আজও অশান্ত রবীন্দ্র ভূমি? কেন দায় নেবেন না উপাচার্য? বিশ্বভারতী ঘিরে প্রশ্ন শিক্ষকমহলেই
Viswa Bharati: তিন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে ও তার কারণ জানতে চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা।
বোলপুর: তিনদিন পরেও ছাত্রদের হাতে ঘেরাও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। আজও বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাংলোর সামনে ম্যারাপ বেঁধে চলছে ছাত্র বিক্ষোভ। উপরন্তু, আজ উপাচার্যের বিরুদ্ধে পথে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে চলেছে বিশ্বভারতী ছাত্র সংগঠন। তিনদিন পরেও কেন এই অবস্থা? কেন বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এখনও কথা বলছেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ? উপাচার্যই বা কেন চুপ? গোটা ঘটনার নিন্দায় শিক্ষামহলের একাংশ।
তিন পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে ও তার কারণ জানতে চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরা। উপাচার্যের বাড়ির বাইরে আন্দোলনে অনড় পড়ুুুয়ারা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে একাধিক। শিক্ষকমহলের একাংশের প্রশ্ন. কেন এর দায় নিচ্ছেন না উপাচার্য? প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে উপাচার্যকে দায় নিতেই হবে।
শিক্ষাবীদ মীরাতুন নাহার বলেন, “বিশ্বভারতীতে এই ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্খিত। এসব বাদ দিলেও, কেবল যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসাবেই বিচার করা হয়, তাহলেও উপাচার্যের দায়িত্ব অনেক বেশি। কিন্তু সেই উপাচার্যকে ঘিরেই অসন্তোষ অনেক দিনের। নানাভাবে অসন্তোষ, অভিযোগ সামনে আসছে। তিনি পড়ুয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ মানছেন না। একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়েই তাঁকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যাচ্ছে। গোলোযোগ সেখানেই।”
এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি লজ্জিত, মর্মাহত। কোনও উপাচার্য এমনটা করতে পারেন বলে আমার জানা নেই। বিশ্বভারতীকে ধ্বংস করে দেওয়াই কি কাজ? ” বিশ্বভারতীর উপাচার্যের ভূমিকা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন পড়ুয়ার বহিষ্কার ও দুই অধ্যাপকের নিলম্বনকে কেন্দ্র করে উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে তাঁর বাসভবন ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। তিন দিন কেটে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ।
গত শুক্রবার, বিশ্বভারতীর মূল সেন্ট্রাল অফিস ঘেরাও ব্যাপক বিক্ষোভ পড়ুয়াদের। সেই বিক্ষোভ তুলতে গেলে কার্যত হাতাহাতি বাধে বিশ্বভারতী নিরাপত্তাকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। বিশ্বভারতী নিরাপত্তারক্ষীরা প্রথমে ছাত্রদের গায়ে হাত তোলেন বলে অভিযোগ। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বিদুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chackrabarty)-এর সিএস বা আপ্ত সহায়কের গাড়ি দাঁড় করিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান পড়ুয়ারা। তখন তিনি পড়ুয়াদের গাড়ি চাপা দিতে উদ্যত হন বলে বিস্ফোরক অভিযোগ আন্দোলনরত পড়ুয়াদের। এর পর উপাচার্যের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে করেন পড়ুয়ারা।
সেই বিক্ষোভ তুলতে গিয়ে কর্মী ও নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতি বাধে ছাত্রদের। পড়ুয়াদের গাড়ি চাপা দিতে উদ্যত হন বলে অভিযোগ উপাচার্যের আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে। গাড়ি থেকে নেমে তাঁকে পড়ুয়াদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘কেন শুনব তোমাদের কথা?’ পরে অবশ্য পড়ুয়াদের নিয়ে অফিসে গিয়ে কথা বলতে রাজি হন তিনি বলে খবর। অভিযোগ, সেই আপ্ত সহায়কের রাজি হওয়ার পর তিনদিন কেটে গেলেও দেখা মেলেনি কর্তৃপক্ষের। কথা বলতে আসেননি উপাচার্য। সোমবার সকাল থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আরও পড়ুন: বল কুড়োতে গিয়েই জিনিসটা দেখতে পেয়েছিল বাচ্চাগুলো! শরীর দিয়ে বয়ে যায় হিমস্রোত