Paush Month: বাংলার লৌকিক পার্বণ তুষ-তুষলী, জেনে নিন যুগ যুগ ধরে পালন হওয়া এই উৎসবের গুরুত্ব…

Lakshmi Puja: অঘ্রাণ মাস থেকেই শুরু হয় লক্ষ্মীর বিশেষ পুজো। এই মাসেই ধান ওঠে গোলায়। চাষ-আবাদের শ্রীবৃদ্ধির জন্যই কিন্তু এই বিশেষ পুজোর আয়োজন

Paush Month: বাংলার লৌকিক পার্বণ তুষ-তুষলী, জেনে নিন যুগ যুগ ধরে পালন হওয়া এই উৎসবের গুরুত্ব...
গ্রাম বাংলার বেশিরভাগ ব্রতই কৃষিকাজের সঙ্গে সম্পর্কিত
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 17, 2021 | 3:19 PM

আধুনিক সভ্যতা আর ইন্টারনেটের যুগে বাংলা থেকে অনেক কিছুই আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। কাজের চাপ যত বেড়েছে জীবন যেন ততই বেশি জটিল হয়েছে। নিজের জন্যই যেন কোনও সময় নেই আমাদের হাতে। পাশের ফ্ল্যাটের প্রতিবেশীকেই এথন অনেকে চেনেন না, পরিচয় নেই গ্রাম বাংলার খাবারের সঙ্গেও। ফলে ব্রতকথাও এখন ভুলতে বসেছেন শহুরে লোকজন। কিন্তু এই ব্রতকথার নেপথ্যেও রয়েছে অনেক কাহিনি। যা আমাদের সমাজ এবং সংসার বিষয়ের উপর নির্ভর করেই বর্ণিত।

বৈশাখ থেকে চৈত্র বাঙালি বাড়িতে অনেক রকম ব্রত উৎসব উদযাপিত হয়। কিন্তু কার্তিক, অঘ্রহায়ণ এই দুটো মাস বাংলা ক্যালেন্ডারে শুভ মাস হিসেবেই পরিচিত। এছাড়াও ইতু পুজো, লক্ষ্মী পুজো, নাটাই চণ্ডীর ব্রত… নানা কিছু লেগেই থাকে এই কয়েক মাসে। এই সব ব্রত-পুজো কিন্তু কৃষিকাজকে কেন্দ্র করেই। এই সময় খামারে নতুন ধান ওঠে। সেই ধানেই হয় নবান্ন উৎসব। এছাড়াও ইতু পুজো কিন্তু এখনও বাংলার অনেক বাড়িতেই হয়। ছোলা, মটর, মুগ, মুসুর এসব গাছের বীজ সরায় ছড়িয়ে নিবেদন করা হয় ইতুর প্রতি। পুজো শেষে সেই সরা ভাসিয়ে দেওয়া হয় জলে। প্রতি রবিবার নিয়ম করে হয় ইতুর পুজো।

অঘ্রাণের সংক্রান্তি শেষেই শুরু হয় পৌষ লক্ষ্মীর পুজো। পৌষ সংক্রান্তির আগের দিন হয় বাউনি আর পৌষ পুজো। সংক্রান্তিতে মকর।

পৌষ পুজো বাংলার সব চাষীর বাড়িতেই হয়। ধান কাটার সময় এক গোছা ধান, না কেটে শিকড়, মাটিসহ তুলতে হয়। সেটা মাথায় করে বা গরুর গাড়ির ধানের ওপরে করেই নিয়ে এসে গাদায় তুলে রাখা হয়। তারপর সেটা সংক্রান্তির আগের দিন কোনো এক সময় সুন্দর করে বাঁধতে হয়। এটাকে বলে পৌষ।

খড়ের সঙ্গে আমপাতা দিয়ে বিনুনি করে তৈরি করা হয় বাউনী। সন্ধ্যেবেলা পৌষ আর বাউনী একসঙ্গে পুজো করে, পৌষটাকে খড়ের গাদায় বা ধানের গাদায় তুলে রাখতে হয়। বাউনীগুলো এনে চালের গুঁড়ি, রান্নাঘরে ভাতের হাঁড়ির পাশে, আর চালের বাতায় গুঁজে রাখতে হয়। পৌষ পুজোয় কিন্তু ব্যবহার করা হয় হলুদ সরষের ফুল।

পৌষ মাসের প্রতি বৃহস্পতি এবং শুক্রবার সব বাড়িতেই ঘটা করে করা হয় লক্ষ্মী পুজো। কথায় বলে এদিন বাড়িতে আলপনা দিয়ে, খই-নাড়ু সহযোগে লক্ষ্মীর আরাধনা করলে সংসারে কোনও দিন অভাব হবে না। সেই সঙ্গে সাধ্যমতো কাউকে কিছু দান করতে পারলেও খুব ভাল। রাঢ় বাংলায় এখনও পৌষের প্রতি বৃহস্পতিবার লক্ষ্মী-নারায়ণের পুজো করে কুমারী মেয়েরা। এখানেও কিন্তু বিভিন্ন শস্যদানা মাটির মালসায় পোঁতা হয়। আর প্রতি বৃহসপ্তিবার তুলসী তলায় সেই মালসা দিয়েই হয় পুজো।

পুজোর শেষে মকর সংক্রান্তির দিন তা ভাসিয়ে বাড়িতে পিঠে-পুলি হয়। এই ব্রতই তুষ-তুষালী ব্রত নামে পরিচিত। রাঢ বাংলার অনেক জায়গাতেই এখনও এই পুজো হয়। বাড়ির সকলের মঙ্গল কামনায় এই পুজো করে কুমারী মেয়েরা। সেই সঙ্গে চাষ-আবাদ যাতে ভাল হয়, ব্যাবসা-বাণিজ্যের উন্নতি সব কিছুর জন্যই প্রার্থনা করে লক্ষ্মী-নারায়ণের কাছে।

আরও পড়ুন: Vastu: বৃহস্পতিবার ভুলেও পা দেবেন না ঝাড়ুতে! রুষ্ট হন লক্ষ্মী