Jalpaiguri: সাপে কেটেছিল ২ জনকে, হাসপাতালের বদলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গুণিনের কাছে, পরিণতি মর্মান্তিক
Jalpaiguri: ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগজান এলাকায় এক ব্যক্তির সাপের ছোবলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তির নাম রতন সরকার ৪৭। জানা গিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ পুকুর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় বিষধর সাপে কামড়ায়। পুকুর পাড়ে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকেন ওই ব্যক্তি।
জলপাইগুড়ি: সাপে কেটেছিল। হাসপাতালের বদলে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল গুণিনের কাছে। ওঝা গুণিন দিয়েই চলে চিকিৎসা। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় শেষমেশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শেষ রক্ষা আর হয়নি। বিষধর সাপের ছোবলে এক রাতেই মৃত্যু হল ২ জনের। ওঝার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হলে আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানালেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকে বৃহস্পতিবার রাতে দুটি পৃথক ঘটনায় সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। জানা গিয়েছে, ময়নাগুড়ি ব্লকের পশ্চিম শালবাড়ি এলাকার সুমন রায় ( ১০) নামে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রের সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে বাবা মায়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে ওই শিশুটি। সেই সময় বিষধর গোখরো সাপ ছোবল মারে বলে জানা গিয়েছে। এই অবস্থায় ওই ছাত্র যন্ত্রণায় ছটফট করলে তাঁর মা বাবা ওঠেন এবং বিষয়টি বুঝতে পারেন। এরপর প্রাথমিকভাবে বাড়িতেই ওঝা বৈদ্য ডেকে সাপের বিষ নামানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। পরে অবস্থায় অবনতি হলে ময়নাগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
অন্যদিকে, ময়নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগজান এলাকায় এক ব্যক্তির সাপের ছোবলে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। মৃত ব্যক্তির নাম রতন সরকার ৪৭। জানা গিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যা নাগাদ পুকুর পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় বিষধর সাপে কামড়ায়। পুকুর পাড়ে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকেন ওই ব্যক্তি। বেশ খানিকটা সময় অতিক্রম হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারলে তাকে উদ্ধার করে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এদিকে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ দুটি মৃতদেহকে উদ্ধার করে এবং শুক্রবার ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি মর্গে পাঠিয়েছে। পরিবেশ কর্মী অমল রায় বলেন, “ঘটনাটা শুনেছি। রাতে এই ঘটনা ঘটার পর তারা হাসপাতালে নিয়ে না এসে ওঝা কবিরাজ নিয়ে এসে ঝার ফুঁক করেছেন। তাতে কাজ না হওয়ার পর সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। ততক্ষণে শিশুটি মারা গিয়েছে। আমরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে লাগাতার সচেতনতা প্রচার করি।”
তিনি বলেন, “স্নেক বাইট হলে প্রথম ১ ঘণ্টা মূল্যবান সময়। এর মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে এলে রোগীর মৃত্যু হয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা গেল শিশুটিকে বাড়িতেই রেখে ওঝা কবিরাজ করে সময় নষ্ট করল। বলতে বাধ্য হচ্ছি পরিবারের সদস্যরাই ইচ্ছে করে বাড়িতে সময় নষ্ট করেছেন।”
ঘটনায় জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার অসীম হালদার বলেন, “আমরা স্নেক বাইট নিয়ে লাগাতার সচেতনতা প্রচার চালাই। কিন্তু এত কিছু করার পরেও একাংশ মানুষ কিছুতেই সচেতন হচ্ছে না। ওঝার বিরুদ্ধে যদি লিখিত অভিযোগ হয় তবে অবশ্যই আইন অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।”