Bankura: দুষ্কৃতীদের নজরে তৃণমূল নেতার ছেলে? বাঁকুড়ায় গুলি চলার ঘটনায় উঠে আসছে শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দলের তত্ত্ব
Bankura Shootout: এ দিকে, আজ ঘটনাস্থল থেকে একটি ম্যাগাজিন সহ লোডেড বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। রাস্তার ঠিক পাশ থেকে জল কাদায় মাখামাখি অবস্থায় পিস্তলটি উদ্ধার হয়। এলাকাবাসীরই নজরে প্রথমে পড়ে সেটি।
বাঁকুড়া: মঙ্গলবার রাস্তার মধ্যে ছয় যুবককে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল দুই দুষ্কৃতী। রাতভর তাদের তল্লাশি চালিয়ে বুধবার খোঁজ মেলেনি। তারা কারা? কেনই বা গুলি চালালেন সেই সব প্রশ্নের উত্তরই এখন অধরা। তবে পুলিশ অভিযুক্তদের মোবাইল টাওয়ারের লোকেশান ট্র্যাক করে ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। শুধু ওই দুষ্কৃতীরা নয়, পাশাপাশি আহত যুবক সাদ্দাম শেখেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না এই ঘটনার পর থেকে। তবে সাদাম্মের পরিবার দাবি করেছে, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে।
এ দিকে, আজ ঘটনাস্থল থেকে একটি ম্যাগাজিন সহ লোডেড বন্দুক উদ্ধার করে পুলিশ। রাস্তার ঠিক পাশ থেকে জল কাদায় মাখামাখি অবস্থায় পিস্তলটি উদ্ধার হয়। এলাকাবাসীরই নজরে প্রথমে পড়ে সেটি। এরপর বাঁকুড়া সদর থানায় খবর দিলে পুলিশ পৌঁছে পিস্তলটি উদ্ধার করে। গতকাল ঘটনার পর থেকে এলাকায় ব্যাপক খানা তল্লাশি চলে। মেটাল ডিটেক্টার নিয়ে এলাকায় তল্লাশি চলে। কিন্তু তারপরও কেন পিস্তলটি পুলিশের নজর এড়িয়ে এতক্ষণ রাস্তার ধারে পড়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
গতকাল বাঁকুড়ার কেশিয়াকোল এলাকায় দিনে দুপুরে চলন্ত একটি অল্টো গাড়িকে লক্ষ্য করে পিছন থেকে গুলি বৃষ্টি করে বাইকে থাকা দুই আততায়ী। যার জেরে আহত হন গাড়িতে থাকা তিনজন। পরবর্তীতে জানা যায়, আহত তিনজন ছাড়াও ওই গাড়িতে ছিল সাদ্দাম শেখ নামের এক দুষ্কৃতী। গুলির চলার সময় সাদ্দাম গাড়ি থেকে নেমে চম্পট দেয়। অপর দু’জন কোনও ক্রমে গাড়ির সিটের নিচে লুকিয়ে প্রাণে বাঁচেন। পরে ওই দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ।
প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান আততায়ীদের লক্ষ্য ছিল সাদ্দাম শেখ। এই সাদ্দাম আবার কাটোয়া পুরসভার প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর জঙ্গল শেখের ছেলে। বেআইনি অস্ত্র মজুত,খুন,খুনের চেষ্টা, মাদক পাচার সহ ৩৩ টি অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন বাঁকুড়ার জেলে বিচার চলছিল তার। হাইকোর্টের নির্দেশে গতকালই জেল থেকে ছাড়া পায় সাদ্দাম। ছাড়া পাওয়ার পর তাকে বাঁকুড়া থেকে আনতে যায় গলসি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য নৈমিতা শেখের স্বামী জিয়াবুল হক শেখ, আইএনটিটিইউসি-র পূর্ব বর্ধমান জেলার সাধারণ সম্পাদক নুর মহম্মদ শাহ। গুলিতে নুর ও জিয়াবুল ছাড়াও আহত হয়েছেন বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের বাসিন্দা গোবিন্দ মণ্ডল। গতকাল রাতেই আহত স্বামীকে দেখতে বাঁকুড়া মেডিক্যালে যান নৈমিতা শেখ। তিনিও এই ঘটনার জন্য তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলকেই দায়ী করেছেন।
তৃণমূলে নেত্রী নৈমিতা শেখ বলেন, “আমি সাদ্দাম কে চিনি না। কিন্তু ও সারাদিন পার্টি অফিসে বসে থাকে। কালকে কী করতে এসেছিল জানি না। ওর পার্টিগত শত্রু রয়েছে। তৃণমূল-তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে তারা কারা বলতে পারব না।” যদিও, তালডাংরার তৃণমূল বিধায়ক অরুপ চক্রবর্তী অবশ্য এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, দুই দুষ্কৃতীদলের বিবাদের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।