Kali Puja 2022: এই তিন গ্রামে টাঙানো থাকে না মা কালীর ছবি, হয় না পুজোও, পিছনে রয়েছে রোমহর্ষক কাহিনি

Kali Puja 2022: একবার অসুস্থ ঠাকুর রামকৃষ্ণকে দেখতে কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বরে যাচ্ছিলেন সারদা মা।

Kali Puja 2022: এই তিন গ্রামে টাঙানো থাকে না মা কালীর ছবি, হয় না পুজোও, পিছনে রয়েছে রোমহর্ষক কাহিনি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 22, 2022 | 1:02 PM

তারকেশ্বর: এক সময় নাকি মা সারদার রক্তচক্ষু রূপের দর্শন পেয়েছিল রঘু ও গগন ডাকাত। প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হওয়া সিঙ্গুরের ডাকাত কালীর মন্দির ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস। বর্তমানে হুগলির বৈদ্যবাটী-তারকেশ্বর রোডের পাশে সিঙ্গুরের পুরুসোত্তমপুর এলাকায় বর্তমানে রয়েছে ডাকাত কালীর এই মন্দির।

ইতিহাস বলছে

একবার অসুস্থ ঠাকুর রামকৃষ্ণকে দেখতে কামারপুকুর থেকে দক্ষিণেশ্বরে যাচ্ছিলেন সারদা মা। সেই সময় সারদার পথ আটকায় রঘু ডাকাত ও গগন ডাকাত। উদ্দেশ্য ছিল ডাকাতির। তবে নিজেদের ভুল বুঝতে পারে ডাকাতদল। মায়ের কাছে ক্ষমা চান তাঁরা।

এ দিকে সন্ধ্যা নামায় সেই রাতে ডাকাতদের আস্তানায় মা সারদাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় ডাকাতরা। রাত্রিবেলা খেতে দেওয়া হয় চাল-কড়াই ভাজা। পরের দিন সকালে ডাকাতরা মা সারদাকে দক্ষিণেশ্বরে পৌঁছে দেন। ডাকাতিও ছেড়ে দেয় গগন ডাকাত ও রঘু ডাকাতের দল। তারপর থেকেই কালীপুজোর দিনে মায়ের প্রথম নৈবেদ্য প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয় চাল-কড়াই ভাজা। যা আজও মেনে চলা হয়। এছাড়াও লুচি ও ফল দেওয়া হয় পুজোর প্রসাদ হিসাবে।

বহু বছরের প্রচলিত প্রথা মেনে কালী পুজোর দিন চার প্রহরে চার বার পুজো হয়। হয় ছাগ বলিও। আরও কথিত আছে, আগে এই এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া সরস্বতী নদীর পাশে জনমানব শূন্য জঙ্গলে ডাকাতরা মাটির কুঁড়ে ঘর বানিয়ে ঘট পুজো করে ডাকাতি করতে যেত সেই সময় নাকি নরবলিও দিত ডাকাতরা।

পরে বর্ধমানের রাজার দান করা জমিতে সিঙ্গুরের চালকেবাটি গ্রামের মোড়লরা এই মন্দির তৈরি করে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। কালী পুজোর দিন মোড়লদের পুজোর পর অন্য ভক্তদের পুজো নেওয়া হয়। জানা যায়, পুরসোত্তমপুর গ্রামে এই ডাকাত কালীর মন্দির থাকার কারণে মল্লিকপুর, জামিনবেড়িয়া ও পুরসোত্তমপুর এই তিন গ্রামের কোনও বাড়িতে বা বারোয়ারীতে হয় না কালী পুজা। এমন কী কোনও বাড়ির দেওয়ালেও টাঙানো থাকেনা মা কালীর ছবি। কালী দেবী এতটাই জাগ্রত যে এই প্রতিমার পুজো ছাড়া অন্য কালী প্রতিমার পুজো করতে সাহস পায় না এলাকার মানুষজন।

এছাড়াও তিন গ্রামের যে কোনও শুভ কাজ করতে হলে প্রথমেই এই মায়ের মন্দিরে পুজো দিয়েই শুরু করেন শুভ কাজ। বহু কাল ধরে প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী বছরে একবার কালীপুজোর দিন শুদ্রদের’ আনা গঙ্গা জল মন্দিরের দরজা বন্ধ করে পাল্টানো হয় মায়ের ঘটের জলয তবে সেই সময় মন্দিরের ভিতরে মহিলাদের প্রবেশ একেবারেই নিষিদ্ধ। যা আজও প্রচলিত।