History of Balurghat: বখতিয়ার খিলজির ভয়, এখনও মাটিতেই রাত কাটান বালুরঘাটের এই গ্রামের মানুষ

Ikhtiyar Uddin Bakhtiyar Khilji: দক্ষিণ দিনাজপুরের সদর শহর বালুরঘাটের নিকটবর্তী স্থান গঙ্গারামপুর। ঐতিহাসিক নাম, দেবকোট। আর সেখানেই চির নিদ্রায় বাংলার ইতিহাসের এক অত্যাচারী শাসক। আর এখনও তাঁর ভয়েই খাটে শুয়ে ঘুমান না দেবকোটের অনেক গ্রামের মানুষ।

History of Balurghat: বখতিয়ার খিলজির ভয়, এখনও মাটিতেই রাত কাটান বালুরঘাটের এই গ্রামের মানুষ
Follow Us:
| Updated on: Feb 07, 2024 | 9:47 PM

বালুরঘাট থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গঙ্গারামপুরের পীরপাল গ্রাম। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান নির্বিশেষে পীরপালের সকলেই নাকি মাটিতে শুয়ে ঘুমায়। কারণ? সেই গ্রামেই নাকি চিরনিদ্রায় শায়িত রয়েছেন বাংলার এক অত্যাচারী শাসক ইখতিয়ার উদ্দিন বখতিয়ার খিলজি। গজনির সুলতান মুহাম্মদ ঘোরীর এক বিশ্বস্ত সেনাপতি ছিলেন তিনি। কথিত আছে, সেই খিলজি ১২০৩ সালে মাত্র ১৭ জন সেনা নিয়ে দখল করেন সেন রাজাদের শাসনে থাকা গৌড়। সে সময় বাংলার সিংহাসনে ছিলেন সেন বংশের শেষ রাজা, লক্ষ্মণ সেন। শোনা যায়, বখতিয়ার খিলজির আসার খবর পেয়ে তিনি রাজধানী গৌড় বা লক্ষ্মণাবতী ছেড়ে পূর্ববঙ্গে পালিয়ে যান। ফলে, একেবারে বাধাহীন অবস্থায় বাংলার রাজধানী দখল করেন খিলজি।

বাংলা দখল করার পর ১২০৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তিব্বত দখল করার মনস্কামনা নিয়ে দেবকোট থেকে রওনা দেন। তৎকালীন দেবকোট শহর বর্তমান দক্ষিণ দিনাজপুরের সদর শহর বালুরঘাটের নিকটবর্তী গঙ্গারামপুরে অবস্থিত, বর্তমান নাম পীরপাল। বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে রওনা হয়েও তিব্বতের চুম্বি ভ্যালিতে তিব্বতী গেরিলা বাহিনীর কাছে খিলজি পর্যুদস্ত হন ও মাত্র ১০০ জনের মতো জীবিত সেনা সহ দেবকোটে ফিরে আসেন। দেবকোটে ফিরে আসার পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন ও অসুস্থ অবস্থাতেই তাঁরই সেনাপতি আলি মর্দানের হাতে তিনি নিহত হন। তাঁকে তৎকালীন দেবকোটেই সমাধিস্থ করা হয়। যদিও, বর্তমানে তাঁর এই সমাধিস্থল পীরপাল দরগা হিসাবে পরিচিত। আর আরও অবাক করে, হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান নির্বিশেষে এই এলাকার সব মানুষই মাটিতে শুয়ে ঘুমায়।

বাংলা দখল করার পর বখতিয়ার খিলজি বাংলার তৎকালীন হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষের উপর অত্যাচার করেন ও অনেক মানুষকে নিজের দাস হিসাবে বন্দি করেন। পীরপাল দরগার পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের কথায়, সেই সময় দাসরা খাট বা খাটের মতো কোনও আসবাবে ঘুমালে তাদের পাহারাদাররা তাদের নাকি লাথি মেরে ফেলে দিত বা অনেকক্ষেত্রে দাসদের মেরেও ফেলা হত। পরবর্তীতে খিলজির মৃত্যুর পর থেকে কোনও এক শ্রুতি ও অজানা ভয়ের বশবর্তী হয়ে হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান নির্বিশেষে দেবকোটের বেশ কিছু গ্রামের মানুষ কিন্তু এখনও মাটিতে শুয়েই ঘুমান। এক গ্রামবাসীর কথায়, “আমরা এখনও কাঠের খাট বা তক্তাপোষ ব্যবহার করতে ভয় পাই। অনেকে বলে খাটে শুলে নাকি রাতে কেউ খাট থেকে ঠেলে ফেলে দেয়”। আর এক গ্রামবাসী আবার বলেন, “খাটে যাঁরাই শোন, কোনও না কোনও ভাবে তাঁরা আর বেঁচে থাকেন না। তাই আমরা মাটির উঁচু বেদি বা ইট দিয়ে বেদি তৈরি করে সেখানে শুই”। যদিও, এই ঘটনা আদৌ সত্য কিনা, তা যাচাই করেনি TV9 বাংলা।