Cooch Behar: অনলাইনে আসক্তি, বিশেষ ধরনের মেসেজ পেতেন বন্ধুরা! অধ্যাপকের রহস্যমৃত্যুতে ক্রমেই বাড়ছে জট

Unnatural Death: কোচবিহারের এবিএন কলেজের অস্থায়ী শিক্ষক উত্‍পল তাঁঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে শহরেই বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। আদি বাড়ি দিনহাটার গোসানিমারিতে। মঙ্গলবার থেকেই কারুর কোনও সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না প্রতিবেশীরা।

Cooch Behar: অনলাইনে আসক্তি, বিশেষ ধরনের মেসেজ পেতেন বন্ধুরা! অধ্যাপকের রহস্যমৃত্যুতে ক্রমেই বাড়ছে জট
মৃত অধ্য়াপক ও তাঁর স্ত্রী, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 18, 2021 | 9:42 PM

কোচবিহার: হাত বাঁধা হেডফোনের তার দিয়ে। ঘরের মধ্যে সিলিঙ থেকে ঝুলছে অধ্যাপকের দেহ। পাশের ঘরে নিথর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে স্ত্রী-পুত্রর দেহ! ঘরের মধ্যেই পড়ে রয়েছে দীর্ঘ ১২ পাতার সুইসাইড নোট (Suicide Note)! কোচবিহারের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এ বার সম্পূর্ণ নয়া মোড়। মৃত অধ্যাপক উত্‍পল বর্মণের বিশেষ ধরনের আসক্তির খবর পেলেন তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ১২ পাতার ওই সুইসাইড নোটে উত্‍পল উল্লেখ করেছেন, অনলাইনে তিনি আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু, কীধরনের আসক্তি তা লেখেননি। জেরায়, উত্‍পলের বন্ধুরা জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরে তাঁরা উত্‍পলের ব্যাপারে ফোনে বেশ কিছু মেসেজ পাচ্ছিলেন। সেগুলির মধ্যে বেশ কিছু ‘অশ্লীল’ মেসেজও ছিল। সেই মেসেজগুলি দেখে সে  বিষয়ে তাঁরা উত্‍পলকে জিজ্ঞেসও করেছিলেন। কিন্তু, অধ্যাপক নাকি গোটা বিষয়টি এড়িয়ে যান। এরপরেই নাকি খবর আসে পরিবার-সহ ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন উত্‍পল।

সুইসাইড নোটে ঠিক কী লিখেছেন উত্‍পল? লিখেছেন, “অনলাইনে আসক্ত হয়ে পড়ছিলাম। আমার স্ত্রী-পুত্র আমাকে ছাড়া বাঁচবে না। তাই তাদের মেরে নিজে আত্মহত্যা করছি।” লকডাউনে বেশ কিছুটা আর্থিক চাপ ছিল  বলেও সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেছেন উত্‍পল। তবে, ওই ১২ পাতার সুইসাইড নোটে আর কী কী রয়েছে তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি চলছে জিজ্ঞাসাবাদও।

কোচবিহারের এবিএন কলেজের অস্থায়ী শিক্ষক উত্‍পল তাঁঁর স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে শহরেই বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন। আদি বাড়ি দিনহাটার গোসানিমারিতে। মঙ্গলবার থেকেই কারুর কোনও সাড়াশব্দ পাচ্ছিলেন না প্রতিবেশীরা। এদিকে বাড়িতেই ছিলেন সকলেই। বুধবার সকালেও কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় বাড়ির মালিকের। তিনি খবর দেন প্রতিবেশীদের।

পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে, ঘরের মধ্যে  সিলিঙ থেকে ঝুলছে উত্‍পলের নিথর দেহ। পাশের ঘরেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে তাঁরই স্ত্রী-পুত্রের নিথর দেহ। এদিকে, হেডফোনের তার দিয়ে বাঁধা ছিল উত্‍পলের। যা দেখে মূলত সন্দেহ হয় পুলিশ কর্তাদের। উত্‍পল যদি আত্মঘাতী হয়ে থাকেন তবে কী করে হেডফোন দিয়ে বাঁধা ছিল হাত যা নিয়ে ধন্দ দেখা দেয় তদন্তকারীদের একাংশের।

ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। তিনি গোটা ঘটনা পরিদর্শন করেন। ঘর থেকে উদ্ধার হয় ১২ পাতার একটি সুইসাইড নোট। পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, ওই সুইসাইড নোটে লেখা রয়েছে, প্রথমে স্ত্রীকে খুন করেন উত্‍পল। ছেলে সেই খুনের ঘটনা দেখে নেওয়ায় তাকেও খুন করেন। শেষে নিজে আত্মহত্যা করেন। সুইসাইড নোটে, শেষে সুইসাইড নোটের শেষে লেখেন, “চললাম”। তবে, আদৌ এই সুইসাইড নোট আদৌ উত্‍পলের লেখা কি না, এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মৃতের বেশ কিছু পরিজন জানিয়েছেন, অত্যন্ত ভদ্র স্বভাবের ছিলেন উত্‍পল। সকলের সঙ্গেই সদ্ভাব রেখে চলতেন। কারোর সঙ্গেই কোনও বিরোধ ছিল না। তবে, কিছুদিন যাবত্‍ বেশ কিছু অ্যাপস থেকে টাকা নিয়েছিলেন উত্‍পল। সেইসব অ্যাপ থেকে টাকা লেনদেনের খবর জানতেন মৃতের আত্মীয়রাও। কোনওকারণে অতিরিক্ত ঋণের জন্য এই চূড়ান্ত পদক্ষেপ কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

দেখুন ভিডিয়ো:

আরও পড়ুন: Child Death: চাই ১২০০ টাকা! দু’ঘণ্টা ধরে সদ্যোজাতকে কোলে চেপে রাখলেন বৃহন্নলা, ক্রমশ নেতিয়ে পড়ল ছোট্ট দেহটা…