Anubrata Mondal: ‘ছেলের জেতা টিকিট কেড়ে নেয় তৃণমূলের লোকজন’, কেষ্টর লটারি কাণ্ডে বিস্ফোরক নূরের বাবা

Anubrata Mondal: বৃহস্পতিবার লটারির তদন্তে নেমে নূরকে সিবিআই নোটিস পাঠায় বীরভূমের অস্থায়ী ক্যাম্পে হাজিরা দেওয়ার জন্য।

Anubrata Mondal: 'ছেলের জেতা টিকিট কেড়ে নেয় তৃণমূলের লোকজন', কেষ্টর লটারি কাণ্ডে বিস্ফোরক নূরের বাবা
অনুব্রতর লটারিপ্রাপ্তিতে বিস্ফোরক দাবি (গ্রাফিক্স: অভিজিৎ বিশ্বাস)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 24, 2022 | 3:15 PM

বীরভূম: লটারি তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়। কোটি টাকার লটারি টিকিট কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার লটারি তদন্তে স্ক্যানারে থাকা কয়েকজনকে বোলপুরের ক্যাম্পে তলব করে সিবিআই। যাঁর মধ্যে অন্যতম ছিলেন নূর আলি। যিনি নাকি এক কোটি টাকার লটারি জিতেছিলেন। এ দিন ক্যাম্পের বাইরে দাঁড়িয়ে নূর আলির বাবা কটাই শেখ বিস্ফোরক দাবি করে বসেন। তাঁর দাবি, লটারিতে টাকা জেতার আট-দশ দিন পর তাঁর টিকিট কেড়ে নেয় তৃণমূলের লোকজন। তবে, ওই লটারির টাকা অনুব্রত মণ্ডল পেয়েছিলেন কিনা তাঁর জানা নেই। কিন্তু টিকিট কেড়ে নেওয়ার কথা তৃণমূলের ভয়েই পুলিশকে জানাতে সাহস পাননি বলে দাবি করেছেন নূরের বাবা।

লটারির তদন্তে নেমে বৃহস্পতিবার নূরকে বীরভূমের অস্থায়ী ক্যাম্পে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়। হাজিরাও দেন নূর। এ দিন ওই ক্যাম্পের বাইরে দাঁড়িয়ে নূর আলির বাবা কটাই শেখ বলেন, “আমার ছেলে নূর আলি লটারি কেটে এক কোটি টাকা জিতেছিল। এরপর তৃণমূলের কিছু লোকজন আমার ছেলের কাছ থেকে টিকিট কেড়ে নেয়। বলে যে ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তারা টাকা দিয়ে দেবে। কিন্তু তারা দেয়নি। তাই ছেলেকে বললাম যে দাদাদের বলিস, আমরা গরিব মানুষ। টাকা ফেরত দিতে।” তিনি আরও বলেন, “ছোট ছেলেকে হয়ত ৫-৬ লক্ষ টাকা দিয়েছিল। তা ঠিক জানি না। তৃণমূলের ভয়ে এই বিষয়ে আমি পুলিশকে জানাতে পারিনি।”

অন্যদিকে, লটারির মালিক বাপি গঙ্গোপাধ্যায় আরও একধাপ এগিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দেন। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দোকান থেকে টিকিট কেনা হয়েছিল। এক খুচরো বিক্রেতা সেই টিকিট কিনে নাহিনা গ্রামে বিক্রি করে। তাঁর থেকেই টিকিট কিনেছিল এই শেখ নূর আলি। টিকিটটি জেতার পর অনুব্রত মণ্ডল ঘনিষ্ঠ তথা বোলপুর ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (বর্তমানে সিবিআই এর র‍্যাডারে) তাঁর কাছে আসেন নিশ্চিত করার জন্য এই টিকিটেই ১ কোটির লটারি জিতেছেন কি না নূর।’ বাপি গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বিশ্বজিৎ অনুব্রত মণ্ডলের নির্দেশে যোগাযোগ করেন বড় শিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে। সেই পঞ্চায়েত প্রধানের সূত্র ধরেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় নূরের। এরপর ৮৩ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নূরের কাছ থেকে টিকিট কিনে নেন অনুব্রত মণ্ডল। যদিও নূরের পরিবারের দাবি, এক টাকাও তাঁরা পাননি। তবে কটাই শেখের ছোট ছেলেকে ৫-৬ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য, গরু পাচার মামলায় তদন্তে নেমে বোলপুরের লটারির দোকানে হানা দেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই (CBI)। চলতি জানুয়ারিতে রাজ্যের এক জনপ্রিয় ও নামজাদা লটারি সংস্থার ওয়েবসাইটে ১ কোটি টাকার লটারি বিজেতা হিসাবে নাম উঠে আসে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের। যা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। সে সময় লটারি পাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি অনুব্রত।

সূত্রের খবর, এই বিষয়ে তদন্তকারীদের প্রশ্নে কখনওই সরাসরি উত্তর দেননি অনুব্রত। ১০ মাস পরে সেই লটারি-কাণ্ডের তদন্তে নামে সিবিআই। তাদের দাবি গরুপাচার মামলায় লটারির মাধ্যমে কালো টাকা সাদা করার অভিযোগ উঠেছে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে। সিবিআই সূত্রে দাবি, অনুব্রত ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা একের পর এক লটারি জিতেছেন। আর সেই লটারির নাম করেই লেনদেন হয়েছে কোটি কোটি টাকা।