Shiv Puran: শিবের হাতের ত্রিশূল এল কোথা থেকে? ডমরুর উৎসই বা কোথায়?
Sawan 2022: বিষ্ণুপুরাণ মতে, মহাদেবের অস্ত্র তৈরির ভার পড়ার পরে বিশ্বকর্মা অত্যন্ত চিন্তায় পড়েন। কারণ অস্ত্র তৈরি করতে হলে তা মহাদেবের উপযুক্ত হতে হবে।
শুরু হয়েছে পবিত্র শ্রাবণ মাস (Sawan 2022)। এই মাসটি ভোলেনাথের (Lord Shiva) অত্যন্ত প্রিয়। পুরাণ অনুসারে এই মাসেই শুরু হয়েছিল সমুদ্র মন্থন। সেই মন্থনের সময় সমুদ্র থেকে উঠেছিল এক তীব্র বিষ। সেই হলাহলের প্রভাবে জগৎ সংসার ধ্বংস হতে বসেছিল। তখন মহাদেব সেই বিষয়ে গলায় ধারণ করেন। শরীরের পীড়ায় কষ্ট পেথে থাকেন মহাদেব। তখন দেবী পার্বতী শিবের যন্ত্রণার উপশমের ব্যবস্থা করেছিলেন। তাই শ্রাবণ মাসে ভক্তরা পবিত্র চিত্তে শিবপূজা (Shiva Puja) করলে ও শিবলিঙ্গে দুধ ও জল ঢাললে মহাদেব অত্যন্ত প্রসন্ন হন। হিন্দুধর্ম (Hinduism) অনুসারে মহাদেব সর্বাপেক্ষা ক্ষমতাবান দেবতা। তা সত্ত্বেও তিনি ভোলেনাথ। তিনি গায়ে ভস্ম মেখে থাকেন। তাঁর মস্তকে জটা ও চন্দ্র। পরনে পশুচর্ম। গলায় সর্প ও এবং হাতে ত্রিশূল ও ডমরু। মহাদেবের ভক্তেরা এহেন রূপমাধুর্যে পুলকিত হন। পুরাণ অনুসারে শিব একাধিক অস্ত্র চালনায় দক্ষ ছিলেন। তবু তাঁর হাতে সবসময় শোভা পায় ত্রিশূল ও ডমরু! কেন মহাদেব এমন অস্ত্র ধারণ করেন?
মনে করা হয় হয় সৃষ্টির শুরুতে যখন শিব ব্রহ্মনাদ থেকে আবির্ভূত হন, তখন তাঁর সঙ্গে সত্ত্ব, রজ ও তম গুণেরও আবির্ভাব ঘটে। এই তিনটি গুণের রূপক হল ত্রিশূল। অন্য এক মতে বলা হয়েছে, শিব হলেন স্বয়ম্ভূ। তিনি নিজের চেতনায় সৃষ্ট হয়েছেন এবং সমস্ত অশুভ এবং সৃষ্টির জন্যে ক্ষতিকারক তা সংহার করার দায়িত্বে রয়েছেন। সংহারের জন্য প্রয়োজন অস্ত্রের। জানা যায় সেই অস্ত্র নির্মাণের ভার পড়ে বিশ্বকর্মার উপর।
বিষ্ণুপুরাণ মতে, মহাদেবের অস্ত্র তৈরির ভার পড়ার পরে বিশ্বকর্মা অত্যন্ত চিন্তায় পড়েন। কারণ অস্ত্র তৈরি করতে হলে তা মহাদেবের উপযুক্ত হতে হবে। তার ক্ষমতাও হতে হবে বিরাট। শক্তির উৎস হতে হবে চিরকালীন। ঘটনাক্রমে সেই চিন্তার সমাধানসূত্রও মেলে। বিশ্বকর্মার কন্যা সংজ্ঞার সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল সূর্যের। অথচ সূর্যের প্রবল তেজের কারণে সংজ্ঞা পড়ছিলেন বিড়ম্বনায়। তখন বিশ্বকর্মা আটভাগে সূর্যকে ভাগ করেন ও সূর্যের তেজের সাহায্যে দেবতাদের অস্ত্র নির্মাণ করেন। এমনই এক শক্তিশালী অস্ত্র ছিল ত্রিশূল। ফলে সূর্যের তেজও কিছুটা কমে। সূর্যপত্নী সংজ্ঞা স্বস্তি লাভ করেন।
অবশ্য সনাতন ধর্মে ত্রিশূলের তিনটি ফলার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে। মনে করা হয় তিনটি ফলা সৃষ্টি, স্থিতি, বিনাশকে বোঝায়। আবার অন্য এক ব্যাখ্যা অনুসারে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতকে বোঝায় ত্রিশূল যা মহাকালের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এবার আসা যাক ডমরু প্রসঙ্গে। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের শুরুতে সরস্বতীর জন্ম হলে তিনি বীণার ধ্বনি দিয়ে ধ্বনির জন্ম দিয়েছিলেন, কিন্তু তা ছিল সুর ও সঙ্গীতবর্জিত। সেই সময় মহাদেব নৃত্যরত অবস্থায় ১৪ বার ডমরু বাজান। এভাবেই সুর ও তালের জন্ম হয়। মনে করা হয় ডমরুর আকার ব্রহ্মের মতো। অনন্ত ব্রহ্মকেই উপস্থাপনা করে ডমরু।