‘দাবি পৌঁছে দিয়েছি, এবার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের’, পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবিতে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য জন বার্লার

John Barla: "উত্তরবঙ্গের মানুষের দাবি আলাদা রাজ্যের। জনগণের এই দাবি আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। আগামিদিনে কেন্দ্র সরকার সেই বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আমি সময় হলে সব বলব।''

'দাবি পৌঁছে দিয়েছি, এবার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের', পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবিতে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য জন বার্লার
'রেল-রাজনীতি', ফাইলল চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 20, 2021 | 8:03 PM

কোচবিহার: তাঁর পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। সেই বিতর্কের মুখে কেন্দ্রীয় বিজেপি অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, তারা অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন জন বার্লাকে (John Barla) তাঁরা বোঝাবেন। তবে উত্তরবঙ্গ যে বহুক্ষেত্রে বঞ্চিত বার্লার সেই অভিযোগ বাস্তব বলেও জানান দিলীপ। এ সবের মধ্যে কিছুদিন যাবৎ পৃথক উত্তরবঙ্গ নিয়ে নীরব ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বার্লা। এদিন ফের তাঁর মুখে উঠে এল পৃথক রাজ্য অথবা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি।

শুক্রবার কোচবিহারের বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে এক বৈঠকে হাজির হন জন বার্লা। সেখান থেকে তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের মানুষের দাবি আলাদা রাজ্যের। আমি মানুষের সেই আওয়াজ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। এবার কেন্দ্র সিদ্ধান্ত নেবে। আমি সময় হলে সব বলব।”

কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “উত্তরবঙ্গের মানুষের দাবি আলাদা রাজ্যের। জনগণের এই দাবি আমি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তুলে ধরেছি। আগামিদিনে কেন্দ্র সরকার সেই বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আমি সময় হলে সব বলব।” একইসঙ্গে যোগ করেন, “কেন্দ্রীয় সরকার আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে সবার জন্য সমান ভাবে কাজ করব।”

তবে কিছুদিন আগে যে জন বার্লা রাজ্য ও কেন্দ্রকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছিলেন, এদিন সেই বক্তব্যের কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্য করা গিয়েছে। ফের রাজ্যকে নিশানা করে তিনি অভিযোগ করেন, “রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে বচসা করে রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ করে রেখেছে।”

বার্লা বলেন, “অনেক জায়গায় আমাদের কার্যকর্তারা শহীদ সম্মান যাত্রায় সম্মান জানানোর জন্য মঞ্চ তৈরি করেছিল। সেই মঞ্চগুলোকে পুলিশ ও তৃণমূলের ক্যাডার দিয়ে ভেঙেছে। কিন্তু এভাবে বিজেপিকে রোখা যাবে না। বিজেপি মানুষের হৃদয়ে রয়েছে। সেখান থেকে বের করতে পারবে না। রাজ্য সরকার আসলে ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই এই ভাঙচুর করছে। আগামী দিনে পৌরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে, তাই তারা এসব করছে। কিন্তু বিগত নির্বাচনগুলোয় যেভাবে বিজেপিকে মানুষ আশীর্বাদ করেছে সেভাবেই আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে আশীর্বাদ করবে। এভাবে ভয় দেখিয়ে ভোট পাওয়া যাবে না।”

উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গে বিজেপির বড় জয়ের পর তাঁদের কর্মীদের প্রতিনিয়ত রাজ্যের শাসক দলের কর্মীদের হাতে অত্যাচারিত হচ্ছে, উত্তরবঙ্গের কোনও উন্নয়ন হয়নি, এমনই সব দাবি তুলে পৃথক উত্তরবঙ্গ রাজ্য অথবা কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলের দাবি তোলেন জন বার্লা। এক পা এগিয়ে এও জানিয়ে দেন, পৃথক উত্তরবঙ্গের রাজধানী হবে শিলিগুড়ি। তবে রাজ্যের শাসক দল বার্লার এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে। জেলায় জেলায় বার্লার বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করে তারা। এর মধ্যে অবশ্য কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে পৃথক উত্তরবঙ্গ ইস্যুতে সাময়িক ভাবে চুপ ছিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ। ফের তিনি পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তুলে কেন্দ্রের কোর্টেই বল ঠেললেন।

এদিন বার্লা আরও বলেন, “কেন রাজ্য সরকার একশো দিনের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে? নির্বাচনের পর কেন তারা আমাদের কার্যকর্তাদের হত্যা করছে, ধর্ষণ করছে, বাড়িঘর লুট করছে? নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাইকোর্ট যা রায় দিয়েছে তাকে আমি স্বাগত জানাব।” একইসঙ্গে জিইয়ে রাখলেন তাঁর পুরনো দাবি। এখন দেখার এ নিয়ে রাজ্য বিজেপি ও রাজ্যের শাসক দল কী প্রতিক্রিয়া দেয়। আরও পড়ুন: ‘বাবার বিশাল সম্পত্তি একা ভোগ করবে?’ মেয়ের বেধড়ক মারে রক্তাক্ত বৃদ্ধা মা!