Kalyani Station Video: ভোরবেলাতেও ট্রেনের লেডিস কামরা পুরুষের দখলে, খেল দেখাচ্ছে কল্যাণী

Kalyani Station: প্রশ্ন একটাই, এইভাবে যে ভিড় হচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসন আদৌ কী ভূমিকা পালন করছে? কেবল তো দর্শনার্থীদের 'দখলে'ই ট্রেন থাকবে, তা তো নয়। ট্রেনে নিত্য দিন আনা খাওয়া প্রচুর মানুষ জেলা থেকে কলকাতায় আসেন।

Kalyani Station Video: ভোরবেলাতেও ট্রেনের লেডিস কামরা পুরুষের দখলে, খেল দেখাচ্ছে কল্যাণী
কল্যাণীতে হুজুকের ভিড়
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 21, 2023 | 2:07 PM

কল্যাণী: ভোরের প্রথম রানাঘাট লোকাল। সাধারণত এই সময়ে ট্রেনে সবজিওয়ালা ও সাধারণ কিছু যাত্রীর ভিড় থাকে। আর পাঁচটা দিন  ভোরের ট্রেনে ভিড় সে অর্থে থাকে না। পুজোর মধ্যে সেই ধারণা আমূল বদলে গেল। প্রচলিতই আছে, পুজোয় লোকে শহরে আসেন ঠাকুর দেখতে। রাতভোর কলকাতা চষে ভোরে জেলা মফঃস্বলে ফেরা। সেক্ষেত্রে ধারণা ছিল, শিয়ালদা মেইন লাইনে ভোরের দিকে ডাউনের ট্রেন ফাঁকাই থাকবে। সবাই কলকাতায় ঠাকুর দেখে আপের ট্রেন ধরে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু তেমনটা যে একেবারেই নয়, প্রথা যে ভাঙছে, তা প্রমাণ করল কল্যাণী। লক্ষ লক্ষ মানুষ কলকাতা থেকে কল্যাণী ট্রেনে চরে গিয়েছেন কেবল ঠাকুর দেখবেন বলে! কলকাতার বড় বড় কোটি টাকার পুজোকে বলে বলে গোল দেবে  কল্যাণীর পুজো। সেই ঠাকুর দেখতে কাতারে কাতারে ভিড় কল্যাণীতে।

কল্যাণী  A 9 স্কোয়ারে এবারের পুজোর থিম উত্তরাখণ্ডের চারধাম, হ্রদতলা সর্বজনীন দুর্গাউৎসব, কল্যাণী A 2 দুর্গাউৎসব কমিটির পুজোতে ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় মানুষ চার-পাঁচ কিলোমিটার লাইনে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখেছেন। সঙ্গে লাইনে চরম বিশৃঙ্খলা। ধাক্কাধাক্কি-অশান্তি। কল্যাণীতে এমনই ভিড় হচ্ছে, যে বাধ্য হয়ে কল্যাণীর ঘোষপাড়া স্টেশনে ট্রেনই দাঁড়াচ্ছে না। ফলে তৈরি হয়েছে আরও বাড়তি চাপ।

পরিস্থিতি এমন যে, রাত দশ, সাড়ে দশটা, বারোটা থেকে প্ল্যাটফর্মে বসে অপেক্ষা করেছে মানুষ। ডাউনের ট্রেন ধরবেন বলে রাতভর প্ল্যাটফর্মে বসেই অপেক্ষা করেছেন। যে ট্রেন এসেছে, তাতে উঠতে পারেননি বহু মানুষ। ভোরের প্রথম রানাঘাট লোকালে হুড়মুড়িয়ে ভিড়, যে ভিড় রীতিমতো শিউরে ওঠার মতো।

একটা গোটা ট্রেনে লেডিস কামরা বলে কিছুই নেই। গোটাটাই দখলে চলে গিয়েছে ঠাকুর দেখে ফেরা দর্শনার্থীদের। ভোরের ট্রেনে বাঁদুরঝোলা হয়ে ফিরছেন তাঁরা। ট্রেনের কামরায় তিল ধারণের জায়গা নেই। ঠাসাঠাসি ভিড়, গাদাগাদি অবস্থা, এমন অনেকেই রয়েছে, ভিড়ের মধ্যে যাঁদের পায়ে থেকে চটি পর্যন্ত খুলে গিয়েছে।  দর্শনার্থীদের অধিকাংশই শিয়ালদা নামবেন। অর্থাৎ যে ট্রেন মোটামুটি দমদম, বিধাননগর রোড স্টেশনে ফাঁকা হয়, সেই ঠাসা ভিড় থাকল একেবারে গন্তব্য পর্যন্ত। এমনকি ভোরের ট্রেনের মহিলা কামরায় চোখে পড়ল না কোনও রেলপুলিশকেও। মহিলা কামরা কার্যত পুরুষের দখলে! সিটে বসে দাঁড়িয়ে, সিটি মেরে, স্লোগান দিয়ে ‘পাবলিক ট্রেন’ রীতিমতো ‘প্রাইভেট কারে’ই পরিণত করে ফেলেছেন পুজো হিড়িক দর্শনার্থীরা।


প্রশ্ন একটাই, এইভাবে যে ভিড় হচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রশাসন আদৌ কী ভূমিকা পালন করছে? কেবল তো দর্শনার্থীদের ‘দখলে’ই ট্রেন থাকবে, তা তো নয়। ট্রেনে নিত্য দিন আনা দিন খাওয়া প্রচুর মানুষ জেলা থেকে কলকাতায় আসেন। তাঁদের কী হবে? তাঁরা তো ট্রেনে উঠতেই পারছেন না?

কল্যাণীর চেয়ারম্যান  নীলিমেশ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ঘোষপাড়া স্টেশনে দাঁড়াচ্ছে না ট্রেন। সামনেই একটা বড় পুজো আছে। সেখানে এত ভিড়, সেখানে ভীষণ যানজট তৈরি হচ্ছে। সেই ভিড় আটকাতেই বোধহয় ট্রেন সেখানে দাঁড়াচ্ছে না।”