Virat Kohli : মনে…রেখে দেব! নায়কের সেই সংলাপ মনে পড়ে?

RCB vs GT, IPL 2023 : গুজরাট টাইটান্সের অনেক ক্রিকেটারই মিশে গেলেন বিরাটের সঙ্গে। তাঁর সই করা জার্সি নিলেন। বিরাট কোহলি খেলা ছেড়ে দিচ্ছেন তা নয়। আগামী আইপিএলেও হয়তো খেলবেন। নতুন মুহূর্ত তৈরি হবে। তবু রশিদ খানরা যেন বিরাটের সঙ্গে আড্ডায় বোঝাতে চাইলেন, ‘বন্ধু, তোমায় মনে...রেখে দেব।’

Virat Kohli : মনে...রেখে দেব! নায়কের সেই সংলাপ মনে পড়ে?
Image Credit source: IPL
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 22, 2023 | 3:53 PM

দীপঙ্কর ঘোষাল

আচ্ছা, নায়কের অর্থ কী? প্রশ্নটা বোধ হয় বড্ড কঠিন। খুব ছোট করে বললে-নায়ক, যাঁদের আমরা অনুকরণ এবং অনুসরণ করি…। তাই হয়তো নায়কদের পরাজয় দেখে ভুলে যাই, কোনও একটা মুহূর্ত পেরিয়ে গেলে তাঁরাও কান্না লুকোয়। বাকিদের মুখে হাসি ফোটানোই যেন তাঁদের দায়িত্ব। সকলকে খুশি রাখা সম্ভব নয়, নায়করা তবু চেষ্টা করে যান। সাফল্য, ব্যর্থতার মাপকাঠির বাইরে নায়করা সবসময় মনে থেকে যান। বড্ড হেঁয়ালি মনে হচ্ছে কি? হয়তো না। একটা যুগ শেষ হওয়ার আগেই নতুন তারকা প্রস্তুত থাকেন। প্রস্ফুটিত হতে একটু সময় লাগে মাত্র। ভারতীয় ক্রিকেটে একটা সময় এমন নায়কের যুগ ছিল সুনীল গাভাসকরের। তারপর সচিন তেন্ডুলকর…। বর্তমান বিরাট কোহলি। শুধুমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটেই নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেরও আইকন। আর ভবিষ্যৎ! শুভমন গিলকে কি সেই তালিকায় শীর্ষে রাখা যায়? সেই উত্তর না হয় সময় দেবে। কিন্তু নায়করা সব সময় স্ক্যানারে থাকেন। যেমন বিরাট কোহলি। টানা রান করলেও স্ক্যানারে থাকেন, খুঁত খোঁজা হয়। বিরাটের ক্ষেত্রে এ বারের আইপিএলে সেটা ছিল স্ট্রাইকরেট! আর নায়করা নিজেদের যে মাপকাঠি তৈরি করে রাখেন, তা পেরতে না পারলে ‘ব্যর্থ’ তকমা জোটে। আরসিবি প্লে-অফে যেতে না পারায় এখন যেমন বিরাট কোহলিকে নিয়েও উঠছে! সাফল্য-ব্যর্থতার সীমা ছাড়িয়ে দিনের শেষে থেকে যায় কিছু মুহূর্ত, বন্ধুত্ব। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর এবং বেঙ্গালুরু শহরের সঙ্গে বিরাট কোহলির বন্ধুত্বটা বহু পুরনো। আরসিবির সমস্ত স্বপ্ন বিরাট কোহলিকে আবর্তন করে। তাই তো ম্যাচ এবি ডি ভিলিয়ার্সের মতো একজন লিখতে কুন্ঠা বোধ করেন না, ‘যখনই প্রয়োজন, আমাদের বিরাট কোহলি রয়েছে।’ ২০০৮ সালের উদ্বোধনী আইপিএল থেকে একই ফ্র্যাঞ্চাইজিতে খেলছেন। বেঙ্গালুরু তাঁকে কতটা ভালোবাসে! একটা ব্যানার দিয়ে কি বোঝানো যায়? চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে এক ভক্ত গুজরাট টাইটান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচে গ্যালারিতে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। যাতে লেখা-স্বর্গে ভগবানকে খেলতে দেখছি…।

RCB VS GT VIRAT KOHLI POST MATCH INSIDE

মরসুম তখনও শুরু হয়নি। সবে প্রস্তুতি শুরু করেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। যেমনটা এ বারের শেষ ম্যাচে। গুজরাট টাইটান্সের কাছে হার, প্লে-অফের দরজা এ বারের মতো বন্ধ করে দিয়েছে আরসিবির। তবে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ তারকা শতরানের ইনিংস! এর চেয়ে ভালো মুহূর্ত কীই বা হতে পারে? আইপিএলে সপ্তম শতরান করেন বিরাট কোহলি। এ মরসুমে টানা দু-ম্যাচে। আর ‘চেজমাস্টার’ এর সামনে এক তরুণ ক্রিকেটার রান তাড়ায় দলকে জেতালেন অনবদ্য সেঞ্চুরিতে। সেই শুভমন গিলও টানা দু-ম্যাচে সেঞ্চুরি করলেন। তাঁকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য বিজয় শঙ্কর ছিলেন, বিরাট যেন ওয়ান ম্যান আর্মি।

টিম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের ব্যর্থতা নতুন নয়। প্রতিবারই হাতে গোনা ক’জন পারফর্ম করেন। এ মরসুমে ব্যাটিংয়ে ফাফ ডুপ্লেসি, বিরাট কোহলি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। বোলিংয়ে মহম্মদ সিরাজ। আর কেউ ধারাবাহিকতা দেখাতে পারেননি। তবু ব্যর্থতার দায় নায়কের। সেটা হয়তো মাঠের বাইরের লোকেদের কাছে। সতীর্থরা দেখেন, নায়ক কান্না লুকোন, গ্যালারিতে হাসি ফোটাতে ব্যাট হাতে যেমন পারফর্ম করেন, তেমনই জোর করে হাসেন। ট্রফি না জেতার আক্ষেপ নিয়েও নতুন করে স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন দেখান। তরুণ প্রজন্মের কাছে উদাহরণ তৈরি করেন। ম্যাচ শেষে হাতে গোনা ক’জনই হয়তো প্রতিপক্ষ থাকেন, বাকিরা বন্ধু।

মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো বিরাট কোহলিও এ বার যে মাঠেই খেলেছেন, সবই তাঁর হোম গেম। ম্যাচ শেষে প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটাররা বিরাটের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করেছেন। যদি কিছু শেখা যায়। ইডেন গার্ডেন্সে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে ম্যাচের পরও এই চিত্র দেখা গিয়েছিল। শুধু ক্রিকেটাররাই নন, বলিউডের বাদশা খোদ মিশে গিয়েছিলেন কিং কোহলির সঙ্গে। এ মরসুমের আইপিএলের অন্যতম সেরা মুহূর্ত ছিল সেটা।

চিন্নাস্বামীতে ম্যাচ শেষেও এমন চিত্র দেখা গেল। গুজরাট টাইটান্সের অনেক ক্রিকেটারই মিশে গেলেন বিরাটের সঙ্গে। তাঁর সই করা জার্সি নিলেন। বিরাট কোহলি খেলা ছেড়ে দিচ্ছেন তা নয়। আগামী আইপিএলেও হয়তো খেলবেন। নতুন মুহূর্ত তৈরি হবে। তবু রশিদ খানরা যেন বিরাটের সঙ্গে আড্ডায় বোঝাতে চাইলেন, ‘বন্ধু, তোমায় মনে…রেখে দেব।’