‘গিনিপিগের মতো বেঁচে আছি,’ উত্তরবঙ্গ পৃথকে বার্লাকে সমর্থন কামতাপুর পিপলস পার্টির

কামতাপুর পিপলস পার্টির সভাপতি বলেন,"স্বয়ং সর্বভারতীয় দলের সাংসদ পৃথক রাজ্যের দাবি তোলায় উৎফুল্ল এখানকার যুব সমাজ। কারণ, আমরা এখানে গিনিপিগের মতো বেঁচে আছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চা-বাগান, সেভাবে কোনও উন্নয়ন হয়নি।"

'গিনিপিগের মতো বেঁচে আছি,' উত্তরবঙ্গ পৃথকে বার্লাকে সমর্থন কামতাপুর পিপলস পার্টির
অলংকরণ: অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: Jun 21, 2021 | 6:24 PM

রনি চৌধুরী: পৃথক কামতাপুরী রাজ্যের দাবি আগে উঠেছে এই উত্তরবঙ্গে। কিন্তু সেই আন্দোলন স্তিমিত হয়েছে। তবে গোটা উত্তরবঙ্গকেই পৃথক রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করতে বিজেপি সাংসদ (BJP MP) জন বার্লা (John Barla) যে দাবি তুলেছেন তাঁকে পূর্ণ সমর্থন করছে কামতাপুর পিপলস পার্টি (KPP)। প্রয়োজনে বিজেপি সাংসদ জন বারলার সঙ্গে বৈঠক করতেও প্রস্তুত কেপিপি। এমনই জানালেন কামতাপুর পিপলস পার্টি (ইউনাইটেড)-এর সভাপতি নিখিল রায়।

Tv9 বাংলাকে তিনি জানান, “এই পৃথক রাজ্যের আন্দোলন দীর্ঘদিনের। মাঝে সরকারের অতিরিক্ত পুলিশি তৎপরতা ও ধরপাকড়ের কারণে আন্দোলন কিছুটা দমে যায়। তবে এখন একটি সর্বভারতীয় দলের সাংসদ হয়ে জন বার্লা যেভাবে নতুন করে উত্তরবঙ্গ রাজ্যের দাবি করছেন তাকে সাধুবাদ জানাই।” এখানেই থামেননি নিখিলবাবু। জন বার্লার সুরেই তিনি বলেন, “এখানকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত, শোষিত। তাই তাঁর (পড়ুন জন বার্লা) এই দাবিকে পূর্ণ সমর্থন জানাই। প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গে কথা বলব।”

কামতাপুর পিপলস পার্টির সভাপতি আরও বলেন,”স্বয়ং সর্বভারতীয় দলের সাংসদ পৃথক রাজ্যের দাবি তোলায় উৎফুল্ল এখানকার যুব সমাজ। কারণ, আমরা এখানে গিনিপিগের মতো বেঁচে আছি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চা-বাগান, সেভাবে কোনও উন্নয়ন হয়নি।”

কিন্তু বিজেপি সাংসদের পৃথক উত্তরবঙ্গ দাবিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। বঙ্গ বিজেপি বলছে, তারা সাংসদের দাবির সঙ্গে সহমত নয়। এদিকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে তো নতুন করে উত্তপ্ত হতে পারে উত্তরবঙ্গ! এবিষয়ে নিখিল রায়ের দাবি,” এরকম হওয়ার কোনও ব্যাপার নেই।”

পাশাপাশি উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য যে সব সংগঠন এক হতে পারে, তার ইঙ্গিত দেন দিয়েছেন। এমনকি সে ব্যাপারে আলোচনা বা বৈঠক করতেও প্রস্তুত কেপিপি নেতা। এই প্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই নতুন করে উত্তরবঙ্গ গঠন নিয়ে আরও সরগরম হতে চলেছে রাজ্য রাজনীতি।

উল্লেখ্য, একুশের ভোটেও কামতাপুর ভূমিপুত্র মহাজোট অংশ নিয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, যে সমস্ত মৌলিক সমস্যার জন্য তারা এতদিন আন্দোলন করে এসেছে, তার একটিরও সমাধান হয়নি। তাদের দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম হল পৃথক রাজ্য ও এবং কামতাপুরী মাতৃভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি। বর্তমান রাজ্য সরকার আলাদা আলাদা ভাষার স্বীকৃতি দিয়েছে। রাজবংশী ও কামতাপুরী একই ভাষাকে দুটো আলাদা ভাষা বলে স্বীকৃতি দিয়ে বিভাজনের সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই ভাষাকে অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি সহ একগুচ্ছ সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে তাঁরা ভোটে লড়ছেন বলে জানিয়েছিলেন কামতাপুর ভূমিপুত্র মহাজোটের নেতারা।

আরও পড়ুন: পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তোলা জন বার্লার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ তৃণমূলের 

কামতাপুর আন্দোলন সুগঠিত হয়েছিল পৃথক রাজ্যের দাবি, ভাষাকে অষ্টম তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি নিয়ে। কিন্তু সেই আন্দোলনের ফসল তাঁরা ঘরে তুলতে পারেননি বলে দাবি করেন।