Asia Cup 2022 Final: ব্যাটিংয়ে ‘রাজা’পক্ষ, পাকিস্তানকে পর্যুদস্ত করে এশিয়ার ‘শান’ শ্রীলঙ্কা
Asia Cup : ইনিংসের চতুর্থ ওভারে পরপর দু-বলে ধাক্কা প্রমোদ মধুশানের। দ্বিতীয় বলে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম এবং পরের বলে ফখর জামানের উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দেন। স্বপ্নের ফর্মে থাকা মহম্মদ রিজওয়ান তখনও ক্রিজে। ফাইনালেও একই ছন্দে রিজওয়ান।
শ্রীলঙ্কা ১৭০-৬ (২০ ওভার)
পাকিস্তান ১৪৭ (২০ ওভার)
দুবাই : ফাইনালের মতোই ফাইনাল। এশিয়া কাপ (Asia Cup 2022) ট্রফি জয়ের মঞ্চে প্রতি মুহূর্তে নাটকীয় মোড়। ম্যাচের শুরুর কয়েক ওভারের মধ্যে মনে হয়েছিল, পাকিস্তান (Pakistan) অনেক এগিয়ে। ভানুকা রাজাপক্ষর ব্যাটিং সেই ধারনা দ্রুত বদলে দেয়। তেমনই রান তাড়ায় পাকিস্তান এক ওভারে জোড়া উইকেট হারাতেই অ্যাডভান্টেজ শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। কোনওটাই দীর্ঘস্থায়ী হল না। রুদ্ধশ্বাস কিছু মুহূর্ত পেরিয়ে এশিয়া সেরা শ্রীলঙ্কা। ব্যাটিংয়ে ‘রাজা’পক্ষ, বোলিংয়ে মধু’শান’ এবং শ্রীলঙ্কার জান লড়িয়ে দেওয়া ফিল্ডিং। ফাইনালে ২৩ রানে জয়। এশিয়ার ‘শান’ শ্রীলঙ্কা। ৪৭ তম বলে বিশাল ছয় মেরে অর্ধশতরান পূর্ণ করেন টুর্নামেন্টের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান মহম্মদ রিজওয়ান। শেষ ৪ ওভারে পাকিস্তানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬১ রান। ১৭ তম ওভারে শ্রীলঙ্কা গ্য়ালারিতে হাসি ফোটালেন ভানিন্দু হাসারঙ্গা। প্রথম বলে রিজওয়ানের উইকেট নিয়ে ট্রফি এবং অপেক্ষার দূরত্ব কমান। এক বলের ব্যবধানে পাকিস্তানের ‘ফিনিশার’ আসিফ আলিকে বোল্ড করেন এবং পঞ্চম বলে তাঁর শিকার খুশদিল শাহ। মাত্র ২ রান দিয়ে ৩ উইকেট ভানিন্দুর। তবে শ্রীলঙ্কার বোলিংয়ে বড় পাওয়া তরুণ পেসার প্রমোদ মধুশান। ৪ ওভারে মাত্র ৩৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট।
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত পাকিস্তান অধিনায়কের। তাদের একাদশে জোড়া পরিবর্তন। হাসান আলি এবং উসমান কাদিরের জায়গায় ফেরেন শাদাব খান ও নাসিম শাহ। এবারের প্রতিযোগিতায় চমক নিঃসন্দেহে শ্রীলঙ্কা। প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটের লজ্জার হার। গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করা এবং সুপার ফোরে এশিয়ার তিন শক্তি ভারত, আফগানিস্তান, পাকিস্তানকে হারানো। ফাইনালে শুরুতে ছন্দপতন হলেও দ্রুত ঘুরে দাঁড়াল তারা। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৫৮ রানে ৫ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে ২০ ওভারে ১৭০-৬। দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তনে বড় ভূমিকা নিলেন ভানুকা রাজাপক্ষ। ৪৫ বলে ৭১ রানে অপরাজিত রইলেন। ৬টি বাউন্ডারি এবং ৩টি ওভার বাউন্ডারি মারেন তিনি। উল্টোদিক থেকে দুটো ক্যামিও ইনিংস। ভানিন্দু হাসারঙ্গা ২১ বলে ৩৬ এবং চামিকা করুণারত্নে ১৪ রান করেন। ভানুকা-ভানিন্দু ৩৬ বলে ৫৮ এবং ভানুকা-চামিকা ৩১ বলে ৫৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি, শ্রীলঙ্কাকে খাদের কিনারা থেকে ভালো জায়গায় পৌঁছে দেয়। পাকিস্তান বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল পেসার হ্যারিস রউফ। ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন। শেষ ১০ ওভারে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান যোগ করে শ্রীলঙ্কা।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে পরপর দু-বলে ধাক্কা প্রমোদ মধুশানের। দ্বিতীয় বলে পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম এবং পরের বলে ফখর জামানের উইকেট নিয়ে পাকিস্তানকে বড় ধাক্কা দেন। স্বপ্নের ফর্মে থাকা মহম্মদ রিজওয়ান তখনও ক্রিজে। ফাইনালেও একই ছন্দে রিজওয়ান। পাওয়ার প্লে তে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৭ রান পাকিস্তানের। প্রথম স্পেলে ২ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে ২ উইকেট মধুশানের। শুরুর ধাক্কা সামলে রিজওয়ান-ইফতিকার জুটি ক্রমশ ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করে। প্রথম ১০ ওভারে ৬৮-২ ছিল পাকিস্তান। রিজওয়ান-ইফতিকার জুটি ৫০ পেরোতেই রানের গতি বাড়ায়। ১৪ তম ওভারে আক্রমণে মধুশান। চাপের মুখে অনবদ্য বোলিং তরুণ পেসারের। ইফতিকার বড় শট খেলার চেষ্টায় ফিরলেন ৩১ বলে ৩২ রানে। ৫৯ বলে ৭১ রানের এই জুটি ভেঙে ফের শ্রীলঙ্কাকে ম্যাচে ফেরান মধুশান। ক্রিজে তখনও রিজওয়ান। প্রয়োজনীয় রান রেট বাড়তে থাকায় চাপে পড়ে পাকিস্তান। মহম্মদ নওয়াজকে ফিরিয়ে বড় ধাক্কা চামিকা করুণারত্নের। রানের চাপে শেষ দিকে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে পাকিস্তান ইনিংস। ২০ ওভারে ১৪৭ রানে অলআউট পাকিস্তান। তৃতীয়বার এশিয়া সেরা হওয়ার অপেক্ষা দীর্ঘ হল পাকিস্তানের। ষষ্ঠবার এশিয়া কাপে খেতাব জিতল ‘আন্ডারডগ’ শ্রীলঙ্কা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : শ্রীলঙ্কা ১৭০-৬ (ভানুকা রাজাপক্ষ ৭১*, হ্যারিস রউফ ৩-২৯)। পাকিস্তান ১৪৭ (মহম্মদ রিজওয়ান ৫৫, প্রমোদ মধুশান ৪-৩৪, ভানিন্দু হাসারঙ্গা ৩-২৭)