Neeraj Chopra Javelin: আশ্চর্য আর্শাদে সোনার স্বপ্নভঙ্গ, রুপোতে থামলেন নীরজ
Paris Olympics 2024: ফাইনালে সেরাটাই দিয়েছেন। নীরজের প্রথম থ্রো-টা ছিল ফাউল। কিন্তু দ্বিতীয় থ্রোতে কোয়ালিফাইং রাউন্ডকেও ছাপিয়ে যান। ৮৯.৪৫ মিটার মরসুমের সেরা থ্রো করে। নীরজ ততক্ষণে জেনে নিয়েছেন, পোডিয়ামে উঠবেন ঠিক, কিন্তু রুপোতেই থামতে হবে তাঁকে। সোনা খোয়ানো নীরজ ৯০ পার করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু হল কই!
অভিষেক সেনগুপ্ত
ইংল্যান্ডের ওপেনার নিক নাইট দেখেছিলেন ঘূর্ণী ঝড় উঠেছে কেপ টাউনের আকাশে। ঝড় যেন ক্রমশ বাড়াচ্ছে গতি। যখন থামল, স্পিড মিটার জানিয়েছে, ১৬১.৩ কিমি প্রতি ঘণ্টায় বয়েছে ঝড়। ওই ঘূর্ণীর ঝড়ের কী নাম দিয়েছিল কেপ টাউন? শোয়েব আখতার! ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুতগতির বলটা তাঁর হাত থেকে বেরিয়েছিল ২০০৩ সালে বিশ্বকাপের ম্যাচে। ২১ বছর পর আবার এক শোয়েব আখতারের জন্ম দিল পাকিস্তান। না তিনি ক্রিকেট খেলেন না। অলিম্পিকের জ্যাভলিন থ্রোয়ার। যাঁর এক থ্রোতে ঘায়েল ভারতের সোনার ছেলে!
অব কি বার, নব্বই পার— স্লোগান তুলেছে ভারত। সোনা তো প্রত্যাশিত। তাতে তৃপ্তির ছিটে লাগবে না, হয় নাকি! খেলার দুনিয়া কারও মুঠোয় থাকে না। নায়ক বদলে যায়। হাসি পাল্টে যায়। বদলে যায় মুখ। স্রেফ মুহূর্তে। প্যারিস তো তাই দেখল। একটা ফাউল, ৮০, ৮৪ অথবা ৮৮ মিটারের বেশি থ্রো দেখে চেনা যাবে সোনার নায়ককে? যাবে, যদি ৯২.৯৭ মিটারে চোখ রাখেন। দ্বিতীয় থ্রো ছিল পাকিস্তানের আর্শাদ নাদিমের। তাতে অলিম্পিক রেকর্ড। তাতেই সোনাটা কেড়ে নিলেন নীরজ চোপড়ার!
৮৯.৩৪ থ্রোতে ফাইনালে উঠেছিলেন নীরজ। জ্যাভলিন ফাইনালেও সেরাটাই দিয়েছেন। নীরজের প্রথম থ্রো-টা ছিল ফাউল। কিন্তু দ্বিতীয় থ্রোতে কোয়ালিফাইং রাউন্ডকেও ছাপিয়ে যান। ৮৯.৪৫ মিটার মরসুমের সেরা থ্রো করে। নীরজ ততক্ষণে জেনে নিয়েছেন, পোডিয়ামে উঠবেন ঠিক, কিন্তু জনগণমন শুনতে পাবেন না। রুপোতেই থামতে হবে তাঁকে। সোনা খোয়ানো নীরজ ৯০ পার করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু হল কই!
হল আর্শাদের। পাক-পঞ্জাবের ছেলে পর পর দু’বার থ্রো করলেন ৯০মিটারের বেশি। যেন এক রাতে দুনিয়া পাল্টে ফেললেন আর্শাদ। ২০০৮ সালে বেজিংয়ে জ্যাভলিনে অলিম্পিক রেকর্ড করেছিলেন নরওয়ের আন্দ্রেয়াস থোরকিল্ডসেন। ১৬ বছর পর সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন ওয়াঘার ওপারের এক ছেলে! এর আগে অলিম্পিক থেকে কি সোনা জিতেছেন কোনও পাকিস্তানি? অবশ্যই। তবে ৩টে সোনার পদক এসেছিল হকি থেকে। ১৯৯২ সালে শেষবার বার্সেলোনা অলিম্পিক থেকে পদক পেয়েছে পাক হকি।
আর অলিম্পিকে ব্যক্তিগত ইভেন্টে পদক? মাত্র দুই পাক অ্যাথলিট সেই বিরল তালিকায়। ১৯৬০ সালে কুস্তি থেকে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন মহম্মদ বশির। আর ১৯৮৮ সালে সিওল অলিম্পিকের বক্সিং থেকে ব্রোঞ্জ পেয়েছিলেন হুসেইন শাহ। ৩৬ বছর পর আবার অলিম্পিক থেকে বক্তিগত পদক পাকিস্তানের। আর পদক প্রাপ্তির নিরিখে দেখলে, ৩২ বছর পর আবার অলিম্পিক পদকের খোঁজ পেল পাকিস্তান। আর তাই কিনা সোনায় মুড়ে দিলেন আর্শাদ নাদিম।
নীরজ তবু নায়ক। নীরজ তবু ইতিহাসে। সুশীল কুমার, পিভি সিন্ধুর মতো পর পর দুটো অলিম্পিকে পদক ফলালেন। সোনা ও রুপো। অ্যাথলেটিক্সে এমন নায়ক যে বিরল!