Balurghat: সাড়ে ১৭ কোটির ইঞ্জেকশন দিলেই ন’মাসের খুদে পারবে উপুড় হতে, দাঁড়াতে! সাহায্যের আবেদন সেনা পরিবারের

Balurghat: সেটি বিদেশ থেকে আনতে হয়। যার দাম প্রায় সাড়ে সতেরো কোটি টাকা। যা জানবার পরেই কার্যত ভেঙে পড়েছেন অসহায় ওই শিশুর পরিবার। কিন্ত কোনওভাবেই হাল ছাড়তে নারাজ সেনাকর্মীর পরিবার।

Balurghat: সাড়ে ১৭ কোটির ইঞ্জেকশন দিলেই ন'মাসের খুদে পারবে উপুড় হতে, দাঁড়াতে! সাহায্যের আবেদন সেনা পরিবারের
বিরল রোগে আক্রান্ত শিশুImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 25, 2023 | 1:16 PM

বালুরঘাট: ন’মাস বয়সী একা শিশুর শরীরে বাসা বেঁধেছে বিরল অসুখ ৷ যার চিকিৎসা এদেশে সেভাবে নেই বললেই চলে ৷ তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিদেশ থেকে আমদানি করা একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া গেলে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে বালুরঘাটের সপ্তর্ষি৷ আর এই ইঞ্জেকশনের জন্য প্রয়োজন সাড়ে ১৭ কোটি টাকা। যার জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন গোটা পরিবার। তবে এত তাড়াতাড়ি হাল ছাড়তে চাইছেন না সেনাকর্মীর পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন গোটা পরিবার৷ এমনকি সামাজিক মাধ্যমে ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্য প্রার্থনা করছে পরিবার।

আগামী দিনে প্রশাসন ও বিধায়ক, সাংসদের কাছেও সাহায্যের আবেদন জানাবেন বলে সপ্তর্ষির পরিবার জানিয়েছেন। বালুরঘাট পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলপুর এলাকার বাসিন্দা পেশায় সেনাকর্মী ধ্রুব মণ্ডল৷ স্ত্রী সঙ্গীতা। তাঁদের একমাত্র ছেলে সপ্তর্ষি মণ্ডল। জন্মের নয় মাস পরেও আর পাঁচটা শিশুর মত সুস্থ ও স্বাভাবিক নয় সপ্তর্ষি। এই বয়সে অন্য শিশুরা নিজে বসতে পারে, হামা দেয়, উপুড় হতে পারে। কিন্তু বিরল রোগে আক্রান্ত হওয়ার কারণে সপ্তর্ষি এই সব কিছুই করতে পারে না।

বিষয়টি কয়েক মাস আগে নজরে আসে পরিবারে। ভেবেছিলেন ছেলে ছোট কিছুদিন পর হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু কোন কিছুই স্বাভাবিক হচ্ছে না। এরপর চলতি বছরের এপ্রিল মাসে বালুরঘাটের শিশু বিশেষজ্ঞর কাছে যান বাবা-মা। যেখানে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে শিশুর জিনগত সমীক্ষা করান তার পরিবারের লোকেরা। যেখানেই সামনে আসে স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি রোগের যাবতীয় লক্ষণ।

বিরলতম এই রোগের কথা শুনতেই কিছুটা আঁতকে ওঠেন ভারতীয় সেনা বিভাগে কর্মরত তথা শিশুর বাবা ধ্রুব মণ্ডল। ঘটনা সঠিক কিনা তা জানতে এরপরেই প্রথমে কলকাতা এবং তারপর দিল্লির এইমসে নিয়ে যাওয়া হয় সপ্তর্ষিকে। কিন্তু সেখানেও পরীক্ষা নিরীক্ষার পর একই রোগের কথা জানান চিকিৎসকরা।

শুধু তাই নয়, দু থেকে আড়াই বছরের মধ্যে এর সঠিক চিকিৎসা না হলে সপ্তর্ষিকে আর বাঁচানোও সম্ভব না এমনটাও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রফি নামের এই মারণরোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এই রোগের চিকিৎসায় জন্য একটিমাত্র ইনজেকশন রয়েছে।

সেটি বিদেশ থেকে আনতে হয়। যার দাম প্রায় সাড়ে সতেরো কোটি টাকা। যা জানবার পরেই কার্যত ভেঙে পড়েছেন অসহায় ওই শিশুর পরিবার। কিন্ত কোনওভাবেই হাল ছাড়তে নারাজ সেনাকর্মীর পরিবার।

এবিষয়ে শিশুর মা সঙ্গীতা জানান, বেশ কয়েক মাস থেকে লক্ষ্য করছিলাম ছেলের ভেতর ভেতর কোনও সমস্যা হচ্ছে। তা না হলে এই বয়সে অন্য শিশুরা একা একা অনেক কিছু করতে পারে৷ যা আমার ছেলে পারত না। এরপর বালুরঘাটে ডাক্তার দেখিয়েও কিছু ধরা পরেছিল না। সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। এরপর চিকিৎসক কিছু জিনগত পরীক্ষা করতে দেয়। তখনই ছেলের রোগের বিষয় সামনে আসে। এরপর কলকাতা ও দিল্লিতে গিয়েও একই রোগ ধরা পড়ে৷ এই রোগের চিকিৎসা সেভাবে নেই। একটি ইঞ্জেকশন দিলে পরে ছেলে সুস্থ হয়ে উঠবে। কিন্তু তার দাম প্রায় সাড়ে সতেরো কোটি টাকা। এই টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।

এবিষয়ে প্রতিবেশী উদয় শঙ্কর সরকার জানালেন, আড়াই বছরের মধ্যে এই ইঞ্জেকশন দিতে হয়। তা না হলে কিছু আর সম্ভব নয়। সবাইকে পাশে পাওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।