Mohammedan Sporting: সাদা-কালোয় আলো ছড়াচ্ছেন ফয়জল

শরীর খারাপের জন্য ২০১৬ সালে বাবা কাজ ছেড়েছেন। তখন থেকেই পরিবারের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন ফয়জল এবং তাঁর এক দাদা। বাবা-মা ছাড়াও চার ভাই আর দুই বোনের সংসার। বোনেদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এক ভাই ক্লাস টুয়েলভে পড়ে। কোভিডের কারণে এক দাদার চাকরিও চলে গিয়েছে। সংসারকে একাই টানেন ফয়জল।

Mohammedan Sporting: সাদা-কালোয় আলো ছড়াচ্ছেন ফয়জল
ফয়জল আলি। ছবি: টুইটার
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 29, 2021 | 10:35 AM

কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়

চোখেমুখে একরাশ স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলা। মহমেডান স্পোর্টিংয়ের (Mohammedan Sporting) নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন ফয়জল আলি (Faisal Ali)। রাশিয়ান কোচ আন্দ্রে চের্নিশভের (Andrey Chernyshov) প্রধান অস্ত্র হয়ে উঠেছেন ২১ বছরের এই উইঙ্গার। ডুরান্ডের সেমিফাইনালেও দুরন্ত ফুটবল খেললেন। গোলও করলেন। ফয়জলের চোখে এখন রবিবারের ফাইনাল।

পার্ক সার্কাসের ফয়জল মহমেডানে আসার আগে সাদার্ন সমিতি (Souther Samity) আর ভবানীপুরে (Bhowanipore) খেলতেন। সেখান থেকেই গত বছর সাদা-কালোয় আসেন। আই লিগে নিজেকে মেলে ধরেছিলেন। দল সাফল্য পায়নি, তবে ফয়জল মাঠে আলো ছড়িয়েছিলেন। তাঁর খেলা দেখে আইএসএলের ক্লাবগুলোও হাত বাড়ায়। বেঙ্গালুরু এফসি আর চেন্নাইয়িন এফসির প্রস্তাব ছিল। তবু এ বছরটা মহমেডানেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সাদা-কালোর সঙ্গে এ বছর চুক্তি ছিলই। তা ছাড়াও মহমেডান কর্তাদের অনুরোধও ফেলতে পারেননি এই উইঙ্গার। স্বপ্ন কী? ফোনের ওপার থেকে আত্মবিশ্বাসী গলায় জবাব, ‘জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপাতে চাই। আইএসএল তো খেলবই। নিজের ওপর সেই ভরসাও আছে।’

শরীর খারাপের জন্য ২০১৬ সালে বাবা কাজ ছেড়েছেন। তখন থেকেই পরিবারের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন ফয়জল এবং তাঁর এক দাদা। বাবা-মা ছাড়াও চার ভাই আর দুই বোনের সংসার। বোনেদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এক ভাই ক্লাস টুয়েলভে পড়ে। কোভিডের কারণে এক দাদার চাকরিও চলে গিয়েছে। সংসারকে একাই টানেন ফয়জল। কষ্ট নিত্যসঙ্গী, তবু জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখা ছাড়তে চান না এই উইঙ্গার। পরিবারের সবাই ফুটবল ভালোবাসে। রোনাল্ডোভক্ত ফয়জল স্বপ্নকে সত্যি করার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন। দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যে আদর্শ মেহতাব হোসেন। সাদার্ন সমিতিতে তাঁর অধীনে খেলেছেন। এখনও ম্যাচের পর মেহতাবের সঙ্গে কথা হয় ফয়জলের।

আপাতত প্রাথমিক লক্ষ্য একটাই। রবিবারের ফাইনাল। এফসি গোয়া-বেঙ্গালুরু এফসি ম্যাচের বিজয়ী দলের সঙ্গে ফাইনাল খেলবে মহমেডান। ৮ বছর পর ফের ডুরান্ড কাপ জয়ের হাতছানি সাদা-কালোর সামনে। ফয়জলের কথায়, ‘আইএসএলের দলের বিরুদ্ধে খেলব। এটা ভেবে আরও বেশি উজ্জীবিত। ঠিক চ্যাম্পিয়ন হব। কোচ এবং দলের উপর ভরসা আছে।’

আন্দ্রে চের্নিশভের হাতে পড়ে মহমেডান দলটাই বদলে গিয়েছে। ফয়জল, ফৈয়াজরা দৌড়চ্ছেন। আর খেলা কন্ট্রোল করছেন মিডফিল্ডার নিকোলা স্তোজানোভিচ। সার্বিয়ান মিফিল্ডারের প্রশংসাও শোনা গেল ফয়জলের গলায়। বললেন, ‘ও আমাদের দলের নেতা। মাঠের মধ্যে আমাদের খেলাটার রিমোট কন্ট্রোল ওর হাতেই থাকে। মাঠের বাইরে কোচের। কখন কোথায় বল ধরতে হবে, দৌড়তে হবে নিকোলাই আমাদেরকে গাইড করে।’

৮ বছর আগে সঞ্জয় সেনের হাত ধরে ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মহমেডান স্পোর্টিং। তারপর আর সেভাবে সাফল্য নেই রেড রোডের পাশের ক্লাবে। ফয়জল, ফৈয়াজরা তৈরি ট্রফির স্বপ্নকে সত্যি করতে।

আরও পড়ুন: SC East Bengal: চার বছর পর লাল-হলুদে নয়া ভূমিকায় প্রত্যাবর্তন মৃদুলের