বহু লক্ষ বছর আগে মঙ্গলের বুকেও ছিল জল! এখন কোথায় রয়েছে সেই জল? জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা

একসময় নাকি আর্দ্র ছিল মঙ্গল গ্রহ। বিভিন্ন গবেষণার পর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, লাল গ্রহের পৃষ্ঠদেশে ছিল প্রচুর জলাভূমি। কিন্তু বহু লক্ষ বছর আগে এই পরিবেশ সম্পূর্ণ ভাবে বদলে গিয়েছে। 

বহু লক্ষ বছর আগে মঙ্গলের বুকেও ছিল জল! এখন কোথায় রয়েছে সেই জল? জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৩ বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গলে যে জল ছিল তার পরিমাণ আটলান্টিক মহাসাগরে থাকা জলের প্রায় অর্ধেকের সমান।
Follow Us:
| Updated on: Apr 03, 2021 | 11:44 PM

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে বর্তমানে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার বিষয় হল মঙ্গল গ্রহ। ইতিমধ্যেই সেখানে রোভার পারসিভের‍্যান্স পাঠিয়েছে নাসা। লাল গ্রহের বুকে জল এবং প্রাণের সন্ধান চালাচ্ছে এই রোভার। ভারতের পাঠানো মঙ্গলযানও তার চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে। এইসব মহাকাশযান থেকে পাঠানো তথ্য নিয়ে গবেষণা চলছে। আর এই গবেষণাতেই উঠে এসেছে এক চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। মঙ্গলেও নাকি জলের অস্তিত্ব ছিল। কয়েক বিলিয়ন বছর আগে সেখানে প্রচুর জলাভূমি ছিল। কিন্তু এখন আর তা নেই। তাহলে কোথায় গেল সেই জল? তারই হদিশ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই জলের বেশিরভাগটাই বর্তমানে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশের নীচে বিভিন্ন খনিজের মধ্যে রয়েছে। তবে সেখানে জল হিসেবে নয়, বরং বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়া করে খনিজের মধ্যে আবদ্ধ রয়েছে জলীয় উপাদান হিসেবে। আর বাকিটা মঙ্গলের আবহাওয়া মণ্ডলে উবে গিয়েছে বা উধাও হয়েছে।

ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষক ইভা শেলার বলেছেন, “আমরা গবেষণায় জানতে পেরেছি বহু লক্ষ বছর আগে মঙ্গল গ্রহে থাকা জলের বেশিরভাগ অংশ মাটির তলায় খনিজের মধ্যে আবদ্ধ রয়েছে। ৩ বিলিয়ন বছর আগে এই ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ ৩ বিলিয়ন বছর ধরে মঙ্গলের মাটিতে জলের অস্তিত্ব নেই।”

বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন, ৩ বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গলে যে জল ছিল তার পরিমাণ আটলান্টিক মহাসাগরে থাকা জলের প্রায় অর্ধেকের সমান। সেই জল দিয়ে গোটা গ্রহের চাহিদা মেটানো যেত। কিন্তু এখন আর তার অস্তিত্ব নেই।

কীভাবে কতটা জল নষ্ট হয়েছে সেটাও একটা ফর্মুলার মাধ্যমে বের করা সম্ভব বলেই জানিয়েছেন শেলার। তিনি বলেছেন, “এই মডেলের তিনটি ভাগ রয়েছে। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে জলের যোগান, মহাকাশে জলের হারিয়ে যাওয়া ও মাটির নীচে জলের হারিয়ে যাওয়া। এই মডেল ও হাইড্রোজেন আইসোটোপের মাধ্যমে গণনা করে বলা যেতে পারে কতটা জল মহাকাশে হারিয়ে গেছে আর এখন কতটা মাটির নীচে রয়েছে।”

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মাটির নীচে বিভিন্ন খনিজের অংশ হিসেবে যে জল আবদ্ধ হয়ে রয়েছে সেই সংক্রান্ত গবেষণা আগামী দিনে মহাকাশচারীদের কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠতে পারে। তবে খনিজের মধ্যে আবদ্ধ অবস্থায় জলের রাসায়নিক গঠন অন্য রকমের হতে পারে। তাই সেখান থেকে জলের নমুনা ফিরে পেতে হলে ওইসব খনিজ পদার্থকে তাপ দিয়ে বা অন্য কোনও উপায় তার মধ্যে থেকে জলকে আলাদা করতে হবে বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।