Durga Puja 2021: এবার মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে যাওয়ার পালা! রইল বিজয়াদশমীর নির্ঘণ্ট
দশেরাতে রাবনের মূর্ত প্রতীকগুলি দুষ্টের প্রতীক হিসাবে আতশবাজি দিয়ে পোড়ানো হয় এবং এটি অশুভ শক্তির ধ্বংসকে চিহ্নিত করে।
করোনার জেরে আগের বছরের মতো এবারও বাঙালির প্রিয় উত্সবের রং ফিকে হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তবে তাতে বাঙালিকে দমিয়ে রাখা যাবে না। করোনাকে সঙ্গী করেই মেতে উঠেছে দুর্গাপুজো। পৌরাণিক কাহিনি অনুযায়ী, মহাষষ্ঠীর দিন দেবী দুর্গা তাঁর সন্তান-সন্ততি নিয়ে মর্ত্যে অবতরণ করেন। মহাষষ্ঠীর প্রাক্কালে দুর্গার বোধনের পর সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান শুরু হয়। ঢাকের কাঠি পড়া থেকে শিউলির স্নিগ্ধ ও মিষ্টি গন্ধে সারা বাংলার আকাশ জুড়ে দুর্গার আগমনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। মহালয়ার একসপ্তাহ পর চতুর্থী, পঞ্চমী, ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী, বিজয়া পর্যন্ত বাঙালির কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি শারদউত্সব।
নবমীর রাত থেকেই বিষাদের সুর। আজ বিজয়াদশমী। দেবী দুর্গাকে বিদায় জানানোর পালা।
বিজয় দশমী (Maha Dashami)
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে, ২৮ আশ্বিন ইং ১৫ অক্টোবর শুক্রবার- বিজয়াদশমী রাত্রি ঘ ৮।২১ পর্যন্ত।
-পূর্বাহ্ণ মধ্যে দ্ব্যাত্মক- চরণলগ্নে ও চরণবাংশেকিন্তু বারবেলানুরোধে দিবা ঘ ৮।৩০ মধ্যে দুর্গাদেবীর দশমীবিহিত পূজা সমাপনাস্তে বিসর্জন প্রশস্তা।
-দেবীর দোলায় গমন। ফল- মড়ক। বিজয়া দশমী কৃত্য।
– বিজয়াদশমীবিহিত বিসর্জনাঙ্গ পূজা, সিঁদুর খেলা, বিসর্জন, বিজয়াদশমী কৃত্য ও কুলাচারানুসারে বিসর্জনান্তে অপরাজিতা পূজা।
দশমী তিথি আরম্ভ–
তারিখ- ২৭ আশ্বিন, ১৪ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার। সময়– সন্ধ্যে ৬টা ৫৪ মিনিট।
দশমী তিথি শেষ–
তারিখ– ২৮ আশ্বিন,১৫ অক্টোবর, শুক্রবার। সময়– সন্ধ্যে ৬টা ০৩ মিনিট।
দক্ষিণ, পূর্ব, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের কয়েকটি উত্তর ভারতীয় রাজ্যে বিজয়াদশমী ধর্ম পুনরুদ্ধার ও সুরক্ষার জন্য মহিষাসুরের বিরুদ্ধে দেবী দুর্গার জয়কে স্মরণ করে দুর্গাপূজার সমাপ্তি চিহ্নিত করে।উত্তর, মধ্য ও পশ্চিম ভারতীয় রাজ্যগুলিতে, উৎসবটি ‘বিজয়াদশমী’ শব্দের প্রতিশব্দ দশেরা নামে অভিহিত হয় (দাসরা, দশাহরা)। এই অঞ্চলগুলিতে এটি “রামলীলা”-এর সমাপ্তি চিহ্নিত করে এবং রাবণের উপর রামের বিজয়ের কথা স্মরণ করে। দশেরাতে রাবনের মূর্ত প্রতীকগুলি দুষ্টের প্রতীক হিসাবে আতশবাজি দিয়ে পোড়ানো হয় এবং এটি অশুভ শক্তির ধ্বংসকে চিহ্নিত করে। এই উৎসবটি গুরুত্বপূর্ণ আলোর উৎসব দীপাবলির ও দেওয়ালির প্রস্তুতিও শুরু করে, যা যথাক্রমে বিজয়াদশমীর ১৯ দিন ও ২০ দিন পরে পালিত হয়।
প্রাচীন যুগে এই দিনে ক্ষত্রিয়রা অস্ত্র পূজো করে পরেরদিন যুদ্ধে রওনা দিত। যুদ্ধশেষে কার সিঁথিতে সিঁদুর থাকবে তার নিশ্চয়তা না থাকায় তাদের স্ত্রীরা এই দিনই সিঁদুর খেলায় মেতে উঠতেন।
হিন্দুদের সব অনুষ্ঠানই প্রাণ ও প্রকৃতির সমন্বয়ে পালিত হয়। তাই গঙ্গামাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাকে পুনরায় গঙ্গাতেই বিসর্জন দেয়া হয়। এই বিসর্জন শব্দটিকে ইংরেজির Nemesis-র রূপ দিলে তার প্রকৃত অর্থ প্রকাশিত হবে না। বিসর্জন মানে হ’ল বিশেষ রূপে সৃজন। অর্থাৎ, অন্তের মধ্যেই আদির সূচনা। এই কারণেই বিসর্জনের মন্ত্র হল “পুনরাগমনায় চ”। এই বছরের বিসর্জন থেকেই পরের বছরের মাতৃ আরাধনার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়।
পুরাণে মহিষাসুর-বধ সংক্রান্ত কাহিনীতে বলা হয়েছে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত্রি যুদ্ধ করার পরে দশম দিনে তার বিরুদ্ধে বিজয় লাভ করেন দেবী। শ্রীশ্রীচণ্ডীর কাহিনি অনুসারে, আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে দেবী আবির্ভূতা হন, এবং শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর-বধ করেন। বিজয়া দশমী সেই বিজয়কেই চিহ্নিত করে।
বিজয়ার শুভ এই দিনে দুঃখ নয়, বেদনা নয়, সকলে আনন্দে মুখরিত এবং সকলের মধ্যে প্রেমের বন্ধনে আকৃষ্ট। এই দিনে পাড়া-পড়শি সকলকে নিয়ে প্রেমালিঙ্গন একটি বিশেষ দিগ্দর্শন।
সবাইকে শুভ বিজয়াদশমীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
আরও পড়ুন: Dussehra 2021: রাবণ সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য, যা অনেকেরই জানা নেই