মোহনবাগান তো বিক্রি হয়নি, বলছেন হরিমোহন বাঙ্গুর

লগ্নিকারী সংস্থাকে টিম তৈরি করতে বললেও ক্লাবের চিঠিতে কোথাও উল্লেখ নেই যে, তারা স্পোর্টিং রাইটস নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। শ্রী সিমেন্ট কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর টিভি নাইন বাংলাকে স্পষ্ট জানান, তিনি এখনও চিঠি পড়েননি। আগামীকাল পুরো চিঠি পড়ে তবেই উত্তর দেবেন।

মোহনবাগান তো বিক্রি হয়নি, বলছেন হরিমোহন বাঙ্গুর
মোহনবাগান তো বিক্রি হয়নি, বলছেন হরিমোহন বাঙ্গুর
Follow Us:
| Updated on: May 26, 2021 | 2:09 PM

কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়

দীর্ঘ টালবাহানার পর লগ্নিকারী সংস্থাকে চিঠির উত্তর দিল ইস্টবেঙ্গল (East Bengal) ক্লাব। টার্মশিটের (term sheet) সঙ্গে মূল চুক্তিপত্রে কোথায় অসঙ্গতি রয়েছে, তা জানতে চেয়ে ক্লাবকে এ মাসের শুরুতে চিঠি পাঠিয়েছিল শ্রী সিমেন্ট (Shree Cement)। গতকাল ক্লাব কর্তারা নিজেদের মধ্যে দীর্ঘ আলোচনার পর আজ লগ্নিকারী সংস্থাকে চিঠি পাঠাল। ক্লাবের তরফ থেকে চিঠিতে বলা হয়েছে, অষ্টম আইএসএলে (ISL) অংশ নেওয়ার জন্য লগ্নিকারী সংস্থা তাদের কাজ শুরু করে দিক। এর সঙ্গে পুরনো কিছু বক্তব্যও তুলে ধরা হয়েছে এই চিঠিতে। গত ১৭ অক্টোবর ইনভেস্টরকে চিঠি পাঠিয়ে ক্লাব জানিয়েছিল, মূল চুক্তিপত্রে সই করতে কোথায় আপত্তি রয়েছে তাদের। এ বিষয়ে নতুন করে কিছু উল্লেখ করার নেই। প্রয়োজনে লগ্নিকারী সংস্থা আর ক্লাব নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসে সমস্যা মিটিয়ে নিক। সমস্ত রকম সহযোগিতা করতে ক্লাব তৈরি।

এখানেই টুইস্ট। লগ্নিকারী সংস্থাকে টিম তৈরি করতে বললেও ক্লাবের চিঠিতে স্পোর্টিং রাইটস নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। শ্রী সিমেন্ট কর্ণধার হরিমোহন বাঙ্গুর (Hari Mohan Bangur) টিভি নাইন বাংলাকে স্পষ্ট জানান, তিনি এখনও চিঠি পড়েননি। আগামীকাল পুরো চিঠি পড়ে তবেই উত্তর দেবেন। তাঁর কথায়, ‘যতক্ষণ না ক্লাব মূল চুক্তিপত্রে সই করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত অষ্টম আইএসএল নিয়ে কিছু ভাবতে চাই না। কিসের ভিত্তিতে আমরা দল গড়ব? চুক্তিপত্রে সই করলেই তো সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। চিঠি পাঠানো আর চুক্তিপত্রে সই করা এক ব্যাপার নয়।’

ক্লাব কর্তাদের দাবি, মূল চুক্তিপত্রে সই করলে ক্লাব পুরোপুরি বিক্রি হয়ে যাবে। এখানে হরিমোহন বাঙ্গুরের সাফ জবাব, ‘ক্লাব বিক্রির প্রসঙ্গ আসছে কোথা থেকে? মোহনবাগানকে দেখুন তো, ওরা তো ইনভেস্টারের সঙ্গে চুক্তি করেছে। ওদের ফুটবল স্বত্ব এটিকে-কে দিয়েছে। তাতে কি মোহনবাগান বিক্রি হয়ে গিয়েছে? ইস্টবেঙ্গল এটা কেন বুঝতে পারছে না।’

স্পোর্টিং রাইটসে স্বচ্ছ ব্যাখ্যাও করছেন শ্রী সিমেন্টের কর্ণধার। তাঁর যুক্তি, ‘ক্লাবের উন্নতির জন্য এতদিন একটা দল কাজ করছিল। এখন আর একটা দল সেই কাজটাই এগিয়ে নিয়ে যাবে। কর্তারা ওরা চুক্তিপত্রে সই করলে ক্লাব বিক্রি হয়ে যাবে না। ক্লাব বিক্রি শব্দটার মধ্যে একটা পুঁজিবাদি গন্ধ আছে। আমরা ক্লাবটা কেনার চেষ্টা করছি না। ক্লাবের উন্নতির চেষ্টা করছি। একটা ব্যাপার পরিষ্কার করে দিতে চাই, আমরা ক্লাবের পুরো ক্রীড়া স্বত্বই চাইছি। আলাদা করে শুধু ফুটবল রাইটস নিতে চাই না।’

সদস্যদের অধিকার খর্বের প্রসঙ্গও উড়িয়ে দিচ্ছেন হরিমোহন বাঙ্গুর। বলেন, ‘সদস্যদের অধিকার কেন খর্ব হবে? তাদের যে অধিকারের জায়গা, তা বরাবরের মতোই থাকবে। কোনও লগ্নিকারী সংস্থাই চাইবে না, সদস্যরা ক্লাব ছেড়ে চলে যাক। সদস্য-সমর্থকরাই তো সম্পদ।’

প্রশ্ন হল, কতদিন অপেক্ষা করবে শ্রী সিমেন্ট। হরিমোহন বললেন, ‘অপেক্ষা করারও একটা নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। চুক্তিপত্রে সই না করে শুধু চিঠি চালাচালি চলছে। যদি ওরা আমাদের সঙ্গে না থাকতে চায়, তা হলে সেটা পরিষ্কার জানিয়ে দিক।’

ক্লাব কর্তারা নিজেদের মধ্যে সভা করলেও লগ্নিকারী সংস্থা অবশ্য কোনও আলোচনায় যেতে নারাজ। মূল চুক্তিপত্রে সই না হওয়ায় এখনও বোর্ড তৈরি করা যায়নি। তাই ক্লাবের আর কোনও যুক্তিই শুনতে চাইছেন না হরিমোহন বাঙ্গুর। এর সঙ্গে হরিমোহন বাঙ্গুর এও জানান, ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে।’ সামনের মাসের মধ্যেই আইএসএল খেলার জন্য এফএসডিএলকে ১৮ কোটি টাকা দিতে হবে। ক্লাব মূল চুক্তিপত্রে সই না করলে আইএসএল খেলার জন্য এখনই কোনও তোড়জোড় করতে চায় না লগ্নিকারী সংস্থা।

আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মেয়াদ বাড়তে পারে স্টিমাচের