Cooch Behar TMC Clash: ‘এখনও পর্যন্ত খোঁজ নেননি দলের কোনও নেতাই’, আক্ষেপে কোচবিহারে গোষ্ঠীকোন্দলে নিহতের ভাইয়ের

Cooch Behar TMC Murder: কাসেমের পরিবারের রয়েছে দুই স্ত্রী ও এক কন্যা। গতকাল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই কোচবিহারের ফোলিমারি গ্রামে এলাকা দখল নিয়ে গণ্ডগোল চলছিল।

Cooch Behar TMC Clash: 'এখনও পর্যন্ত খোঁজ নেননি দলের কোনও নেতাই', আক্ষেপে কোচবিহারে গোষ্ঠীকোন্দলে নিহতের ভাইয়ের
কোচবিহারে তৃণমূল কর্মী খুনে আক্ষেপ ভাইয়ের (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 11, 2021 | 12:59 PM

কোচবিহার: মৃত্যুর পর পেরিয়েছে ২৪ ঘণ্টা। এখনও কোচবিহারে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নিহত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের খোঁজ নেননি দলের কোনও নেতাই। আক্ষেপের সুর কোচবিহারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে নিহত তৃণমূল কর্মী কাসেম আলির ভাইয়ের।

কাসেমের ভাই আয়নাল শেখ বলেন, “মৃত্যুর পর খোঁজ করেনি দলের কেউ । দাদাকে খুন করেছে চাকু মেরে। পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে দাদার। অঞ্চল দখল নিয়েই সমস্যা চলছে। পুলিশ সই করিয়ে নিয়ে গিয়েছে। দলের কেউ খোঁজই নেননি।”

এ প্রসঙ্গে জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, “কোচবিহারে তৃণমূলের মধ্যে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। মতবিরোধ রয়েছে। মতবিরোধ থেকে মতান্তর থেকে ওখানে কী হয়েছে, তা জানি না। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, ওখানে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তা অত্যন্ত দুঃখের। কেন এমনটা হল, খোঁজ নেব। কেন মতান্তর তৈরি হল, সেটা খতিয়ে দেখব।”

কাসেমের পরিবারের রয়েছে দুই স্ত্রী ও এক কন্যা। গতকাল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াইয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই কোচবিহারের ফোলিমারি গ্রামে এলাকা দখল নিয়ে গণ্ডগোল চলছিল। শুক্রবার তা চরম আকার ধারণ করে। গোষ্ঠীকোন্দলে মৃত্যু হয় এক জনের। আহত হন আরও ১৪ জন।

শুক্রবার আগ্নেয়াস্ত্র, লাঠি উঁচিয়ে চলে হামলা। বেপরোয়া বাইক ভাঙচুর চালায় এক দল যুবক। শনিবার সকালেও তার প্রমাণ মেলে গ্রামের রাস্তার চতুর্দিকে। দেখা যায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে ভাঙা বাইক, লাঠি। গতকাল কী পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা এদিনের ছবিতেই স্পষ্ট।

গ্রামেরই বাসিন্দা ওই মহিলা বলেন, “আমি তখন বাড়ি ছিলাম। সবেমাত্র ফিরেছি। দেখি আমাদের ক্ষেতে কেউ বাইক রেখেছেন। আচমকাই তেড়ে এসে চিত্কার চেঁচামেচি করতে থাকে ওরা। পরে আমি ভয় পেয়ে ঘরে ঢুকে যাই। আমাকে মারবে বলে ঘরের দরজায় দুমদাম মারছে। অনেক চেষ্টা করেছিল দরজা ভাঙার। পারেনি। আরেকটু হলে দরজা ভেঙে যেত। আমি কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম, আমি একা রয়েছি। বাড়িতে কেউ নেই। আমার স্বামী বাড়িতে থাকে না, ছোটো ছেলে নিয়ে। ভয়ে আর বাঁচতে পারছি না। আমি শুধু শুনেছিলাম ওরা চিত্কার করে বলছিল, তারাবালা অঞ্চল দখল করতে যাব। আর কিচ্ছু বুঝতে পারিনি। পুলিশ আসেনি। নদীর ওপারেই ছিল।”

গোষ্ঠীকোন্দলে বারবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি। এদিকে, শুক্রবারই মুর্শিদাবাদে খুন হন এক তৃণমূল নেতা। সেক্ষেত্রেও নেপথ্যে উঠে আসে গোষ্ঠীকোন্দলের তত্ত্বই। তবে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যে এত আগ্নেয়াস্ত্র আসছে কোথা থেকে? পুলিশ প্রশাসনই বা কী করছে? কাদের মদতে এত দুষ্কৃতী দাপট? তা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরাও।

বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, “তৃণমূল তৃণমূলের কর্মীকেই হত্যা করেছে, এর সংখ্যা অনেক বেশি। পুলিশকে তো তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলই সামলাতে ব্যস্ত থাকতে হয়, তাহলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার অনান্য বিষয়টি কখন সামলাবে পুলিশ?”

অন্যদিকে, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “কোন গোষ্ঠী এগিয়ে, কোন গোষ্ঠী পিছিয়ে, সেটাও পুলিশের সাবজেক্ট। লালবাজার আর নবান্ন গোটা রাজ্যের ভাগাভাগির লড়াইয়ে ঢুকে পড়েছে। এর থেকে বিপর্যয় আর কিছু হয় না।”

আরও পড়ুন: Cooch Behar TMC Clash: ‘কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলাম, আমি একাই আছি বাড়িতে, ওরা দরজা আরেকটু হলে ভেঙেই ঢুকছিল…’