Murshidabad: আলাদা করতে পারল না মৃত্যুও! স্বামী চোখ বুঝতেই ৩ মিনিটের মধ্যে বুকে মাখা রেখে চলে গেলেন স্ত্রীও
Murshidabad: সবে তখন বাড়িতে উঠেছে কান্নার রোল। খবর চাউর হতেই বৃদ্ধকে শেষ দেখা দেখতে মণ্ডল বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন এলাকার লোকজন। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বৃদ্ধের স্ত্রী নিয়তি মণ্ডল (৬৮)। চোখের জল বাঁধ মানছে না মণ্ডল পরিবারের বাকি সদস্যদেরও। তার মধ্যেই ঘটল ঘটনাটা।
ভরতপুর: ছেলেপুলে, নাতি-নাতনি নিয়ে ভরা সংসার। একসঙ্গে দু’জনে কাটিয়ে ফেলেছেন ৫০টা বছর। ৫ দশক ধরেই একে অপরের সুখ-দুঃখের সঙ্গী। একজনের বয়স ৮৫, একজনের ৬৮। কিন্তু, জীবনের শেষবেলায় এসেও মৃত্যুও আলাদা করতে পারল না বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে। মুর্শিদাবাদের ভরতপুর থানা এলাকার ভোলতা গ্রামে থাকতেন শঙ্কর মণ্ডল (৮৫)। দীর্ঘদিন থেকেই ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত সমস্যায়। কয়েকদিন আগে তাঁকে ভরতপুর গ্রামীণ হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল। কিন্তু, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পর ফের শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন তিনি। প্রায় ৬ দিন আর বিছানা ছেড়ে উঠতে পারেনি। অবশেষে সোমবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন তিনি।
সবে তখন বাড়িতে উঠেছে কান্নার রোল। খবর চাউর হতেই বৃদ্ধকে শেষ দেখা দেখতে মণ্ডল বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন এলাকার লোকজন। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বৃদ্ধের স্ত্রী নিয়তি মণ্ডল (৬৮)। চোখের জল বাঁধ মানছে না মণ্ডল পরিবারের বাকি সদস্যদেরও। পাড়ার লোকজনের সঙ্গেও সকলের সুসম্পর্ক। মণ্ডল পরিবারের কর্তা যে আর নেই তা মানতে পারছেন না তাঁরা। সকলের মুখ থমথমে। এরইমধ্যে দেখা গেল শঙ্করবাবুর বুকের উপর থেকে আর উঠছেন না তাঁর স্ত্রী নিয়তি দেবী। কান্নাও ততক্ষণে থেমে গিয়েছে।
এ দৃশ্য দেখে সকলে ততক্ষণে ভেবেছেন হয়তো শোকের ধাক্কায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন নিয়তি দেবী। কিন্তু, কাছে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোনও কাজ হয়নি। কিছু সময় পর দেখা গেল তাঁর নিথর দেহ পড়ে গেল মাটিতে। খবর গেল গ্রামের চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক এসে জানালেন স্বামীর মৃত্যুর ৩ মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে স্ত্রীর। ডাক্তারের ধারণা, স্বামীর মৃত্যু শোক সামলাতে না পেরেই বোধহয় স্ত্রী নিজেও মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছেন।
ডাক্তারের মুখে খবরটা শুনে প্রথমে যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। একযোগে মা-বাবাকে হারিয়ে শোকে পাথর সন্তান-সন্ততি থেকে নাতিনাতনিরাও। নতুন করে নিয়তি দেবীর মৃত্যুর খবর চাউর হতেই একেবারে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়ে মণ্ডল বাড়িতে। শোকের ছায়া গোটা এলাকায়।