Anubrata Mondal: কেন গলা টিপে ধরেছিলেন অনুব্রত? কেন টুঁ-শব্দটি করতে পারেননি শিবঠাকুর? বললেন নিজেই
Anubrata Mondal: প্রায় দেড় বছর আগে দুবরাজপুরের তৃণমূল দলীয় কার্যালয়ে ঠিক কী ঘটেছিল? বিষয়টা নিজের মুখেই TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন শিবঠাকুর মণ্ডল।
বোলপুর: একুশ সালের ঘটনা। বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ঘটেছিল। যখন কিনা শিবঠাকুর মণ্ডলকে তৃণমূল কার্যালয়ের মধ্যেই গলা টিপে খুনের চেষ্টা করেছিলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অভিযোগ তেমনই। আর এই অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে প্রায় দেড় বছর পর যখন গরু পাচার মামলায় কাঠখড় পুড়িয়ে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সোমবারই শিবঠাকুর মণ্ডল দুবরাজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে তাঁর দাবি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছে দুবরাজপুর থানার পুলিশ। তাঁকে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে দুবরাজপুর আদালত। এবার প্রশ্ন প্রায় দেড় বছর আগে দুবরাজপুরের তৃণমূল দলীয় কার্যালয়ে ঠিক কী ঘটেছিল? বিষয়টা নিজের মুখেই TV9 বাংলাকে জানিয়েছেন শিবঠাকুর মণ্ডল।
বালিগুড়ি পঞ্চায়েতে তৃণমূলের প্রথম পঞ্চায়েত প্রধান ছিলেন শিবঠাকুর মণ্ডল। এলাকায় তাঁর প্রভাব ছিল বলে দাবি তাঁর। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল পঞ্চায়েতের একাংশ সদস্য। সেই সময় অনুব্রত মণ্ডল তাঁকে প্রধান পদ থেকে সরে যেতে বলেন বলে দাবি শিবঠাকুরের। কিছুদিন পর ফের প্রধান হয়েই ওই পঞ্চায়েতের দায়িত্ব নেন তিনি। এরপর ওই পঞ্চেয়ত যখন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়, নির্বাচনের সময়ে তিনি ৫টি টিকিট চেয়েছিলেন। নিজের স্ত্রীকে পঞ্চায়েত প্রধান করতেও চেয়েছিলেন। দল তাঁকে ২টি টিকিট দেয়। তাতে বিরক্ত হন শিবঠাকুর। দল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সে সময় বিজেপির পালে হাওয়া ছিল। দলবদলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনিও। কিন্তু শিবঠাকুরের কথায়, সেই খবরটাই অনুব্রতর কানে যায়।
শিবঠাকুর জানাচ্ছেন, একুশের নির্বাচনের আগেই দুবরাজপুর দলীয় কার্যালয়ে তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন অনুব্রত। সে সময় ঘরে অনুব্রত ছাড়াও একজন নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। অভিযোগ, সে সময়ই অনুব্রত তাঁর গলা টিপে ধরেছিলেন। ভয়ে সে সময় সে অর্থে নাকি চিৎকারও করতে পারেননি শিবঠাকুর। তিনি অনুব্রতকে বলেছিলেন, “আপনি যা বলবেন মেনে নেব, কোনও দল না করেই থেকে যাব।” কার্যালয়ের বাইরে সে সময় অন্যান্য তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা ছিলেন। কিন্তু ভয়ে তিনি সেখান থেকে চুপচাপ ফেরত এসেছিলেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, ঘটনাটা মে সালের। বাইশ সালের ১১ অগস্ট অনুব্রতকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ১৯ ডিসেম্বর দুপুরে তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় দিল্লির বিশেষ আদালত। আর ঘটনাচক্রে এদিনই দুপুরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শিবঠাকুর। তাহলে ভয় কাটাতে গোটা একটা বছর লেগে গেল শিবঠাকুরের? পুরোটাই কি কাকতালীয় নাকি বিরোধীদের কথায় ‘সাজানো’? TV9 বাংলার প্রতিনিধি প্রশ্নটা রেখেছিলেন শিবঠাকুরের কাছে। দৃশ্যত বিরক্তবোধ হন তিনি। বললেন, “ওঁর (অনুব্রতর) নাম শুনলেই সবাই ভয়ে কাঁপে। আপনি (সঞ্চালক) আমার জায়গায় থাকলে কী করতেন? আমার ঘরে দুটো বাচ্চা রয়েছে। আমি কি আমার লাইফ রিস্কে ফেলতাম?” শিবঠাকুর আবার TV9 বাংলাকে সরাসরি বললেন, “আপনি ব্যাকে জেনে নেবেন শিবঠাকুর মণ্ডল কে?” অনেক কিছুই বললেন শিবঠাকুর, কিন্তু এটা বললেন না, ভয় কাটাতে কেন গোটা দেড়টা বছর লাগল তাঁর?