণে ওঁদের বাথরুমকে অনেকেই ‘ন্যাচারাল রেফ্রিজারেটর’-ও বলেন। ছবির মত সুন্দর গ্রাম আর টুকটুকে লাল গালের সুন্দর মানুষদের টানে প্রতি বছর বহু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটক আসেন এই দুই ব্রোকপা গ্রামে। জুন থেকে অক্টোবর দা-হানু আসার সেরা সময়। এক নজরে দেখে নিন দাহানু আসতে গেলে কী-কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

travel

চেকলিস্ট:

১. লেহ শহর থেকে দা-হানুর দূরত্ব এনএইচ-১ ধরে ১৮৮ কিলোমিটার। খালাতসে ও বাতালিকের মাঝে এই গ্রামগুলি। ২. যেহেতু ওই গ্রামগুলিতে পর্যটকদের থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই তাই-ই সকালবেলায় লেহ থেকে গিয়ে সে দিনই ফিরে আসতে হবে। নেই কোনও রেস্টুরেন্টও। তাই সঙ্গে পর্যাপ্ত খাবার ও জল নিয়ে যেতে হবে। ৩. অসমান পাহাড়ি পথে হাঁটার উপযোগী ট্রেকিং বা হান্টার-শু দরকার। ৪. ভারত পাকিস্তান সীমান্তের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হওয়ায় পর্যটকদের বৈধ পরিচয়পত্র দেখিয়ে প্রশাসনের নিতে হবে ‘ইনার লাইন পারমিট’। ‘ইনার লাইন পারমিট’ দেওয়া হয় খালাতসে থেকে। ৫. যেহেতু এটি একটি বিশেষ জনজাতির গ্রাম, তাই-ই গ্রামবাসীদের এবং গ্রামের ছবি তোলার আগে তাঁদের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক।

ছবি সৌজন্য: দীপঙ্কর অধিকারী

আরও পড়ুন- বিশ্বের ক্ষুদ্রতম হোটেলে জায়গা ধরে মাত্র দুজনের! একদিনের ভাড়া কত জানেন?