Santragachi Jheel: খামখেয়ালি শীতেও রেকর্ড পরিযায়ী পাখির ভিড় সাঁতরাগাছি ঝিলে
Migratory Bird: প্রকৃতি সংসদের পক্ষ থেকে প্রসেনজিৎ দাঁ জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবারে পাখির সংখ্যা বেশি হলেও প্রজাতির সংখ্যা কমেছে।
হাওড়া: প্রথম থেকেই এবার খামখেয়ালি শীত। নভেম্বরের শেষের দিক, ডিসেম্বরের শুরুতে একেবারে হাড় কাঁপিয়ে ঠান্ডা পড়ে গেল বঙ্গে। কনকনে হাওয়া, শীতের রেশ টের পেল গোটা রাজ্য। এমনকী কলকাতাতেও ভাল শীত। এদিকে ডিসেম্বরের শেষের দিক থেকে হঠাৎই উধাও হয়ে গেল ঠান্ডা। জানুয়ারির প্রথম দিকে তো আবার ফাল্গুনের আমেজও টের পাওয়া গিয়েছে। মাঝে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, বৃষ্টি, ক’দিন আবার দিনেরবেলা রীতিমতো গরম লেগেছে। শীত তার খেয়ালে চললেও এবার কিন্তু সাঁতরাগাছি ঝিলে শীতের পরিযায়ী পাখিদের রেকর্ড সংখ্যক আগমণ লক্ষ্য করা গিয়েছে। প্রতি বছর সাঁতরাগাছি ঝিলে (Santragachi Jheel) কত পাখি এল তার হিসাব রাখা হয়। এবার সে হিসাব কষতে গিয়ে দারুণ খুশি পাখিপ্রেমীরা।
প্রত্যেক বছরের মতো এবারও সাঁতরাগাছি ঝিলে পাখি গোনার কাজ শুরু হয়। তাতেই জানা গিয়েছে এ বছর পাখিদের সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। প্রচুর পরিযায়ী ভিড় জমিয়েছে শীতের সাঁতরাগাছি ঝিলে। যদিও পাখিদের প্রজাতির সংখ্যা অনেক কমেছে বলেই জানিয়েছেন পাখির গোনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত।
ফি বছর শীত পড়তেই হাজার হাজার পরিযায়ী পাখি ভিড় জমায় সাঁতরাগাছি স্টেশন লাগোয়া সাঁতরাগাছি ঝিলে। সাধারণত অক্টোবর মাসের শেষ দিক থেকে হিমালয় পেরিয়ে অথবা পাদদেশ অঞ্চল থেকে পরিযায়ী পাখিরা খাবারের সন্ধানে এখানে চলে আসে। এ বছর পরিযায়ী পাখিরা অবশ্য একটু দেরিতে এসেছে। তবে মাঝে কয়েকদিন বেশ ভাল রকম ঠান্ডা পড়ায় দলে দলে পরিযায়ী পাখিরা এখানে ভিড় জমায়।
প্রকৃতি সংসদের পক্ষ থেকে শনিবার পাখি গণনার কাজ হয়। জানা গিয়েছে, এ বছর মোট ৬৭৪২টি পরিযায়ী পাখি এসেছে। এদের মধ্যে তিনটি ট্রানস হিমালয়ান প্রজাতির পাখি আছে। তারা হল লেসার হুইসলিং বার্ড, গাডওয়াল এবং নর্দান পিন্টেল। এদের সংখ্যা যথাক্রমে ৬৬৭৪টি, ৮টি এবং ১টি। এ ছাড়াও এগারো প্রজাতির পাখি এসেছে। এদের মধ্যে কমন মুরহেন, ব্রোঞ্জ জাকানা, পার্পেল হেরন, হোয়াইট ওয়াগটেল, লিটল কর্মরান্ট, গ্রেট ইন্ডিয়ান পনড হেরন এবং হোয়াইট থ্রোটেড কিংফিশার এবং অন্যান্য পাখি রয়েছে।
প্রকৃতি সংসদের পক্ষ থেকে প্রসেনজিৎ দাঁ জানিয়েছেন, গত বছরের তুলনায় এবারে পাখির সংখ্যা বেশি হলেও প্রজাতির সংখ্যা কমেছে। যা যথেষ্ট উদ্বেগের। প্রকৃতি সংসদের বক্তব্য, ঝিলে কচুরিপানার পরিমাণ নির্দিষ্ট থাকার ফলে পাখিরা অনেক সচ্ছন্দ্যে বসবাস করতে পারছে। চারদিকের শব্দ দূষণ এবং উপদ্রব থেকে কচুরিপানায় সহজেই লুকিয়ে থাকা যায়। তাই আগে থেকে কচুরিপানার বংশ বৃদ্ধির ফলে পরিযায়ী পাখিদের ভালই হয়েছে।
প্রকৃতি সংসদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সালে ১৬টি প্রজাতির ৫৬৯৪ পাখি এসেছিল। যাদের মধ্যে লেসার হুসলিং ডাক ছিল ৫৬০১টি। পরের বছর অর্থাৎ ২০০১ সালে এসেছিল ১২টি প্রজাতির ৫৬৫১টি পাখি। যার মধ্যে লেসার হুইসলিং বার্ড এসেছিল ৫৫৩৬টি। এদিকে পরিযায়ী পাখি দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছেন পক্ষী প্রেমিকরা। হাতে বাইনোকুলার নিয়ে হাজির হচ্ছেন ঝিলের ধারে। শুধু চক্ষুসুখই নয়, ক্যামেরাবন্দিও করছেন সেসব পরিযায়ীদের। এ মরসুমে পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুশি তাঁরাও।