Suicide: মেয়ের উচ্চশিক্ষায় বাধ সাধল আর্থিক অনটন, ‘কন্যাশ্রী’র রাজ্যে আত্মঘাতী বাবা

Father Commits Suicide: মেয়ের স্বপ্নপূরণ করবেন কীভাবে, এই চিন্তা তাঁকে কুরেকুরে খাচ্ছিল। আর সেই মানসিক অবসাদে মেয়ের নার্সিংয়ে সিলেকশনের আগের রাতে আত্মহত্যা করলেন বাবা।

Suicide: মেয়ের উচ্চশিক্ষায় বাধ সাধল আর্থিক অনটন, 'কন্যাশ্রী'র রাজ্যে আত্মঘাতী বাবা
আত্মহত্যা পরিবারের (প্রতীকী চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 17, 2021 | 9:11 PM

বালুরঘাট: মেয়ে ছোট থেকেই পড়াশোনায় খুব ভাল। বড় হয়ে নার্স হওয়ার স্বপ্ন তার। সেই মতো প্রস্তুতিও নিচ্ছিল। উচ্চমাধমিক পরীক্ষা দেওয়ার পরেই নার্সিংয়ের জন্য আবেদন করেছিল। ১৮ অক্টোবরই সেই সিলেকশন। স্বভাবতই খুশির খবর। কিন্তু মেয়ের পড়ার খরচ জোগাবেন কেমন? নার্সিং পড়তে তো প্রচুর খরচ। যদি সরকারি কলেজে না হয়! সে সব নিয়ে ধারনা ছিল না বাবার। কিন্তু তা জানার পর, মেয়ের স্বপ্নপূরণ করবেন কীভাবে, এই চিন্তা তাঁকে কুরেকুরে খাচ্ছিল। আর সেই মানসিক অবসাদে মেয়ের নার্সিংয়ে সিলেকশনের আগের রাতে আত্মহত্যা করলেন বাবা। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিকাপুর এলাকায়।

শনিবার রাতে বাড়িতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন রতন চৌধুরী (৪০)। জানা গিয়েছে, পেশায় মুদি ব্যবসায়ী তিনি। তার সঙ্গে সংসার সচল রাখতে ইলেকট্রিকেরও টুকটাকি কাজ করতেন। কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। মেয়ের স্বপ্নপূরণ করতে পারবেন না, এই ‘অপরাধবোধ’-এ আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন তিনি। রবিবার সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন পরিবারের লোকজন। খবর দেওয়া হয় বালুরঘাট থানার পুলিশকে। পরে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।

কালিকাপুরের বাসিন্দা রতন চৌধুরীর স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে আছেন। এছাড়াও বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছেন। কালিকাপুরে তাঁদের বাড়ি থাকলেও আরেকটি বাড়ি রয়েছে বালুরঘাট শহরের খাদিমপুর এলাকায়। ছেলেমেয়েকে নিয়ে কোনওরকমে সংসার চালাতেন। মেয়ে ছোট থেকেই পড়াশোনায় ভাল। মাধ্যমিকে ভাল রেজাল্ট করার পরও বাবার কাছে সে জানায় নার্স হবে। খুশি হয়েছিলেন বাবা। স্বপ্ন দেখতেন মেয়ে বড় হয় হাল ধরবে সংসারের। উচ্চ মাধ্যমিকেও ভাল রেজাল্ট করে মেয়ে।

সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। তার মধ্যেই রতনবাবু জানতে পারলেন নার্সিং পড়তে গেলে খরচ কেমন হবে। এদিকে তাঁর যা আর্থিক অবস্থা তা দিয়ে মেয়েকে কীভানে নার্স করবেন এ নিয়ে ভাবনায় পড়েন বাবা। মেয়ের উচ্চশিক্ষায় বাধ সেধেছে আর্থিক অনটন। সরকারি হাসপাতালে সুযোগ না পেলে বেসরকারি হাসপাতালে নার্সিং পড়ার খরচ তো অনেক বেশি। সেই টাকার যোগান কোথা থেকে করবেন, তা নিয়েই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন প্রৌঢ়। কোনওকিছু উপায় না খুঁজে পেয়ে আত্মঘাতী হলেন তিনি।

মৃতের আত্মীয় সনাতন চৌধুরীর কথায়, “রতনের মেয়ে নার্সিংয়ের জন্য আবেদন করেছিল। আগামী কাল সিলেকশন ছিল মেয়ের। নার্সিং পড়ার টাকা কোথা থেকে জোগাড় করবেন তা নিয়ে চিন্তায় ছিল ও। আর এই নিয়েই মানসিক অবসাদে ভুগছিল। যার জেরে গতকাল গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল। কিন্তু আত্মহত্যা তো কোনও সমাধান নয়। অনেকে এই বিষয়গুলি মানিয়ে চলে। রতন মানাতে পারল না!”

আরও পড়ুন: Suicide Attempt: সংসারে নিত্যদিন অশান্তি, ৩ সন্তানকে নিয়ে নদীতে ঝাঁপ মহিলার!