Adhir Chowdhury: ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেশন…যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়ছে’

Murshidabad: মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে অবিজেপি শাসতি রাজ্যগুলি। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সরব পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যে দু’দুটি খোলা চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়ে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

Adhir Chowdhury: 'ওয়ান নেশন, ওয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেশন...যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়ছে'
ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 22, 2022 | 3:00 PM

মুর্শিদাবাদ: আমলার বদলি নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্রের টানাপোড়েন এবার কার্যত কুরুক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারি ‘ডেডলাইন’। তার মধ্যেই সব রাজ্যকে জবাব দিতে হবে কেন্দ্রের পাঠানো খসড়া প্রস্তাব নিয়ে তাদের কী মত। এই প্রস্তাবের মোদ্দা বক্তব্য, ১৯৫৪ সালের আইএএস (ক্যাডার) আইনে সংশোধনী এনে নিজের হাতে ক্ষমতা রাখবে কেন্দ্র। যা নিয়ে রীতিমতো নতুন করে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। এ বার সেই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)।

বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতার কথায়, “কেন্দ্র সরকার চাইছে, যেভাবে হোক নিজেদের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার। এভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা যায় না। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা চলছে। আগামীতে এখানে একটাই স্লোগান উঠবে ‘ওয়ান নেশন, ওয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’। এইটাই চাইছে কেন্দ্র। আমি দেশের সকল বিরোধী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের অনুরোধ করব আপনারা সকলে সমবেত হয়ে এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করুন।”

বস্তুত, মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে স্বভাবতই তীব্র বিরোধিতা জানিয়েছে অবিজেপি শাসতি রাজ্যগুলি। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সরব পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যে দু’দুটি খোলা চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়ে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগও করেন, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী। কী আছে কেন্দ্রের এই খসড়া প্রস্তাবে? কেনই বা কেন্দ্র তৎপর হচ্ছে আইএএস আইন সংশোধন করতে?

১৯৫৪-র আইএএস (ক্যাডার) আইনের ৬(১)ধারা অনুযায়ী রাজ্যের অধীনে থাকা কোনও ক্যাডার অফিসারকে ডেপুটেশন চাইলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের অনুমতি বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হবে। রাজ্য ও কেন্দ্রের আলোচনার ভিত্তিতে সেই আধিকারিককে বদলি করা যাবে। তবে আধিকারিকের ইচ্ছাকেও যথেষ্ট প্রাধান্য দিতে হবে।

যদি বিরুদ্ধমত তৈরি হয়, তবে আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান করতে হবে। অর্থাৎ কেন্দ্র চাইলেই কোনও আধিকারিককে তলব করতে পারবে না, সেক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমতি প্রয়োজন।

কিন্তু, এতে সমস্যা কোথায়? কেন বদল চাইছে কেন্দ্র? মোদী সরকারের যুক্তি, কেন্দ্রের হাতে আইএএস ক্যাডার যথাযথ নেই। ফলে ব্যাহত হচ্ছে প্রশাসনিক কাজ। সূত্রের খবর, কেন্দ্রে একজন আইএএস আধিকারিকের উপর একাধিক বিষয়ে দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। মাত্র ১০ শতাংশ আইএএস অফিসার (মিড লেভেল) স্থানান্তরিত হয়েছেন ২০২১ সালে। ২০১৯ সালেই সেই শতকরাই ছিল ১৯।

নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রে ৪০ শতাংশ ডেপুটেশন পদ বরাদ্দ রয়েছে। রাজ্যের অধীনে থাকা আইএএস আধিকারিকদের কেন্দ্র ডেপুটেশন চাইলে সেখানে কাজ করা বাধ্যতামূলক। বাস্তবিক ক্ষেত্রে সেভাবে ডেপুটেশন হচ্ছে না বলে মত কেন্দ্রের।

ক্যাডারবিধি সংশোধন হলে  বদলির ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ  থাকবে কেন্দ্রের উপর। রাজ্য নিজের ইচ্ছে মতো ভিটো প্রয়োগ করে কোনও আধিকারিককে আটকাতে পারবে না। যদি, কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে কোনও মতান্তর হয়, তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্রই। অন্তত, সংশোধনী আইনে সেই ক্ষমতা থাকবে কেন্দ্রের হাতে।

পাশাপাশি, কেন্দ্র যখনই আধিকারিককে তলব করে, রাজ্যের অনিচ্ছা সত্ত্বেও চলে আসতে হবে সেই আধিকারিককে। অর্থাৎ, সংশোধনী আইনে রাজ্যের অধিকার খর্ব হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।

ইতিমধ্যেই, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও ওড়িশা, বিহার, মেঘালয়, মধ্য প্রদেশ প্রস্তাবিত খসড়ার বিরোধিতা করে জানিয়েছে, বর্তমান আইন পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। সূত্রের খবর, রাজ্যের তরফে সহযোগিতা না মিললে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সংসদে আগামী অধিবেশনে ক্যাডার আইন সংশোধনী বিল পেশ করা হতে পারে বলেও জানা যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: Jai Hind University: চার দেওয়ালের মধ্যে প্রস্তাব, কবে পরিণতি? থমকে জয় হিন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ