আপাতত মেঝেতেই থাকতে হতে পারে, বেড সঙ্কটে সাফাই গৌতম দেবের

Bed Crisis in Siliguri: মেঝেতে ছড়িয়ে রয়েছে একরত্তিরা। সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রচার হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কিন্তু এরপরও আশার আলো শোনাতে পারেনি তারা। উল্টে সাফাই দিতে দেখা গেল শাসক দলকে।

আপাতত মেঝেতেই থাকতে হতে পারে, বেড সঙ্কটে সাফাই গৌতম দেবের
গৌতম দেব
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 16, 2021 | 4:19 PM

শিলিগুড়ি: শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে জ্বর নিয়ে চিকিৎসাধীন বহু শিশু। হাসপাতালে এখনও অবধি ভরতি ৮৪ জন। তাদের প্রত্যেকের চিকিৎসা চলছে। বেড সমস্যা কিন্তু এখনও মেটেনি। একটি বেডে গাদাগাদি করে রয়েছে দু থেকে তিনজন রোগী। মেঝেতে ছড়িয়ে রয়েছে একরত্তিরা। সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে প্রচার হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কিন্তু এরপরও আশার আলো শোনাতে পারেনি তারা। উল্টে সাফাই দিতে দেখা গেল শাসক দলকে।

আজ শিলিগুড়ির প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান গৌতম দেব বলেন,” একের পর এক শিশুর আক্রান্ত হওয়ার জন্যই এমন অব্যবস্থা। আগামিকাল উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি দেখব। ইতিমধ্যেই আমরা অনেক বেড তৈরি রেখেছি।” এরপর তাঁর বক্তব্য,”আউটব্রেক হলে নানা সমস্যা হয়, বাচ্চাদের বেড নিয়ে এই সমস্যা সাময়িক। আপাতত মেঝেতেই থাকতে হতে পারে” তবে বেডের সমস্যা সমাধানে তিনি যে যথার্থ চেষ্টা করবেন সেই আশ্বাসও দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী।

উল্লেখ্য, এই মুহুর্তে শিলিগুড়ি মেডিক্যাল কলেজ থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছ ৫ শিশু। তবে শিলিগুড়িতে জ্বর অব্যাহত রয়েছে। সকাল থেকেই আউটডোরে ভিড় রয়েছে মা ও শিশুদের। সর্দি, কাশি, প্রবল জ্বর ও বমির উপসর্গ নিয়ে বাচ্চারা আসছে জেলা হাসপাতালে। শিশু বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক সুবীর ভৌমিক অবশ্য আজ এ নিয়ে কিছুই বলতে চাননি।

অন্যদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৪২ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। তবে আশার আলো যে নতুন করে এখনও কোনও শিশুমৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। এদিকে বেড সমস্যা এড়াতে নতুন পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ মৌখিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন গুরুতর অসুস্ত না হলে কাউকেই ভর্তি নেওয়া হবে না। তবে জলপাইগুড়ির ছবি কিন্তু এখনও বদলায়নি।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার সকাল ১০ টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৩২ টি শিশু নতুন করে জ্বর নিয়ে ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে এই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১০৫ জন শিশু। সুস্থ হয়ে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে ৩১ জনকে। কয়েকজনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৯২। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩১ জন শিশু। চিকিত্‍সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ২৬ জনকে। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছে ৫জনকে।

অজানা জ্বরের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে । ৮ মাসের এক শিশুর মৃত্যুর খবর এসেছিল আগেই। এখনও পর্যন্ত এই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৪ শিশুর। গুরুতর অসুস্থ শিশুর সংখ্যা সব মিলিয়ে ৫০-এর পঞ্চাশের কাছাকাছি। সরকারি নথি অনুযায়ী ৫০০-র বেশি শিশু অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। আর এই ঘটনা কার্যত বেআব্রু করে দিয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে। বিশেষত শিশু চিকিৎসার পরিকাঠামোর হতশ্রী চেহারাটা ক্রমশ সামনে আসছে।

শুধু তাই নয়, আক্রান্তের তথ্য ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সূত্র বলছে, জলপাইগুড়ি হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছে তিনশোর বেশি শিশু। মালবাজারে হাসপাতালে ভর্তি ৮০ শিশু। দার্জিলিঙ, কালিম্পঙে তেমনভাবে শিশু আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলেনি। তবে জ্বরে বেআব্রু হচ্ছে উত্তরবঙ্গে শিশু চিকিত্সা। একাধিক জেলায় রয়েছে শয্যার অভাব। ১২-১৪ দিনেও জ্বরের কারণ জানা যায়নি।

আরও পড়ুন: Post Poll Violence: নন্দীগ্রামে মমতার এজেন্ট সুফিয়ান ছাড়াও আরও ২ তৃণমূল নেতাকে তলব সিবিআইয়ের