Barrackpur Awas Yojona: কারোর মার্বেলে মোড়া বাড়ি, কেউবা ঘর ভাড়া দেবেন বলে ‘এক্সট্রা’ বাড়ি! আবাসের তালিকা দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশেরও

Barrackpur Awas Yojona: স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ওই কাঠের মিস্ত্রিকে। পুলিশের জেরায় তিনি জানান, যখন নাকি তিনি আবেদন করেছিলেন, তখন এই বাড়ি ছিল না।

Barrackpur Awas Yojona: কারোর মার্বেলে মোড়া বাড়ি, কেউবা ঘর ভাড়া দেবেন বলে 'এক্সট্রা' বাড়ি! আবাসের তালিকা দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশেরও
আবাস যোজনার তালিকায় নাম থাকা নিয়ে বেনিয়ম
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 16, 2022 | 11:52 AM

উত্তর ২৪ পরগনা: আবাস যোজনার বাড়ির আবেদনের ছানবিন, আর তা করতেই বেরোচ্ছে কেঁচো খুড়তে কেউটে। বারাকপুর ১নং ব্লকের কাউগাছি ১নং পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় আবাস যোজনার তালিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাতেই বেরিয়ে পড়ছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। বারাকপুর মহকুমার পানপুর বিডি অফিসের বারাকপুর ওয়ান পঞ্চায়েত সমিতির কাউগাছি এক নম্বর পঞ্চায়েতে আবাস যোজনা নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। আবাস যোজনার ৫৬৯ টি বাড়ির নামে অনুমোদন এসেছে। এই আবাস যোজনার প্রকল্পে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাশাসকের নির্দেশে ১০ শতাংশ বাড়ির অনুমোদন যাচাই করে দেখবে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। কাউগাছি এক নম্বর পঞ্চায়েত বাসুদেবপুর থানা এলাকায় অনুমোদিত বাড়ি যাচাই করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি এরকম বাড়ির চোখে পড়ে যেগুলো অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়মাবলী বিরুদ্ধ। পাকা বাড়ি থাকতেও তাঁরা এই প্রকল্পে বাড়ির জন্য আবেদন জানিয়েছেন। অভিযান চালিয়ে সেরকমই কয়েকটা ঘটনা উঠে এসেছে। কেউ ভাঙা বাড়ি,কেউ ফাঁকা জমি দেখিয়ে এই প্রকল্পে ঘরের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। অভিযোগ উঠছে তেমনটাই।

এই পঞ্চায়েতেরই কমলপুর এলাকার বাসিন্দা রাজেশ দেবনাথ। পেশায় কলের মিস্ত্রি। অভিযোগ, তিনি তাঁর এক আত্মীয়ের ফাঁকা জমি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘরের আবেদন করেছেন। বাসুদেবপুর থানার পুলিশ সে তথ্য যাচাই করতে গিয়ে দেখে, আবেদনের সময় যে জমির নথি দেওয়া হয়েছিল, সেই জায়গায় নবনির্মীত বাড়ি রয়েছে। আর সেই বাড়ি টাইলস, মার্বেলে তৈরি। ঝা চকচকে বাড়ি দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত পুলিশ।

স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় ওই কাঠের মিস্ত্রিকে। পুলিশের জেরায় তিনি জানান, যখন নাকি তিনি আবেদন করেছিলেন, তখন এই বাড়ি ছিল না। পরবর্তীকালে তিনি বাড়ি নির্মাণ করেন। এই বাড়ি করতে গিয়ে দেনায় পড়ে গিয়েছেন। সেই ঋণের টাকা শোধ করার জন্যই আত্মীয় জমি দেখিয়ে এই প্রকল্পের আর্থিক সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন।

TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনেও দোষ স্বীকার করেছেন রাজেশ। তবে এরকম আর কতো রাজেশ আছে, তা খুঁজে বের করতে রীতিমতো হিমসিম খাচ্ছে পুলিশ। সমস্যায় পড়ছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও।

আবার ওই এলাকারই বাসিন্দা বলাই বিশ্বাসের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, পুরো তিন কাঠা জমিতেই বাড়ি। আট থেকে দশটা ঘর সেই বাড়িতে। তারপরও তিনি আবাস যোজনায় বাড়ির আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি বাড়িতে ভাড়া দেবেন ।অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি বানিয়ে ভাড়া দিয়ে আয় করবেন মাসে মাসে। এই এলাকায় এই প্রকল্পে ৫৬৯ টি অনুমোদন পড়েছে। ১০ শতাংশ খতিয়ে দেখতে গিয়ে প্রশাসন পাঁচ শতাংশ বাড়ির অনুমোদন যথার্থ নেই।

আবাস যোজনার প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন শাসক-বিরোধী সব পক্ষই। তবে এই পর্যায়ের বেনিয়ম প্রকাশ্যে আসার পর কাউগাছি ১ নম্বর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তারক আদপ বলেন, “যদি কেউ এরকম অন্যায় ভাবে আবেদন করে থাকেন, তাদের আবেদন মঞ্জুর করা হবে না। প্রয়োজনে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”