TET 2014: টেটের ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন এই ওষুধ ব্যবসায়ী, ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর EXCLUSIVE টিভি নাইন বাংলায়

Siliguri: নিত্যানন্দ পালের দাবি, "অ্যাপ্টিটিউড টেস্টের বালাই ছিল না। আমাদের কাছে সে পরিকাঠামো দেওয়াই হয়নি। এই টেস্টের জন্য তো চক, ডাস্টার, ব্ল্যাক বোর্ড লাগে। সেসবও ছিল না।"

TET 2014: টেটের ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন এই ওষুধ ব্যবসায়ী, ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর EXCLUSIVE টিভি নাইন বাংলায়
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিত্যানন্দ পাল।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 13, 2023 | 9:00 PM

শিলিগুড়ি: ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক হাইকোর্টের (Calcutta High Court) এক রায়ে চাকরিহারা। মূলত যে দু’টি কারণে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ এই ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি গিয়েছে, তার একটি অপ্রশিক্ষণ। দ্বিতীয়, অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট না হওয়া। যদিও এ নিয়ে ইতিমধ্যেই চাকরিহারাদের কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। তবে সেই ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকা এক স্বেচ্ছাবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নিত্যানন্দ পাল টিভি নাইন বাংলাকে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে জানালেন, আদালতের রায় একেবারেই ঠিক পথে এগিয়েছে। তাঁর দাবি, অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়নি, প্রার্থীদের ছিল না ডিএলএডও। একলপ্তে ৩৬ হাজার চাকরি বিসর্জন। নানা বেনিয়মে ঘেরা টেট মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। প্রশিক্ষিত না হওয়া, আপ্টিটিউড টেস্ট না নেওয়া-সহ নানাবিধ অভিযোগে এই চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় আদালত।

অভিযোগ, সেই টেটেই শিলিগুড়িতে প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নিতে শিক্ষকদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, বর্তমানে ওষুধ ব্যবসায়ীকে বোর্ডে নিয়েছিলেন মানিক ভট্টাচার্য। নিত্যানন্দ পালের দাবি, “অ্যাপ্টিটিউড টেস্টের বালাই ছিল না। আমাদের কাছে সে পরিকাঠামো দেওয়াই হয়নি। এই টেস্টের জন্য তো চক, ডাস্টার, ব্ল্যাক বোর্ড লাগে। সেসবও ছিল না।” একইসঙ্গে নিত্যানন্দ বলেন, “আমরা জানতাম প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ থাকা আবশ্যক। কিন্তু যাঁরা ইন্টারভিউ দিতে এসেছিলেন তাঁদের কারও প্রশিক্ষণ ছিল না।”

নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলতে দিয়ে নিত্যানন্দ পাল বলেন, “আমি ‘৮৬ সালের অগস্ট মাসে হাইস্কুলের শিক্ষক হিসাবে যোগ দিই। হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলাম। ২০১২ সালে স্বেচ্ছাবসর নিই। ২৬ বছর চাকরি করি আমি। আমি যেহেতু একজন পুরনো হাইস্কুল শিক্ষক তাই আমাকে ইন্টারভিউ বোর্ডে রাখা হয়। তবে সে সময় আমি পুরোদমে ওষুধের ব্যবসা করতাম না। একজনের সঙ্গে পার্টনারশিপে সবে যুক্ত হতে যাচ্ছি। স্বেচ্ছাবসর নিয়েছি, বসে থেকে কী করব? আমি তৃণমূল করতাম সে সময়। তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলাম। দার্জিলিং জেলায় তৃণমূলের সংগঠনটা দেখতাম। ইন্টারভিউ গতানুগতিকভাবেই হয়। আমার টেবিলে ৬০-৬২ জন প্রার্থী ছিলেন। একেকজনের পিছনে ৫-৬ মিনিট সময় লাগত। কোনও অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট হয়নি। পরিকাঠামোও ছিল না। আমাদের বলা হয় ইন্টারভিউ নিতে হবে।”

নিত্যানন্দবাবুর কথায়, ইন্টারভিউ নেওয়ার পর তাঁদের নম্বরশিট মানিক ভট্টাচার্য নিয়ে যান। যেদিন ইন্টারভিউ হয়, মানিক জেলাতেই ছিলেন বলে দাবি নিত্যানন্দ পালের। বলেন, “মানিক ভট্টাচার্য আসেন ইন্টারভিউ শেষ হওয়ার পর। উনি শিটগুলি নিয়ে যান। কেন উনি নিলেন তা জানি না।” কারণ এই শিট প্রাইমারি কাউন্সিলে জমা দেওয়ার কথা। পরবর্তীকালে দেখেন, যা নম্বর তাঁরা দিয়েছিলেন, আর ফল প্রকাশের পর যে নম্বর দেওয়া হয়েছে তা আলাদা।

নিত্যানন্দ পাল বলেন, “হয়ত বা দরাদরি করতে বা ভাল ছেলেদের পিছিয়ে দিয়ে অযোগ্যদের চাকরি দিতেই এসব হয়েছিল।” তিনি জানান, ইডি কিংবা সিবিআই বা আদালত ডাকলে সেখানেও গিয়ে সবটা জানাবেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, মামলা ঠিক পথেই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তবে ইন্টারভিউয়ে অংশ নেওয়া তৃণমূল ঘনিষ্ট শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের দাবি, “সব হয়েছিল নিয়ম মেনেই। হয়েছিল অ্যাপ্টিটিউড টেস্টও। তবে প্রার্থীদের অনেকের প্রশিক্ষণ ছিল না।” এর বেশি কিছু বলতে চাননি তিনি। তবে আদালতের রায়ে ভরসা আছে জানিয়েছেন তিনিও।