Bankura: তখন ছিল পুজো, ফাটিয়ে বাজছিল ডিজে, তার মধ্যেই কাজ হাসিল! শিক্ষকের প্রাসাদপম বাড়িতে আজও লুকিয়ে রহস্য, বনদফতরের মাথাব্যথার কারণ
Bankura: বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের শাসক দলের এমন হাই প্রোফাইল দম্পতির বিরুদ্ধেই উঠেছে মারাত্মক অভিযোগ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে বেআইনি দখলদারি উচ্ছেদ নিয়ে কঠোর অবস্থানের নির্দেশ দিচ্ছেন পুরসভাগুলিকে।
বাঁকুড়া: ছিল বন দফতরের কোয়ার্টার। রাতারাতি সেই কোয়ার্টার দখল করে গুঁড়িয়ে দিয়ে সেখানে তৈরি হয়েছে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা তথা প্রাক্তন সভাধিপতির প্রাসাদোপম বাড়ি। এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করেই এখন বাঁকুড়ার রানিবাঁধের রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। অভিযোগ, পুজোর সময়ে কোয়ার্টার ভাঙা হয়েছে, যাতে আওয়াজ বাইরে না যায়, তাতেই বাজানো হয় ডিজে। অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বন দফতর।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের রানিবাঁধ ব্লকের দাপুটে নেতা হিসাবে পরিচিত গৌর চন্দ্র টুডু। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক গৌর চন্দ্র টুডু বর্তমানে তৃণমূলের ব্লক সহ সভাপতি পদে রয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তৃণমূলের এসটি শাখার জেলার দায়িত্বেও ছিলেন। গৌর চন্দ্র টুডুর স্ত্রী বিভাবতী টুডুও পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক। বাম আমলে দীর্ঘদিন তিনি বাঁকুড়া জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা ছিলেন। জেলা পরিষদে পালা বদলের পর তিনি সহ সভাধিপতির দায়িত্ব পান। বর্তমানে তিনি বাঁকুড়া জেলা পরিষদের নির্বাচিত সদস্য।
বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের শাসক দলের এমন ‘হাই-প্রোফাইল’ দম্পতির বিরুদ্ধেই উঠেছে মারাত্মক অভিযোগ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারেবারে বেআইনি দখলদারি উচ্ছেদ নিয়ে কঠোর অবস্থানের নির্দেশ দিচ্ছেন পুরসভাগুলিকে। বেআইনি দখলদারি তুলতে গিয়ে বন দফতরের আধিকারিকরা রাজ্যের মন্ত্রীর রোষে পড়া নিয়ে যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল, সেই সময় রানিবাঁধের ওই হাই প্রোফাইল তৃণমূল নেতা দম্পতির বিরুদ্ধেই উঠেছে বন দফতরের কোয়ার্টার গুঁড়িয়ে বাড়ি তৈরির অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বছর কয়েক আগে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ওই নেতা দম্পতির নির্দেশে শাবল গাঁইতি দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বন দফতরের একটি কোয়ার্টার। স্থানীয়দের অভিযোগ, কোয়ার্টার ভাঙার শব্দ যাতে এলাকার মানুষের নজর না কাড়ে সেজন্য ওই দিন কোয়ার্টারের সামনে সশব্দে বাজানো হয় ডিজে বক্স। স্থানীয় এক বাসিন্দা হরিসাধন রজক বলেন, “গৌর টুডু কোয়ার্টার ভেঙে বাড়ি বানিয়েছে। আমাদের চোখের সামনে হয়েছে। বিশ্বকর্মা পুজোর সময় ভেঙেছে। ডিজে বাজিয়ে ভেঙেছে। ” বাঁকুড়া ঝিলিমিলি রাজ্য সড়কের পাশেই থাকা ওই কোয়ার্টার ভেঙে বন দফতরের জায়গা দখল করে তৃণমূল নেতা দম্পতি রাতারাতি ওই জায়গায় নিজের প্রাসাদোপম বাড়ি তৈরি করান বলে অভিযোগ। যদিও অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য, “না এখানে তো বন দফতরের জমির কোনও ব্যাপার নেই। আমার কাছে বাড়ির কাগজ রয়েছে। আমি পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়েছি। আমি নিজের জায়গায় বাড়ি করেছি।পঞ্চায়েত অনুমতি দিয়েছে বলেই বাড়ি করেছি। বনদফতর তাহলে কোনও আইনি ব্যবস্থা নিক।”
বিরোধী বামেদের দাবি, বিষয়টি নিয়ে বারেবারে বন দফতরকে জানানো হলেও অজানা কারণে বন দফতর বিষয়টি নিয়ে কোনও ভ্রূক্ষেপ করেনি। দ্রুত ওই তৃণমূল নেতা দম্পতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামীদিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে বামেরা।
রানিবাঁধের তৃণমূল ব্লক সভাপতি চিত্ত মাহাতো বলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি যদি অন্যায় করলে নিশ্চয় বনদফতর ব্যবস্থা নেবে।” কেন্দ্রীয় চক্রের মুখ্য বনপাল এস কুলানডাইভেল বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, দ্রুত এই বিষয়টা খতিয়ে দেখা হবে।”