Velomobile In India: বেঙ্গালুরুর ‘জ্যামজমাট’ রাস্তায় দৌড়চ্ছে ভেলোমোবাইল! দেশে এই প্রথম, বাংলায় কবে আসছে?
Bengaluru News: এই প্রথম বার দেশে ভেলোমোবাইলের দেখা মিলল। বেঙ্গালুরুর রাস্তায় ছুটল সেই গাড়িটি। কী এমন বিশেষত্ব রয়েছে এই গাড়িতে। ভারতে দামই বা কত, সেই সব তথ্য জেনে নিন।
রোজ বাড়ছে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম। আর এমনই একটা সংকটজনক পরিস্থিতিতে অফিস যেতে মানুষজন সাইকেলের ব্যবহার করলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না! তার উপরে আবার দোসর ব্যাপক ট্রাফিক জ্যাম এবং তাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফেঁসে এই গরমে গলদঘর্ম অবস্থা সাধারণ মানুষের। কলকাতা থেকে শুরু করে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু – চতুর্দিকেই পরিস্থিতিটা কিছুটা এক। তবে বেঙ্গালুরুতে এক ব্যক্তি উদ্ভট এক যান (Vehicle) নিয়ে রাস্তায় বেরোলেন। এমনই একটা গাড়ি, ঠিক যেন কোনও এক সাই-ফাই ছবির কথা মনে করিয়ে দেবে। সেই গাড়িটি আসলে একটি ভেলোমোবাইল (Velomobile)। এটি একটি বিশেষ ধরনের সাইকেল। মূলত ইউরোপের দেশগুলিতে এই ধরনের বাইসাইকেল বা ভেলোমোবাইলের দেখা মেলে। কিন্তু হঠাৎ সেই গাড়িটি ভারতে কী করছে? কে নিয়ে এলেন এমন একটা গাড়ি? আর কী কী বিশেষত্বই বা রয়েছে সেই গাড়িতে। এই সব তথ্যই একবার জেনে নেওয়া যাক।
ভেলোমোবাইল কী
ভেলোমোবাইল আসলে একটি তিন-চাকা বাইসাইকেল, যার বাইরের অংশে একটি প্রোটেকশন কভার রয়েছে। কভারটি ডিজ়াইন করা হয়েছে অ্যারোডাইনামিক পদ্ধতিতে। চালক রীতিমতো হেলান দিয়ে বসতে পারেন এবং যথেষ্ট গতিও তুলতে পারবেন। ট্রাফিক জ্যামে না ফেঁসে যে সব মানুষ খুব দ্রুততার সঙ্গে অফিসে পৌঁছে যেতে চান, তাঁদের জন্য সেরা অপশন হল এই ভেলোমোবাইল। শুধু তাই নয়। গাড়িটির বাইরে এমনই কভার রয়েছে যা বিভিন্ন আবহাওয়ায় গাড়িটিকে রক্ষা করতে পারে। তিনটি চাকা থাকার কারণে ব্যালান্স ধরে রাখতে পারে গাড়িটি। সেই সঙ্গেই আবার মালপত্র বহন করার জন্য যথেষ্ট স্পেসও রয়েছে গাড়িটিতে। তবে ভারতে এমন কোনও সংস্থা নেই, যাঁরা এই ধরনের গাড়ি তৈরি করে।
কারা কিনল এই গাড়ি
এই তিন চাকার বাইসাইকেল কিনেছে বেঙ্গালুরুর একটি বাইক স্টোর। ক্যাডেন্স৯০ নামক সেই বাইকের দোকানটি ভারতে ভেলোমোবাইল সাপ্লাইও করছে। যদিও তা ভারতে নির্মিত নয়। তিন চাকার গাড়িটি তৈরি করে রোমের সংস্থা ভেলোমোবাইলওয়ার্ল্ড। বেঙ্গালুরুর এই গাড়িটির মালিকের নাম ফণিশ নাগারাজা। ২০১৯ সালে প্যারিস-ব্রেস্ট-প্যারিস ইভেন্টে এই ভেলোমোবাইল গাড়িটি তিনি সর্বপ্রথম দেখেছিলেন। জার্মানি ও নেদারল্যান্ডের বহু মানুষ এই ধরনের গাড়ি ব্যবহার করেন। তাঁদের সঙ্গেই কথা বলে ফণিশ জানতে পারেন যে, একজন মানুষের ওজন, উচ্চতা এবং চাহিদা অনুযায়ী কাস্টম ভিত্তিতে গাড়িটি তৈরি করা হয়।
ভারতে এই গাড়ির দাম কত
না, ভেলোমোবাইল ভারতে একদমই সস্তা নয়। যথেষ্ট দামি এই গাড়ি। আর তার সবথেকে বড় কারণ হল, রোম থেকে নিয়ে এসে এই গাড়ি ভারতে বিক্রি করতে হয়। এই তিন চাকার বাইসাইকেলের দাম ভারতে প্রায় ১৪ লাখ টাকা। তবে বেঙ্গালুরুর যে ভেলোমোবাইল মডেলটি ভাইরাল হয়েছে, তার দাম ১৮ লাখ টাকা। কেবল মাত্র কাস্টমস এবং শিপিংয়ের জন্যই ১.৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে যায়।
কত স্পিড দিতে পারে
ব্যয়বহুল এই গাড়িটিতে কাস্টমাইজেশনের অপশন পেয়ে যাবেন ক্রেতারা। গাড়িটি অর্ডার দেওয়ার পরই ক্রেতার ওজন, উচ্চতা-সহ আরও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হবে ভেলোমোবাইল। পাশাপাশি আবার ক্রেতারা কাস্টম-মেড বডি শেলও বানিয়ে নিতে পারবেন, যাতে অন্যদের থেকে পার্থক্যটা বোঝা যায়। শুধু মাত্র বাইকটির ওজন ২৫ কিলোগ্রাম এবং সমগ্র প্যাকেজটির ওজন ৯০ কিলোগ্রাম। অ্যারোডায়নামিক শেল ডিজ়াইনের জন্য গাড়িটি অত্যন্ত স্পিডে চালানো যায়। একটা ঠিকঠাক রাস্তায় ৫৫-৬৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় ছুটতে পারে এই ভেলোমোবাইল।
রোজ অফিসে নিয়ে যান বেঙ্গালুরুর চালক
ফণিশ নাগারাজা নামের ওই ব্যক্তি, যিনি ভেলোমোবাইল গাড়িটি কিনেছেন, তিনি প্রতিদিনই এই অবাক যানটিকে অফিসে নিয়ে যান। তাঁর কথায়, “রোজ আমি অফিসে যাতায়াত করার জন্য নিয়ে যাই গাড়িটি। একটা সাধারণ বাইক নিয়ে আমি যেখানে প্রতি ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার স্পিড পেতাম। ঠিক সেখানেই এখন এই ভেলোমোবাইল নিয়ে আমি ঘণ্টায় ৩৫ কিলোমিটার স্পিড পাচ্ছি। দুর্গম রাস্তাতেও অনায়াসে চলতে পারে গাড়িটি।”
বাংলায় কবে আসছে
এ গাড়ি যে বাংলায় কবে আসতে পারে, তা কেউই বলতে পারবেন না। কারণ, গোটা দেশে একমাত্র বেঙ্গালুরুর ওই বাইক শোরুমেই পাওয়া যাচ্ছে ভেলোমোবাইল। তাছাড়াও এই গাড়িটির দাম অত্যন্ত চড়া হওয়ার ফলে, এমনকি এই দামে নামীদামি ব্র্যান্ডের এসইউভি পর্যন্ত মিলতে পারে। তাই সাধারণ মানুষ খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করবে না বলেই বাংলার কোনও শোরুমে এই গাড়ি আসার সম্ভাবনা আপাতত খুবই কম। তবে কেউ চাইলেই বেঙ্গালুরু থেকে একটা ভেলোমোবাইল নিয়ে আসতে পারেন।
আরও পড়ুন: ইলেকট্রিক সাইকেল কিনলেই ১৫,০০০ টাকা ছাড়, বড় ঘোষণা এই রাজ্য সরকারের
আরও পড়ুন: মাত্র ১১,০০০ টাকায় নতুন মারুতি আর্টিগা-র বুকিং শুরু হল, নজরকাড়া লুক, বাম্পার ফিচার্স!