Mount Everest: আর ঠান্ডা নয়, মাউন্ট এভারেস্টে ছত্রাক আর জীবাণুর হানায় জেরবার পর্বতারোহীরা
New Scientific Study: মাউন্ট এভারেস্ট নিয়ে নতুন তথ্য সামনে আনলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, মাউন্ট এভারেস্টে কয়েক বছর পর বরফের জায়গা নেবে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক।
Latest Science News: মাউন্ট এভারেস্ট নামটি শুনলেই প্রথমে যা মনে পড়ে তা হল, অপূর্ব সুন্দর বরফাচ্ছন্ন পর্বত আর তুষারে ঢাকা পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ। এই বরফাচ্ছন্ন পর্বতে যে বাস্তুতন্ত্র ধীরে-ধীরে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলছে, তা আগেই জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু এবার মাউন্ট এভারেস্ট নিয়ে নতুন তথ্য সামনে আনলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, মাউন্ট এভারেস্টে (Mount Everest) কয়েক বছর পর বরফের জায়গা নেবে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক। 8,848.86 মিটার উঁচু পর্বতে ক্রমাগত জমা হচ্ছে ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক। সেই ছত্রাক কোথা থেকে আসছে, তা জানলে আপনি চমকে উঠবেন। দিনের পর দিন ধরে মানুষের হাঁচি-কাশি থেকে বেরিয়ে আসছে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া। আর তারা বাসা বাঁধছে মাউন্ট এভারেস্টের মাটিতে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, তারা যে ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক খুঁজে পেয়েছেন, তার বেশিরভাগই পর্বতারোহীদের নাক-মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে। ওই প্রচণ্ড ঠান্ডায় যেখানে বেশিক্ষণ টিকে থাকাই দায়, সেখানে বহাল তবিয়তে বেড়ে চলেছে জীবাণুরা।
কোথায় সবথেকে বেশি ব্যাকটেরিয়া-ছত্রাক পাওয়া গিয়েছে?
এভারেস্টের দক্ষিণ বেস ক্যাম্পে হাঁচি-কাশি থেকে নির্গত ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক সবচেয়ে বেশি পরিমাণে পাওয়া গিয়েছে। কারণ অধিকাংশ পর্বতারোহী এই পথ দিয়েই এভারেস্টের চূড়ায় পৌঁছান। এই ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকগুলি বরফে শতাব্দীর পর শতাব্দী বেঁচে থাকতে পারে। মাউন্ট এভারেস্ট হিমালয়ের মহালাঙ্গুর হিমাল রেঞ্জে অবস্থিত একটি 29,031 ফুট উচ্চ শৃঙ্গ। একে নেপালি ভাষায় সাগরমাথা এবং তিব্বতি ভাষায় চোমোলাংমা বলা হয়। কলোরাডো বোল্ডার ইউনিভার্সিটির মাইক্রোবায়াল ইকোলজিস্ট নিকোলাস ড্রাগন বলেন, এভারেস্টের চূড়ায়, যেখানে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে, সেখানেও এই জীবাণুগুলি টিকে থাকতে পারে।
কী ধরনের ব্যাকটেরিয়া আর ছত্রাক পাওয়া গিয়েছে?
নিকোলাস এবং তার দল এভারেস্টের 7900 ফুট উচ্চতায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ব্যাকটেরিয়া-ছত্রাক খুঁজে পেয়েছেন। সাধারণত হাঁচি ও গলা থেকে বেরিয়ে আসা ব্যাকটেরিয়া-ছত্রাক গরম আবহাওয়ার খোঁজ করে। যেমন স্ট্যাফাইলোকক্কাস এবং স্ট্রেপ্টোকক্কাস। কিন্তু শুষ্ক, কঠিন এবং ঠান্ডা আবহাওয়াতেও নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পেরেছে। স্ট্যাফাইলোকক্কাস এবং স্ট্রেপ্টোকক্কাস সাধারণত মাটিতে পাওয়া যায়। কিন্তু এগুলি আমাদের ত্বক এবং মুখের ভিতরে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া। এটি পর্বতের গোড়া থেকে 8000 ফুট উচ্চতাতেও অনেক সংখ্যায় পাওয়া গিয়েছে। নিকোলাসের দু’টি দল এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একটি দল দীর্ঘদিন ধরে শুধু এভারেস্টের চূড়ার বরফ নিয়ে গবেষণা করছে। আর একটি দল হিমালয় এবং অ্যান্টার্কটিকাকে কেন্দ্র করে গবেষণা চালাচ্ছে। এই দ্বিতীয় দলটি যখন এভারেস্টে থাকা ব্যাকটেরিয়া-ছত্রাক নিয়ে গবেষণা করে, তখন তারা সেই স্ট্যাফাইলোকক্কাস এবং স্ট্রেপ্টোকক্কাস জীবাণুর খোঁজ পান।
বিজ্ঞানীরা উদ্বেগ প্রকাশ করে জানাচ্ছেন, যদি এই জীবাণুগুলির বিনাশ না ঘটানো যায়, তাহলে কয়েক বছরের মধ্য়েই মাউন্ট এভারেস্টে বরফের তুলনায় এদের পরিমাণ বেশি হয়ে যাবে। তখন সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়বেন পর্বতারোহীরা। জলবায়ুর পরিবর্তন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে আরও বড় কোনও প্রলয়ের সাক্ষী হতে হবে মানুষকে।