সুন্দর-শার্দূল দেখাল, লড়াই কাকে বলে

চাপের মুহূর্তে ভারতের বোলিংয়ের সামনে বরাবরই নড়বড়ে লেগেছে অজি ব্যাটিং লাইনআপকে। ওদের ব্যাটিং অর্ডার যথেষ্ট ভঙ্গুর। অজিঙ্কা রাহানের নেতৃত্বে দুর্দান্ত খেলছে টিমটা। দলগত সংহতি টিম ইন্ডিয়ার সম্পদ। শুধুমাত্র আগ্রাসন দিয়েই আশানুরূপ ফল হয় না, তার জন্য পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে হয়।

সুন্দর-শার্দূল দেখাল, লড়াই কাকে বলে
Follow Us:
| Updated on: Jan 17, 2021 | 7:10 PM

অস্ট্রেলিয়া- ৩৬৯ ও ২১/০

ভারত- ৩৩৬

শরদিন্দু মুখোপাধ্যায়

শার্দূল ঠাকুর আর ওয়াশিংটন সুন্দর যে রকম ব্যাটিং করল, আমি মুগ্ধ। অ্যাডিলেড টেস্টের পরই বর্ডার-গাভাসকর সিরিজে লড়াকু মেজাজ দেখিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। গাব্বাতেও অন্যথা হল না। সপ্তম উইকেটে শার্দূল ঠাকুর-ওয়াশিংটন সুন্দরের ১২৩ রানের পার্টনারশিপই ভারতকে খেলায় ফেরাল। ১৮৬ রানে ৬ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর চাপ বেড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে দলের স্কোরবোর্ডকে তিনশোর উপর নিয়ে গেল এই দুই ক্রিকেটার। টেস্টে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, আবার দেখিয়ে দিল ভারতীয় দল। শার্দূল ঠাকুর-ওয়াশিংটন সুন্দর জুটি উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের সমস্ত ব্যর্থতা ঢেকে দিল। ওয়াশিংটন সুন্দর এমনিতেই ভালো ব্যাটিং করে। তবে এ দিন ওকে যোগ্য সঙ্গত করল শার্দূল ঠাকুর। অভিষেক টেস্টে চাপের মুহূর্তে ওয়াশিংটন সুন্দরের এই ইনিংস নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। দু’জনের লড়াইকে কুর্নিশ।

আরও পড়ুন- গাব্বায় মান বাঁচালেন সুন্দর-ঠাকুর

এ বারের অস্ট্রেলিয়া সফরকে ভারতের নবীণবরণের ট্যুর বললে ভুল হবে না বোধহয়। সিরাজ, শুভমন দিয়ে শুরু হয়েছিল। সেই ধারা চলতে চলতে এখন নটরাজন, সুন্দরদের অভিষেক হয়েছে। এই নতুন ছেলেগুলোকে যত দেখছি, তত অবাক হচ্ছি। যে কোনও আনকোরা ক্রিকেটারকে কিছুটা সময় দিতে হয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। সদ্য জাতীয় টিমে পা দেওয়া একঝাঁক নতুন ছেলে শুধু যে সাফল্য পাচ্ছে, তাই নয়, সিনিয়রদের ছাপিয়েও যাচ্ছে। ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এটা একটা পজিটিভ দিক। পরবর্তী প্রজন্ম এখন থেকেই তৈরি।

চলতি সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং এখনও সেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি। চাপের মুহূর্তে ভারতের বোলিংয়ের সামনে বরাবরই নড়বড়ে লেগেছে অজি ব্যাটিং লাইনআপকে। ওদের ব্যাটিং অর্ডার যথেষ্ট ভঙ্গুর। তৃতীয় দিনের শেষে ৫৪ রানে এগিয়ে ব্যাগি গ্রিনরা। স্টিভ স্মিথ যদি বড় রান না পায়, তাহলে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে বড় রানের টার্গেট দেওয়া অনেক চ্যালেঞ্জিং। ২৫০ থেকে ৩০০ রানের মতো লিড না রাখলে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে টেস্ট বার করা কঠিন। ভারতীয় দলের লোয়ার অর্ডার শক্তিশালী। তাই রান তাড়া করতে সক্ষম হবে টিম ইন্ডিয়া।

অ্যাডিলেডে ৩৬ রানে অল আউট হয়ে যাওয়ার পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় দল। ক্রিকেটারদের লড়াকু মনোভাবই এই দলের হাতিয়ার। কঠিন পরিস্থিতিতে কোনও না কোনও ক্রিকেটার ঠিক ম্যাচ বাঁচিয়ে দিয়েছে। এটাই দলের ইউএসপি। অজিঙ্কা রাহানের নেতৃত্বে দুর্দান্ত খেলছে টিমটা। দলগত সংহতি টিম ইন্ডিয়ার সম্পদ। শুধুমাত্র আগ্রাসন দিয়েই আশানুরূপ ফল হয় না, তার জন্য পজিটিভ ক্রিকেট খেলতে হয়। অস্ট্রেলিয়া সফরে সেটাই চরিতার্থ করতে পেরেছে ভারতীয় দল। সোমবার টেস্টের চতুর্থ দিন। ভারতীয় বোলাররা অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসকে দ্রুত শেষ করে দিতে পারলে গাব্বায় ইতিহাস গড়তে পারে টিম ইন্ডিয়া। রাহানের নেতৃত্বে ক্রিকেটাররা যে রকম পারফর্ম করছেন তাতে স্বপ্ন দেখাই যায়।