National florence nightingale award : ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল আওয়ার্ড পাচ্ছেন ধূপগুড়ির স্মিতা ‘দিদিমণি’
National florence nightingale award : কাজে যোগ দেওয়ার পর বাসিন্দাদের সঙ্গে মিশে যান স্মিতা। তাঁদের খোঁজখবর নেন। আজ তিনি এলাকার বাসিন্দাদের কাছে স্মিতা দিদিমণি। পনেরো বছরের এই চাকরিজীবনে তাসাটি চা বাগানের মানুষগুলো যেন তাঁর পরিবার।
ধূপগুড়ি : ন্যাশনাল ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন ধূপগুড়ির মেয়ে স্মিতা কর। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ দিল্লিতে তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। ভারতীয় নার্সিং কাউন্সিলের তরফে ২০২১ সালে এরাজ্য থেকে পুরস্কার প্রাপক হিসেবে স্মিতার নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ২০২০ সালে ধূপগুড়িরই সুনীতা দত্ত এই পুরস্কার পান। এবার জাতীয় ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন স্মিতা। সেবিকা এবং ধাত্রীবিদ্যার জন্য দেশের সর্বোচ্চ এই পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
শুধুমাত্র এক শহরের মেয়েই নন, জাতীয় পুরস্কার প্রাপক দুই নার্সের বয়সে এক বছরের ব্যবধান। কাকতালীয়ভাবে পুরস্কার প্রাপ্তিও এক বছরের ব্যবধানে। দুজনেরই স্কুল জীবন শহরের বৈরাতিগুড়ি হাইস্কুলে। স্মিতা করের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা এই শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পাড়ায়। স্কুলজীবন শেষে ২০০২ সালে ভূগোলে অনার্স নিয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু, তিনি নার্সিং ট্রেনিংয়ে যোগ দেন। চাকরিতে যোগ দেওয়া ২০০৫ সালে। কিছুদিন দলগাঁও বাগানে কাজ করে স্থায়ী ভাবে তাসাটি চা বাগানের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগ দেন। সেখানে কাজে যোগ দিয়ে জানতে পারেন, দশ বছর সেখানে কোনও স্থায়ী কর্মী ছিল না। বাইরে থেকে একজন যেতেন মাঝেমধ্যে। এলাকার ১০০ শতাংশ শিশুর জন্ম হত বাড়িতেই। শিশু মৃত্যু, বাল্য বিবাহ, কম বয়সে গর্ভবতী হওয়া, টিকাকররণ না হওয়া ছিল এলাকার স্বাভাবিক ঘটনা।
সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে মিশে যান স্মিতা। আজ তিনি এলাকার বাসিন্দাদের কাছে স্মিতা দিদিমণি। পনেরো বছরের এই চাকরিজীবনে তাসাটি চা বাগানের মানুষগুলো যেন তাঁর পরিবার। ছুটির দিনেও তাই হাজির হন সেন্টারে। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল অ্যাওয়ার্ড পাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, “কী পরিস্থিতি থেকে শুরু করেছিলাম আর কোথায় এসে দাঁড়িয়েছি আজ, সেটাই যেন একটা পুরস্কার। মাঝে মাঝে ভাবলেও তাজ্জব লাগে। এই পুরস্কার তাসাটি চা বাগানের সমস্ত মা, শিশু আর মানুষের জন্যে যাঁরা এই পনেরো বছর ধরে আমাকে সাহায্য করে গিয়েছেন।”
চাকরিতে যোগ দিয়েই যখন যোগাযোগের সূত্রে শহরে পোস্টিং পেতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়, তখন স্মিতাদের মতো নার্সরা মাটি কামড়ে পরিস্থিতি আর সমস্যার সঙ্গে লড়ে আজ জাতীয়স্তরে সেরা। ধূপগুড়ির বাসিন্দারা তাই তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত। স্মিতার পুরস্কার পাওয়ার খবরে খুশি ধূপগুড়ি পৌর কর্তৃপক্ষ। ধূপগুড়ি পৌরসভার তরফে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে বলে জানালেন পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিং।
আরও পড়ুন : Ghatal Job Fare: ঘাটালে রাজ্য সরকারের কর্মসংস্থান মেলা, চাকরি দেওয়া হবে ২০০০ বেকারকে