ISL 2021-22: হাবাসের টিম গেমকে আটকাতে লাল-হলুদের ভরসা দিয়াজের মগজাস্ত্র

এ বারের ডার্বি দুই স্প্যানিশ কোচের মস্তিষ্কের লড়াই। দলের রিমোট কন্ট্রোল থাকছে মানোলো দিয়াজ (Manuel Diaz) আর আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের (Antonio Habas) হাতে। প্রথম জনের এবারই প্রথম ডার্বি। গোয়াতে বসেও উত্তাপ টের পাচ্ছেন দিয়াজ। অন্যদিকে হাবাস ভারতীয় ফুটবলের পোড় খাওয়া কোচ। ডার্বি জেতার স্বাদ পেয়েছেন।

ISL 2021-22: হাবাসের টিম গেমকে আটকাতে লাল-হলুদের ভরসা দিয়াজের মগজাস্ত্র
ISL 2021-22: হাবাসের টিম গেমকে আটকাতে লাল-হলুদের ভরসা দিয়াজের মগজাস্ত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 27, 2021 | 9:53 AM

কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়

আজ বড় ম্যাচ। আড়াআড়ি ভাগ বাংলা। ঐতিহ্যের ডার্বি শতবর্ষে পা রেখেছে আগেই। এই বড় ম্যাচ ঘিরে কত ইতিহাস, কত গল্প। শতবর্ষের এই ডার্বিতে (Derby) লেগেছে নতুন রং। নয়া মোড়কে আইএসএলের (ISL) মঞ্চে লাল-হলুদ, সবুজ মেরুন। দুই প্রধানে কর্পোরেটের ছোঁয়া। তবু আবেগ আগের মতোই। কলকাতা থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে মাণ্ডবী নদীর তীরে মুখোমুখি দুই প্রধান। উত্তাপ, উন্মাদনায় নেই কোনও খামতি।

আইএসএলের বড় ম্যাচে এখনও ২-০ এগিয়ে সবুজ-মেরুন। আজ জিতলে হ্যাটট্রিক সম্পন্ন করবেন রয় কৃষ্ণারা (Roy Krishna)। লাল-হলুদ আইএসএলের প্রথম বড় ম্যাচ জয়ের সন্ধানে। খাতায়-কলমে অনেক এগিয়ে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan)। যদিও ডার্বি এ সবের হিসেব-নিকেশ মানে না। ইতিহাস নতুন ভাবে তৈরি হয় বড় ম্যাচে। যে ইতিহাসকে আঁকড়েই বেঁচে থাকেন অসংখ্য সমর্থকরা। হোক না গোয়াতে ডার্বি, হোক না দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা, বাঙালি কিন্তু নিজেদের মতোই সাজিয়ে ফেলেছে ডার্বির সমস্ত প্ল্যানিং। শহরের অলিতে গলিতে ঝুলছে দুই দলের পতাকা। বিভিন্ন জায়গায় বসানো হচ্ছে জায়ান্ট স্ক্রিন। এই আবেগ তো চিরন্তন।

এ বারের ডার্বি দুই স্প্যানিশ কোচের মস্তিষ্কের লড়াই। দলের রিমোট কন্ট্রোল থাকছে মানোলো দিয়াজ (Manuel Diaz) আর আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের (Antonio Habas) হাতে। প্রথম জনের এবারই প্রথম ডার্বি। গোয়াতে বসেও উত্তাপ টের পাচ্ছেন দিয়াজ। অন্যদিকে হাবাস ভারতীয় ফুটবলের পোড় খাওয়া কোচ। ডার্বি জেতার স্বাদ পেয়েছেন। দু’বার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তাঁর কাছে এই পরিবেশ নতুন কিছু নয়। লাল-হলুদ কোচ দলকে গোছানোর বিশেষ সময় পাননি। অন্যদিকে সবুজ-মেরুন কোচ দীর্ঘদিন ধরে সামলে আসছেন এই একই দলকে। মুখে দুই কোচই বলছেন ৩ পয়েন্টের জন্য মাঠে ঝাঁপাবেন। গনগনে আঁচ টের পাচ্ছেন ফুটবলাররাও। ভালোই জানেন এই একটা ম্যাচ জিতলেই তুলোয় মুড়ে রাখবেন সমর্থকরা।

প্রত্যেকটা বিভাগেই এসসি ইস্টবেঙ্গলের (SC East Bengal) চেয়ে এগিয়ে রয়েছে এটিকে মোহনবাগান। বিশেষ করে, হুগো বোমাস আর লিস্টন কোলাসো যোগ দেওয়ার পর দলের চেহারাই পাল্টে গিয়েছে। আক্রমণই কোচ হাবাসের সম্পদ। চোটের জন্য অনিশ্চিত নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার তিরি। তাতে অবশ্য কুছ পরোয়া নেহি বাগান কোচের। ম্যাকহিউ, দীপক টাংরিরা আছেন বিপক্ষের অক্রমণকে রোখার জন্য। এ ছাড়া দুই সাইডব্যাক প্রীতম কোটাল আর শুভাশিস বসু হাবাসের অন্যতম সেরা অস্ত্র। গোল করার লোকের অভাব নেই। রয় কৃষ্ণা ছাড়াও মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসো, হুগো বোমাসরা আছেন এই দলে। যাঁরা যে কোনও সময়ে ম্যাচের রং পাল্টে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।

অন্যদিকে লাল-হলুদের ফুটবলারদের মধ্যে এখনও সে ভাবে বোঝাপড়াই গড়ে ওঠেনি। অতিরিক্ত লং পাসের বদলে ছোট পাসে ফুটবলারদের খেলার নির্দেশ দিচ্ছেন দিয়াজ। বোমাস-কৃষ্ণাদের আটকাতে আদিল খানকে ব্লকারে খেলাতেই পারেন লাল-হলুদ কোচ। গত ম্যাচে আদিল না খেললেও ডার্বির ভাবনায় নিশ্চিত ভাবেই কোচের নোটবুকে আছেন আদিল। ৪-১-৪-১ ফর্মেশনে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে দেখা গেলে অবাক হওয়ার থাকবে না। রাইট ব্যাকে রাজু গায়কোয়াড়কে খেলানোর ভাবনা দিয়াজের। সিডুলকে মাঠে না নামিয়ে হাতের তাস লুকিয়ে রেখেছেন রিয়াল মাদ্রিদের ‘বি’ টিমের প্রাক্তন হেডস্যার।

আর খানিকক্ষণ। তারপরই তিলক ময়দানে সম্মুখ সমরে পেরোসেভিচ-রয় কৃষ্ণারা। এ বারের বড় ম্যাচে দুই দলেই রয়েছেন বেশ কিছু বাঙালি ফুটবলার। এই ডার্বি তাঁদের কাছে অনেক বেশি আবেগের, মর্যাদার। অরিন্দম-রফিক কিংবা প্রীতম-শুভাশিস যে কেউই শতবর্ষের বড় ম্যাচে নায়ক হয়ে উঠতে পারেন।