করোনা মোকাবিলায় দক্ষিণবঙ্গের তিনটি বিধানসভায় চালু হল সেফ হোম

রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায়  রাজ্যে একদিনে করোনায় ১৪৭জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনা সংক্রমিত ১৯ হাজার ১০১জন।

করোনা মোকাবিলায় দক্ষিণবঙ্গের তিনটি বিধানসভায় চালু হল সেফ হোম
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 18, 2021 | 6:21 PM

পশ্চিমবঙ্গ: রাজ্যে বেলাগাম করোনা। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিষেবা। অনিয়ন্ত্রিত মৃত্যু। এ বার করোনা মোকাবিলায় দক্ষিণবঙ্গে, হুগলির তারকেশ্বর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার রাজপুর-সোনারপুরে তৈরি হল সেফহোম (Safe Home)।

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: 

হাসপাতালের পরিষেবা ও কোভিড শয্য়ার অভাব মেটাতে রাজপুর-সোনারপুর বিধানসভা কেন্দ্রে সোনারপুর পুরসভার উদ্য়োগে চালু হল সেফহোম। কামালগাজি নেতাজী স্পোর্টস কমপ্লেক্সের মাঠের পাশে পুরসভার ব্যাঙ্কয়েট হলটিকেই সেফ হোমে রূপান্তরিত করা হয়েছে। মোট ৫০ টি শয্যা নিয়ে তৈরি এই সেফ হোমে থাকতে পারবেন কোভিড আক্রান্তেরা। কোভিড শয্যার পাশাপাশি থাকছে অক্সিজেন পরিষেবা, প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও। ৫০টি শয্যার মধ্যে ২৫ টি পুরুষদের এবং ২৫ টি মহিলাদের জন্য বরাদ্দ। সোনারপুর পুরসভায় ইতিমধ্যে প্রায় ৮ হাজারের কাছাকাছি কোভিডে আক্রান্ত। এতদিন পর্যন্ত কোনো সেফ হোম ছিল না সোনারপুরে। মঙ্গলবার, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোনারপুর উত্তর ও দক্ষিণের দুই বিধায়ক লাভলি  মৈত্র (Lovely Maitra) ও ফিরদৌসী বেগম (Firdausi Begum), মহকুমাশাসক সুমন পোদ্দার,পুরসভার প্রশাসক পল্লব দাস প্রমুখ। এদিন, সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র বলেন, “আপাতত এই একটি সেফ হোম তৈরি করা হয়েছে। তবে এই এলাকায় আরও বড় করে, শয্য়া সংখ্য়া বাড়িয়ে যাতে সেফ হোম তৈরি করা যায়, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।”

হুগলি:

স্বাস্থ্য়কর্মী নিয়োগ করে অবশেষে তারাকেশ্বরে (Tarakeshwar) চালু হল সেফ হোম। কয়েকদিন আগেই ভিমপুর এলাকায় সরকারি আবাসন ‘পথের সাথী ভবন’কে সেফ হোম হিসেবে প্রস্তুত করার কাজ চলছিল। কিন্তু স্বাস্থ্য়কর্মীর অভাবে সেফ হোম চালু করা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে কর্মী নিয়োগ করে চালু হল সেফ হোমটি। ৩০ টি কোভিড শয্য়া-সহ অক্সিজেন ও ওষুধের ব্যবস্থাও করা হয়েছে এই সেফ হোমে (Safe Home)। মঙ্গলবার, সেফ হোমের উদ্বোধন করেন সহকারী জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক, ব্লক স্বাস্থ্য অধিকারীর তাপস কুমার দাস এবং তারাকেশ্বর বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় সহ স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা। এদিন, স্বাস্থ্য়কর্মীদের হাতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়। জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “সমস্ত কোভিড প্রটোকল মেনে এই সেফ হোম প্রস্তুত করা হয়েছে এমনকি অক্সিজেনের ও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।তবে অবস্থা গুরতর হলে কোভিড হাসপাতালে রেফার করা হবে।” অন্য দিকে, তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক রামেন্দু সিংহ রায় কোভিড মোকাবিলায় একটি অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রত্য়ন্ত গ্রামাঞ্চলে, যেখানে অ্যাম্বুলেন্স প্রবেশ করতে পারবে না, সেখানে পাঁচটি টোটোকে অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হবে। টোটোতে থাকছে অক্সিজেনের ব্যবস্থাও। এমনটাই জানানো হয়েছে তারকেশ্বর জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের তরফে।

উত্তরপাড়া রাজা প্যারি মোহন কলেজেও এবার সেফ হোম চালু করতে চলেছে হুগলি জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার, জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে মহকুমা শাসক,স্বাস্থ্য আধিকারিক উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক রাজা প্যারি মোহন কলেজে গিয়ে পরিকাঠামো ঘুরে দেখেন। মোট ২০ টি শয্যার এই সেফ হোমের মধ্যে ১০টি পুরুষ ও ১০টি শয্য়া মহিলাদের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। সেফ হোমে সব সময়ের জন্য থাকবেন চিকিৎসক ও নার্স। থাকছে ওষুধ ও অক্সিজেনের ব্যবস্থাও। ২৪ ঘণ্টা বরাদ্দ থাকবে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবাও। করোনায় মৃদু উপসর্গের রোগীদের এখানে রাখা হবে। এছাড়া যে সকল করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাড়িতে একান্তবাসের সুবিধা নেই, তাঁরাও এই সেফ হোমে থাকতে পারবেন।

উল্লেখ্য, রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায়  রাজ্যে একদিনে করোনায় ১৪৭জনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনা সংক্রমিত ১৯ হাজার ১০১জন। কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনায় একদিনে ৭৪জনের মৃত্যু। শুধু উত্তর ২৪ পরগনাতেই একদিনে সংক্রমিত ৪ হাজার ২২০। কলকাতায় একদিনে ৩ হাজার ৮৯৯জন করোনা আক্রান্ত।

আরও পড়ুন: লকডাউনকে ‘থোড়াই কেয়ার’! ‘হিরোগিরি বন্ধ করুন’, কোথাও ধমক দিলেন বিধায়ক, কোথাও চলল পুলিশি অভিযান