Odisha Road Accident: প্লাস্টিক চাদরে পেঁচিয়ে বাঁশের সঙ্গে বাঁধা, গ্রামের এক কোণে পরপর শায়িত দেহগুলো! সুলতানপুরে শ্মশানের নিঃস্তব্ধতা

Odisha Road Accident: নিহতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা। ওড়িশায় পর্যটক বোঝাই বাস উল্টে গিয়ে মৃত্যু হয় ৬ বাঙালি পর্যটকের।

Odisha Road Accident: প্লাস্টিক চাদরে পেঁচিয়ে বাঁশের সঙ্গে বাঁধা, গ্রামের এক কোণে পরপর শায়িত দেহগুলো! সুলতানপুরে শ্মশানের নিঃস্তব্ধতা
উলুবেড়িয়ার গ্রামে শোকের ছায়া
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 26, 2022 | 7:12 AM

হাওড়া: গ্রামের পূব দিকের একটা ফাঁকা জায়গা। উলুবেড়িয়ার সুলতানপুর গ্রামের সব মানুষ কার্যত ভেঙে পড়েছেন সেই জায়গায়। শ্মশানের নিঃস্তব্ধতায় ছেদ ঘটাচ্ছে স্বজনহারাদের আর্তনাদ। দলা পাকানো কষ্টটা ব্যথা ধরাচ্ছে পড়শিদের গলায়। বাঁশের খাটিয়ার সঙ্গে কোনওক্রমে প্লাস্টিক চাদরে বেঁধে পরপর শায়িত রয়েছে পাঁচটা দেহ। ক’দিন আগেই যে ওরা হই হই করতে করতে গিয়েছিলেন ঘুরতে। আসার সময়ে পড়শিদের জন্য ‘কুপন গিফট’ নিয়ে আসারও কথা বলেছিলেন। তাঁরাই ফিরেছেন, নিষ্প্রাণ শরীরে। একটা গ্রামের পাঁচজনের মৃত্যু ওড়িশার বাস দুর্ঘটনায়, স্বজন হারাদের কান্নায় কার্যত বুক ফাটছে সুলতানপুরের। বৃহস্পতিবারের সকালটায় সুলতানপুরের চেহারাটা একেবারেই অন্য। কারোর বাড়িতেই সকাল থেকে হাঁড়ি চড়েনি, নেই ব্যস্ততা। সকাল থেকেই তাঁরা ভিড় জমিয়েছিলেন গ্রামের পূর্ব দিকেই সেই বাঁশ দিয়ে ঘেরা জায়গায়, যেখানে এনে রাখা হয়েছে ৫ জনের দেহ। এদিন সকাল সাড়ে চারটে নাগাদ উলুবেড়িয়ায় পৌঁছয় ওড়িশায় বাস দুর্ঘটনায় নিহত ৬ জনের নিথর দেহ। মৃতরা হলেন, সুপ্রীয়া দেঁড়ে(৩৩), সঞ্জীত পাত্র(৩৪), রীমা দেঁড়ে(২২), মৌসুমী দেঁড়ে(৪০), বর্নালী মান্না(৩৪)।   তাঁদের মধ্যে একজনের বাড়ি হুগলির জাঙ্গিপাড়া এলাকায়। তাঁর নাম স্বপন গুছাইত (৬৪)। তিনি পেশায় রাঁধুনী ছিলেন।

গ্রামে গিয়েছেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার সৌম্য রায় ও বিধায়ক সমীর পাঁজা। আজই বিকালের মধ্যে প্রত্যেকের  সৎকার্য সম্পন্ন হবে বলে জানা গিয়েছে। বাকি এক জনের দেহ পাঠানো হয়েছে হুগলিতে। অন্যান্য আহত ৪৫ জন যাত্রীদেরও একটি অন্য বাসে করে গ্রামে ফেরানো হচ্ছে। নিহতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

পরপর শায়িত রয়েছে নিহতদের দেহ

চলতি মাসের ১৬ তারিখ বেলা ১টা নাগাদ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের সুলতানপুর সহ বিভিন্ন পাড়া থেকে একটি সমবায় সমিতি ঘুরতে যাওয়ার ট্যুর পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনা অবশ্য প্রত্যেক বছরই হয়। মাসে মাসে টাকা জমিয়ে ট্যুর পরিকল্পনা করা হয়। এই বছরের গন্তব্য ছিল অন্ধপ্রদেশের ভাইজ়্যাক। শুধু ভাইজ্যাক নয়, পাশাপাশি আরও কয়েকটি জায়গায় ঘোরার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।

মঙ্গলবার অভিশপ্ত রাতে পুরীর খঞ্জনপুরের কাছে বাসটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। জানা গিয়েছে, বাসটিতে মোট ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। তার মধ্যে গুরুতর জখম মোট ৩০ জন। তাঁরা প্রত্যেকেই উদয়নারায়ণ পুরের বাসিন্দা। এর মধ্যে ২ জন পুরুষ ও চারজন মহিলার মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনার কারণ হিসাবে জানা যাচ্ছে, বাসটির গতিবেগ স্বাভাবিকের থেকে বেশি ছিল। রাতের দিকে কোনওভাবে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। তখনই ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কার্যত ৯০ ডিগ্রি হেলে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ছ’জনের।