Alipurduar: লক্ষ্য চব্বিশ, চা বলয়ের ভোট টানতে শাসকদলের এবারের ইস্যু PF
Alipurduar: আর আগামী লোকসভায় এই পিএফকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে চলেছে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ার লোকসভা সহ উত্তরের বেশ কয়েকটি লোকসভা আসনে চা শ্রমিকদের ভোট একটা বড় ভূমিকা পালন করে। তাই এই নির্বাচনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হতে চলেছে চা শ্রমিকদের পিএফ সমস্যা।
আলিপুরদুয়ার: আগামী লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চা শ্রমিকদের ‘প্রফিডেন্ট ফান্ড’ বা ‘পিএফ’কে হাতিয়ার করতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অন্তত তেমনটাই বলছে সেখানকার রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বর্তমানে উত্তরবঙ্গের প্রতিটি চা বাগানে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের তরফে ১৫ দিনের শিবির চলছে। যেখানে চা শ্রমিকরা নিজেদের সমস্যা তৃণমূল নেতৃত্বদের কাছে নথিভুক্ত করছেন। তবে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বদের দাবি, এই শিবিরে প্রায় অধিকাংশ বাগানেই শ্রমিকদের পিএফ নিয়ে একাধিক সমস্যা উঠে এসেছে, যার কারণে বহু চা শ্রমিক অবসরপ্রাপ্ত হওয়া সত্ত্বেও পিএফ থেকে বঞ্চিত।
আর আগামী লোকসভায় এই পিএফকেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে হাতিয়ার করতে চলেছে তৃণমূল। আলিপুরদুয়ার লোকসভা সহ উত্তরের বেশ কয়েকটি লোকসভা আসনে চা শ্রমিকদের ভোট একটা বড় ভূমিকা পালন করে। তাই এই নির্বাচনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তৃণমূলের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হতে চলেছে চা শ্রমিকদের পিএফ সমস্যা। এ বিষয়ে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি সদস্য ইসদর খারিয়া বলেন, “ভোটের সময় পরিযায়ী পাখির মত সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা আসবে, চা বাগানে ভোটও চাইবেন, আর ভোট পার হতেই শ্রমিকদের ভুলে যাবেন এবং তাদের সমস্যা সমাধানে কোনও উদ্যোগ নেবেন না।” তাঁর বক্তব্য, “পিএফ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে তবুও সাংসদ জন বারলা সব জানা সত্ত্বেও নির্বাক দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন।”
অন্যদিকে, জন বারলা বলেন, “বাগান মালিক সঠিক সময়ে শ্রমিকদের পিএফ জমা করেছে না, রাজ্য সরকার সেই মালিকদের চিহ্নিত করুক এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।” তিনি স্পষ্টত বলেন, “ভোটের আগে চাবাগানে এসব ওরা করে। যে মালিকপক্ষ পিএফ জমা করছে না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। গত উনিশের ভোটে আমরা আড়াই লক্ষ ভোট বেশি পেয়ে জয়লাভ করেছি। এবার সেটা ৩ লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে।”
আলিপুরদুয়ার জেলায় ৫ টি চা বাগান বন্ধ। চা বাগানে কাজ নেই। শয়ে শয়ে শ্রমিক কাজের সন্ধানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। বিজেপির চা শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বের অভিযোগ, “পিএফ জমা দিচ্ছে না মালিকপক্ষ। আমরা এফ আই আর করছি। কিন্তু পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। মুখ্যমন্ত্রী তো পুলিশ মন্ত্রী। ফলে শ্রমিকরা কাজের সন্ধানে বাইরে যাচ্ছে। পিএফ এ টাকা কেটে নিলেও টাকা জমা হচ্ছে না।”
তাঁদের বক্তব্য, প্রতিটি বাগানে কোটি কোটি টাকা পিএফ বকেয়া। মালিকপক্ষ কেটে নিলেও জমা করছে না। ফলে শ্রমিকদের মধ্যে সঙ্কট দেখা দিচ্ছে। অবসর নেওয়ার পরও শয়ে শয়ে শ্রমিক পি এফ এর টাকা পাননি। এই নিয়ে চা বাগানে আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটছে। অবসর নিয়ে পিএফ না পেয়ে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন শয়ে শয়ে শ্রমিক। একই চিত্র উত্তরের চা বলয়েও।
তাঁদের বক্তব্য, একদিকে পিএফ এর টাকা জমা পড়ছে না। অন্যদিকে বন্ধ চা বাগান থেকে শয়ে শয়ে শ্রমিক ভিনরাজ্যে কাজের সন্ধানে পাড়ি জমাচ্ছেন। শ্রমিকরা দিল্লি, গুজরাট, রাজস্থান, কেরল যাচ্ছেন কাজের সন্ধানে। ফলে উত্তরের চা শিল্পে দেখা দেবে শ্রমিক সঙ্কট। রাজনৈতিক দলগুলি একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে ভোট ব্যাঙ্ক ঠিক রাখতে মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছে।
পিএফ জমা হচ্ছে না। এ নিয়ে এফ আই আর করেছে বিজেপি। পাশাপাশি তৃণমূল সংকোশ থেকে জলপাইগুড়ি পর্যন্ত পদযাত্রা করে পিএফ অফিস ঘেরাও অভিযানও করেছে। কিন্তু নিট ফল শূন্য। চা মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কে? নাকি ভোটের বৈতরণী পার হতে সরল প্রাণ চা শ্রমিকদের নিয়ে রাজনীতিই করে চলবে রাজনৈতিক দলগুলি।এখন এটাই প্রশ্ন চা বলয়ে। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ সফরে আসছেন। সে দিকে তাকিয়ে শ্রমিকমহল্লা।