বল কুড়োতে গিয়েই জিনিসটা দেখতে পেয়েছিল বাচ্চাগুলো! শরীর দিয়ে বয়ে যায় হিমস্রোত
Jagaddal: স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মাঠটিতে আগে লোকের যাতায়াত ছিল। কিন্তু এখন আর যাতায়াত নেই সেভাবে।
উত্তর ২৪ পরগনা: আগে ওখানে প্রায়শই বাচ্চারা খেলাধুলো করত, বড়রা আড্ডা মারতেন! কিন্তু একে করোনা, তার ওপর বর্ষাকালে আগাছা জন্মে ভর্তি সেখানে। কার্যত জঙ্গলের আকার নিয়েছে মাঠ। এদিন সকালে এলাকারই কয়েক জন বাচ্চা সেখানে খেলতে যায়। দীর্ঘদিন বাদেই একপ্রকার বলা চলে! খেলতে গিয়ে বল পড়ে যায় ঝোপের মধ্যে। বল কুড়োতে গিয়ে রীতিমতো চমকে ওঠে বাচ্চাগুলো। প্রথমে বুঝতেই কিছুক্ষণ সময় লেগে যায়। তবে গণ্ডগোলের বিষয় বুঝেই ডেকে আনেন বাড়ির লোককে। দেখা যায়, ঝোপের মধ্যে পড়ে রয়েছে কঙ্কাল। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগর (Shyamnagar) গুড়দহ মাঠে মিলল নরকঙ্কালের হদিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মাঠটিতে আগে লোকের যাতায়াত ছিল। কিন্তু এখন আর যাতায়াত নেই সেভাবে। মাঠ পরিষ্কারই করা হয় না সেভাবে। আগাছা জন্মে জঙ্গল হয়ে গিয়েছে। সোমবার সকালে সেই মাঠেই খেলছিল পাড়ার বাচ্চারা। কঙ্কালটি তারাই প্রথমে দেখতে পায়। পরে ভয় পেয়ে যায়।
বাচ্চা দৌঁড়ে গিয়ে তাদের বাড়িতে খবর দেয়। ততক্ষণে খবর ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে দেখেন, সেটি নরকঙ্কাল। একটি মানুষের মাথার খুলি ও হাড় পড়ে রয়েছে। খবর যায থানায়। পুলিশ গিয়ে কঙ্কাল উদ্ধার করে।
তবে এলাকার মধ্যে এইভাবে নরকঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সঙ্গে ছড়িয়েছে আতঙ্কও। এই ঘটনা এলাকার মধ্যে যে প্রথম। যে মাঠে নরকঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে, তার পাশেই রয়েছে কবরস্থান। তবে সেই এলাকা ঘেরা। এই ভাবে কেন মাঠের ঝোপের মধ্যে কঙ্কাল পড়ে থাকল, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, “শুনলাম এখানে একটা কঙ্কাল পাওয়া গিয়েছে। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। তদন্তকারীরা কঙ্কাল উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছে।” স্থানীয় আরও এক মহিলার কথায়, “মাঠটা দীর্ঘদিন ধরেই পরিত্যক্ত। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয় না। সন্ধ্যার পর মাঠের পিছনের দিকে অনেক দুষ্কর্ম চলে। এখন আর তাই বাচ্চাদেরও আসতে দিই না এই মাঠে। আগে এখানকার লোকজনই মাঠে বসে আড্ডা দিতেন। কিন্তু বাইরের লোকের ভিড় বাড়তে থাকায় এলাকার লোকও আর যাতায়াত করে না। ফলে অন্ধকারে ওই মাঠে কী হয় তা কে জানে!”
অনেকের মনেই সন্দেহ, কেউ খুন করে দেহ এখানে ফেলে রেখে যেতেই পারে। সেটি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে একটি দেহ পচন ধরে কঙ্কালে পরিণত হতে বেশ কিছুদিন সময় লাগে। আর সেই সময়ের মাঝে দুর্গন্ধ কেন পেলেন না এলাকাবাসীরা? নাকি পেলেও তা বিশেষ আমল দেননি তাঁরা?
গোটা বিষয়টিই তদন্ত সাপেক্ষ। পুলিশ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে বয়ান নিচ্ছে। পুলিশ আগে নরকঙ্কাল পরীক্ষা করতে পাঠাচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছেন, নরকঙ্কাল উদ্ধার হয়েছে। সেটি পুরুষ না নারীর, তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। আশেপাশের থানাগুলিতে কোনও মিসিং ডায়েরি হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। স্থানীয় কেউ নিখোঁজ আছে কিনা তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কোথা থেকে এল এই কঙ্কাল, নাকি কেউ খুন করে দেহ ফেলে গিয়েছিল এখানে, তার হদিশ চালাচ্ছে জগদ্দল থানার পুলিশ। আরও পড়ুন: ভর্তি লোকের মাঝেই ব্রাঞ্চে গ্রাহকের ঘৃণ্য আচরণের শিকার ব্যাঙ্ক কর্মী! অনান্য মহিলারাও স্তম্ভিত