T20 World Cup 2021: দাসেনের দুর্ধর্ষ ইনিংস, রাবাডার হ্যাটট্রিকেও সেমিফাইনালে ওঠা হল না প্রোটিয়াদের

শারজায় ইংল্যান্ডের (England) বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতেও দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠা হল না। নেট রান রেটের কারণে কপাল পুড়ল প্রোটিয়াদের। তবে শেষ পর্যন্ত লড়ে গেলেন বাভুমারা।

T20 World Cup 2021: দাসেনের দুর্ধর্ষ ইনিংস, রাবাডার হ্যাটট্রিকেও সেমিফাইনালে ওঠা হল না প্রোটিয়াদের
T20 World Cup 2021: দাসেনের দুর্ধর্ষ ইনিংস, রাবাডার হ্যাটট্রিকেও সেমিফাইনালে ওঠা হল না প্রোটিয়াদের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 06, 2021 | 11:40 PM

দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮৯-২ (২০ ওভার) ইংল্যান্ড ১০০-২ (২০ ওভার) ১০ রানে জয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা

শারজা: গ্রুপ এ-তে জটিল অঙ্কের গল্প ছিল। আর গ্রুপ পর্বের খেলাও শেষ হল এক্কেবারে থ্রিলারের মতো। শারজায় ইংল্যান্ডের (England) বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতেও দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে ওঠা হল না। নেট রান রেটের কারণে কপাল পুড়ল প্রোটিয়াদের। তবে শেষ পর্যন্ত লড়ে গেলেন বাভুমারা। টসে জিতে শারজায় শুরুতে প্রোটিয়াদের ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের ক্যাপ্টেন ইওন মর্গ্যান। নির্ধারিত ২০ ওভারে প্রথমে ব্যাট করে ২ উইকেট হারিয়ে দাসেন-মার্করামদের দাপটে ১৮৯ রান তোলে দঃ আফ্রিকা।

টুর্নামেন্টের শেষ চারে যেতে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এই ম্যাচে ইংল্যান্ডকে হারাতে হত। তবে শুধু হারালে চলত না বড় ব্যবধানে হারিয়ে নেট রান রেট বাড়িয়ে রাখার কাজটাও করতে হত। ম্যাচ জিতলেও রান রেটে পিছিয়ে থাকার কারণে সেমিতে পৌঁছনো হল না ডি’ককদের। প্রোটিয়াদের ইনিংসের শুরুটা খুব যে ভালো হয়েছিল তা বলা যায় না। কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে ওপেনিং জুটি একবার ক্রিজে জমে গেলে যে কোনও দলই সাহস পায়। তবে দঃ আফ্রিকার ওপেনিং জুটিকে জয়ের ভিত গড়ার কাজটাই করতে দেননি মইন আলি। তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলে মইন আলি প্রোটিয়া ওপেনার রেজা হেনড্রিক্সকে ফেরান। মাত্র ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন রাসি ভ্যান ডার দাসেন। ডি’ককের সঙ্গে জুটি বেঁধে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দাসেন। ৫২ বলে ৭১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন ডি’কক-দাসেন। মর্গ্যানরা জানতেন এই জুটকে আরও ভয়ঙ্কর হতে দেওয়া যাবে না। মার্ক উড-আদিল রশিদরা কোনও সুবিধে করতে পারছিলেন না। অবশেষে এই জুটিকে ভাঙার কাজটি করেন আদিল রশিদ। ২৭ বলে ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটকিপার-ব্যাটার কুইন্টন ডি’কক। এরপর মাঠে আসেন এইডেন মার্করাম। এই জুটি দলকে টেনে নিয়ে যান শেষ পর্যন্ত। লড়াই করার মতো রানে পৌঁছে দেন দাসেন-মার্করাম জুটি। ৫২ বলে ১০৩ রানের পার্টনারশিপ গড়েন দাসেন ও মার্করাম।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে পুরুষদের টি-২০ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত রান করলেন রাসি ভ্যান দার দাসেন (Rassie van der Dussen)। ৬০ বলে ৯৪ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন দাসেন। পাশাপাশি ২৫ বলে ৫২ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে যান এইডেন মার্করাম। ইংল্যান্ডকে ১৮৯ রানের টার্গেট দিয়েছিল প্রোটিয়ারা।

রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা আরও ভালো করতে পারত ইংলিশব্রিগেডেরও যদি জেসন রয় পায়ে চোট পেয়ে মাঠ না ছেড়ে যেতেন। পঞ্চম ওভারের প্রথম বল খেলে রিটায়ার হাট হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যান রয়। ক্রিজে আসেন মইন আলি। বাটলারের সঙ্গে সবে জুটি জমাট করার পথে ছিলেন মইন, সেই সময় ইংল্যান্ডকে প্রথম ধাক্কা দেন এনরিখ নর্টজে। ১৫ বলে ২০ রান করে সাজঘরে ফিরে যান ইংল্যান্ডের উইকেটকিপাক-ব্যাটার জস বাটলার। এরপর ক্রিজে আসেন জনি বেয়ারস্টো। কিন্তু ৩ বল খেলার পরই তাবরাইজ শামসির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে মাঠ ছাড়েন বেয়ারস্টো। ২ উইকেট হারানোর পর মইনের সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন দাভিদ মালান। ৩৬ বলে ৫১ রান করে এই জুটি। ১৩ ওভারের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ২৭ বলে ৩৭ রান করে মাঠ ছাড়েন মইন। ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে ১১০ রান তুলে ফেলে ইংল্যান্ড। মালান এর পর লিয়াম লিভিংস্টোনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। এই জুটি ৩৫ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে। দক্ষিণ আফ্রিকার সেমি ফাইনালে যাওয়ার আশা শেষ হলেও ম্যাচের রাশ ছিল তাদের হাতেই। ২৬ বলে ৩৩ রান করে উইকেট দিয়ে বসেন লিভিংস্টোন। শেষবেলাতে মাঠে নামবে হয় ক্যাপ্টেন মর্গ্যানকে। দলকে জয় এনে দেওয়ার জন্য বড় শট খেলার চেষ্টায় ছিলেন মর্গ্যানরা। আর উল্টো দিকে কাগিসো রাবাডা করলেন হ্যাটট্রিক। বড় শট মারতে গিয়ে শেষ ওভারের প্রথম বলে ক্রিস ওকসের উইকেট তুলে নেন কাগিসো রাবাডা। প্রোটিয়া তারকা বোলার রাবাডার দ্বিতীয় বলে আউট হন ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইওন মর্গ্যান। এরপর তৃতীয় বলে ক্রিস জর্ডানকে ফেরান জাডেজা। এবং শেষ মেশ নির্ধারিত ২০ ওভার খেলে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৭৯ রানে থেমে যায় ইংলিশব্রিগেড। ১০ রানে ম্যাচ জিতে নেয় প্রোটিয়ারা।

৫ ম্যাচের ৪টি করে জিতে লিগ টেবলের এক থেকে তিন নম্বরে রয়েছে যথাক্রমে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। তিনটি দলের পয়েন্ট ৮ করে হলেও নেট রান রেটে এগিয়ে থেকে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে পৌঁছল ইংল্যান্ড (নেট রান রেট (+২.৪৬৪) এবং অস্ট্রেলিয়া (+১.২১৬)। আর +০.৭৩৯ রান রেটে থেকে তিন নম্বরে কাপ অভিযান শেষ করল প্রোটিয়ারা।