Gas Price Rise: গ্যাসের দামে পুড়ছে হাত, সিলিন্ডার-ওভেন বিক্রি করতে চেয়ে পথে চা বাগানের শ্রমিকরা
Gas Price Rise: চা শ্রমিকদের দাবি আর গ্যাস নয়, আগের মত কাঠ-কয়লা এখন তাঁদের ভরসা। রান্না করতে হবে তা দিয়েই। বর্তমানে এদিক-ওদিক থেকে কাঠ জোগাড় করেই চলছে রান্নার তোড়জোড়।
আলিপুরদুয়ার: মূল্যবৃদ্ধির নাগপাশে পুড়ছে আম-আদমির জীবন। বিগত কয়েক মাস ধরে তেল থেকে গ্যাস সবকিছুরই দাম বেড়েছে লাগামহীনভাবে। গত কয়েক মাসে গ্যাসের দামও ঊর্ধমুখীই রয়েছে। দামের তাপে নাজেহাল আম-আদনি। সবথেকে বেশি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন সমাজের নিম্নমধ্যবিত্তরা। কিন্তু, কোনও রাজনৈতিক দল(Political Party) এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করছেনা বলে অভিযোগ। ফলে আরও চাপ বেড়েছে আম-আদমির। সমস্যা বেড়েছে উত্তরবঙ্গের চা-বলয়ের বাসিন্দাদের। দিন দিন গ্যাসের দাম(Gas Price) বেড়ে যাওয়ায় নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থা চা শ্রমিকদের ( tea garden workers) হেঁসেলে। এদিকে পেটে জ্বলছে খিদের আগুন। সঙ্কটে পড়ে ডুয়ার্সের কালচিনি চা বলয়ে রান্নার গ্যাস-সিলেন্ডার-ওভেন বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল চা বলয়ের শ্রমিকরা। এ খবর সামনে আসতেই ব্যাপক চাপান-উতর তৈরি হয়েছে জেলার নাগরিক মহলে।
এদিকে ইতিমধ্যেই রাস্তার ধারে গ্যাস-সিলেন্ডার-ওভেন বিক্রির জন্য নিয়ে বসেছেন শ্রমিকরা। দেওয়া হয়েছে বিক্রির বিজ্ঞাপন। পড়েছে পোস্টার। এ প্রসঙ্গে এক জনৈক শ্রমিক বলেন, “দৈনিক ২৩২ পারিশ্রমিকে আমরা চা বাগানে কাজ করি। আমাদের সামর্থ নেই গ্যাস রিফিলিং করার। প্রতিদিন যেভাবে রান্নার গ্যাস দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিক্রি করার। কেউ যদি কিনতে চান তাহলে বিক্রি করে দেব।” প্রসঙ্গত, গত এক বছরে আট দফায় দাম বেড়েছে রান্নার গ্যাসের । বর্তমানে রাজধানী দিল্লিতে এখন ১৪.২ কেজির ভর্তুকিহীন সিলিন্ডারের দাম ১০৫৩ টাকা। সেখানে কলকাতা, মুম্বই এবং চেন্নাইতে দাম যথাক্রমে ১০৭৯ টাকা, ১০৫২.৫০ টাকা, ১০৬৮.৫০ টাকা। এতেই নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ মানুষের।
চা শ্রমিকদের দাবি আর গ্যাস নয়, আগের মত কাঠ-কয়লা এখন তাঁদের ভরসা। রান্না করতে হবে তা দিয়েই। বর্তমানে এদিক-ওদিক থেকে কাঠ জোগাড় করেই চলছে রান্নার তোড়জোড়। সিলিন্ডার রেখে উনুনেই হাত পাকাচ্ছেন সকলে। এমনকী যে ওভেন দিয়ে সিলিন্ডারের মাধ্যমে আগুনের শিখা বের হতো এখন সেই ওভেন ব্যবহার হচ্ছে উনুন হিসেবে। এ দৃশ্য দেখলে হয়তো কেউ চমকে যাবেন। কিন্তু, শ্রমিকদের দাবি, এ ছাড়া তাঁদের কাছে আর কোনও উপায় নেই। তবে শ্রমিকদেক দুরাবস্থা দিনেদিনে চরমে উঠলেও মুখে কুলুপ এঁটেছে প্রশাসন। সমস্যার সমাধান কবে হবে সে উত্তর নেই কারও কাছেই।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা আক্রমণ শানিয়ে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শান্তনু ভৌমিক বলেন, “আজ কেন্দ্র সরকারের উদাসীনতার ফলে সাধারণ মানুষ তাঁদের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করে দিতে বাধ্য হচ্ছে। কংগ্রেস যখন ক্ষমতায় ছিল তখন গ্যাসের দাম ৪০০ থেকে ৪৫০-র মধ্যে ছিল। এখন তা ১০০০ টাকা হয়ে গিয়েছে।” এ প্রসঙ্গে পাল্টা রাজ্য সরকারকে দোষারোপ করে আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, “এটা দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। তবে পেট্রোপণ্যের লাগাতার দাম বৃদ্ধি বা হ্রাস পুরোটাই কেন্দ্র সরকারের হাতে নেই। দাম কত হবে সেটা কেন্দ্রের পাশাপাশি রাজ্যের উপরেও নির্ভর করে। পেট্রোলের দাম সারা ভারতেই কেন্দ্র কমিয়েছিল। রাজ্যগুলিকেও কমানোর জন্য অনুরোধ করেছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে সেই ডাকে সাড়া দেয়নি।”