Itachuna Rajbari: রবিবারের দুপুরে ভূরিভোজ রাজকীয়ভাবে করতে চান? আজই চলে যান ইটাচুনা রাজবাড়ি

Weekend Trip: উঁচু কড়িবরগার ছাদ, প্রাচীন দেওয়াল, আল্পনা দেওয়া বিরাট নাটমন্দির, বড়-বড় ঝাড়বাতি আর দালানজুড়ে বিরাট-বিরাট বাতিস্তম্ভ দিয়ে সাজানো গোটা রাজবাড়ি। এখানেই শুটিং হয়েছিল সোনাক্ষী সিনহা ও রণবীর সিংহ অভিনীত 'লুটেরা' সিনেমার দৃশ্য।

Itachuna Rajbari: রবিবারের দুপুরে ভূরিভোজ রাজকীয়ভাবে করতে চান? আজই চলে যান ইটাচুনা রাজবাড়ি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 06, 2023 | 1:23 PM

সারা সপ্তাহ অফিস, সন্তানের স্কুল সামলে উইকএন্ড টুকু পাওয়া যায় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর। তাই সপ্তাহশেষে অনেকেই মুখিয়ে থাকেন একটা ছোট্ট ভ্রমণের জন্য। শহর ছেড়ে বেরিয়ে শান্তির খোঁজে এদিক-ওদিক যান। কখনও গঙ্গার পাড় ধরে এগিয়ে যাওয়া, আবার কখনও ডেস্টিনেশন হাইওয়ের কোনও ধাবা। কিন্তু এই উইকএন্ডে যেতে পারেন ইতিহাসের খোঁজে। কংক্রিটের জঙ্গল ছেড়ে খুব বেশি দূরত্বে যেতে হবে না। হুগলিতেই রয়েছে আভিজাত্য আর বাংলার ইতিহাসে মোড়া ইটাচুনা রাজবাড়ি।

বর্তমানে বাংলার বিভিন্ন রাজবাড়ি, জমিদার বাড়ি হয়ে উঠেছে উইকএন্ড ডেস্টিনেশন। যে সব জায়গা একসময় প্রজাদের ধরা ছোঁয়ায় বাইরে ছিল, আবার এক সময় ভগ্নপ্রায় দশায় পড়েছিল, সেই কয়েকশো বছরের পুরনো বাড়িগুলোতে এখন চাইলেই আপনি রাত কাটাতে পারবেন। তেমনই একটি জায়গা হল ইটাচুনা রাজবাড়ি।

স্থানীয়রা বলে বর্গীডাঙা। এই ‘বর্গীডাঙা’র সঙ্গেই জড়িয়ে রয়েছে ইটাচুনা রাজবাড়ির ইতিহাস। এই ইতিহাস সেই সময়ের যখন ‘বর্গী এল দেশে’। চৌথ আদায়ের জন্য মরাঠা থেকে বর্গীর দল বারবার বাংলা আক্রমণ করত। ধনসম্পত্তি আদায় করে আবার ফিরে যেত নিজ দেশে। তাঁদের মধ্যেই কেউ কেউ আর ফেরেনি। তাঁরা স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে এই বঙ্গদেশে। তারই একটি উদাহরণ হল ইটাচুনা রাজবাড়ি। ইটাচুনা রাজবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কুন্দ্রারা। এই কুন্দ্রা থেকেই কুণ্ডু এসেছে। সবচেয়ে সাফল্য শাসনকর্তা ছিল নারায়ণ কুণ্ডু। তাঁরই বংশধররা ১৭৬৬ সালে এই রাজবাড়ি তৈরি করেন। সেই সময় একে বলা হত বর্গীদের বাড়ি। এখন জায়গার নাম হয়ে গিয়েছে বর্গীডাঙা।

উঁচু কড়িবরগার ছাদ, প্রাচীন দেওয়াল, আল্পনা দেওয়া বিরাট নাটমন্দির, বড়-বড় ঝাড়বাতি আর দালানজুড়ে বিরাট-বিরাট বাতিস্তম্ভ দিয়ে সাজানো গোটা রাজবাড়ি। এখানেই শুটিং হয়েছিল সোনাক্ষী সিনহা ও রণবীর সিংহ অভিনীত ‘লুটেরা’ সিনেমার দৃশ্য। এই বাড়ির আনাচে-কানাচে লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাস। দুটো অংশে বিভক্ত বাড়িটা। বাইরের মহলে রয়েছে কাছারি বাড়ি, হিসাবের ঘর ইত্যাদি। এগুলো পেরিয়ে পৌঁছতে হয় অন্দরমহলে। অন্দরমহলের জানলা ছোট ছোট। ভিতরে বসে বাইরের দৃশ্য দেখা গেলেও, বাইরে থেকে ভিতরে উঁকি দেওয়া কঠিন। বাড়ির মেয়েদের কথা ভেবে এভাবেই তৈরি ইটাচুনা রাজবাড়ি।

বনেদি বাড়ির সাজসজ্জার সঙ্গে ঘরের নামও বেশ অদ্ভুত। মেজদিদি, বড়দিদি, মা, জ্যাঠামশাই, ছোটপিসি বিভিন্ন নাম ঘরগুলোর। চাইলে রাতও কাটাতে পারেন এখানে। ইটাচুনা রাজবাড়ির খাওয়া-দাওয়াও রাজকীয়। ইটাচুনা রাজবাড়ি যেতে গেলে আপনাকে আগে থেকে ঘর বুক করে যেতে হবে। ঘরের ভাড়া ৩,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত। ইটাচুনা রাজবাড়ির অনলাইন ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনি ঘর বুক করতে পারবেন। যদি ব্রেকফাস্ট ও লাঞ্চের প্যাকেজ শুরু হয় ৫০০ টাকা থেকে। আর রাতের খাবারেও থাকে এলাহি আয়োজন। পোলাও, মাংস ইত্যাদি। ডিনারের প্যাকেজ শুরু হয় ৩৫০ টাকা থেকে।

লং ড্রাইভ ভালবাসলে কলকাতা থেকে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে হালুসাই যেতে হবে। খন্যান স্টেশনের পথ। এই হালুসাই থেকে দশ মিনিট গেলেই পৌঁছে যাবেন ইটাচুনা রাজবাড়ি। ট্রেনে চেপেও যেতে পারেন ইটাচুনা রাজবাড়ি। বর্ধমান মেন লাইনের যে কোনও ট্রেন ধরে নেমে পড়ুন খন্যান স্টেশন। খন্যান স্টেশন থেকে অটো বা রিকশা ধরে পৌঁছে যান ইটাচুনা রাজবাড়ি।