Basirhat Awas Yojona: ‘উজ্জ্বলা গ্যাস থাকলে আবাসের ঘর পাবেন না’, মন্ত্রীর মন্তব্যে বিভ্রান্তি
Basirhat Awas Yojona: সেচমন্ত্রীর বক্তব্য, "বিজেপি সরকার যতই গরিব মানুষের কথা বলুক না কেন, আবাস যোজনার ঘর পেতে যে ১৫টি শর্ত দিয়েছে কেন্দ্র, সেই শর্ত মানলে কোন গরিব মানুষই ঘর পাবেন না।"
বসিরহাট: তালিকায় নাম রয়েছে, তবুও আবাস যোজনায় ঘর পাচ্ছেন না অনেকে। এমন অভিযোগ ভূরি ভূরি। শাসকদলের নেতৃত্বকে সামনে পেয়েও ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন অনেকে। এক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছিল। কিন্তু শাসকদলের খোদ মন্ত্রীই খাঁড়া করলেন অন্যরকম যুক্তি। রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের বক্তব্য, “আপনার বাড়িতে উজ্জ্বলা গ্যাস রয়েছে, আপনি তবে আবাস যোজনার বাড়ি পাবেন না।” ইতিমধ্যেই মন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা। বিষয়টা ঠিক কী ঘটেছে? বসিরহাটের স্বরূপনগর ব্লকে বাঁকড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোকুলপুর গ্রামে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে জনসংযোগ করতে যান রাজ্যের সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা স্বরূপনগরের বিধায়িকা বিনা মণ্ডল। তাঁরা ‘দিদির দূত’ হয়ে বাড়ি বাড়ি গেলে বহু গ্রামবাসী আবাস যোজনা নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ করেন। মন্ত্রীকে সামনে পেয়ে অনেকেই নিজেদের ঘর না পাওয়ার কথা জানান। বঞ্চিতদের বক্তব্য ছিল, “ঘরের তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও আমরা আবাস যোজনার ঘর পাচ্ছি না…” মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক তখন তাঁদের আশ্বস্ত করতে গিয়ে বলেন, “আপনাদের বাড়িতে উজালা গ্যাস আছে। যার কারণে ঘর পাচ্ছেন না।” তাঁর বক্তব্য, “বিজেপি সরকার যতই গরিব মানুষের কথা বলুক না কেন, আবাস যোজনার ঘর পেতে যে ১৫টি শর্ত দিয়েছে কেন্দ্র, সেই শর্ত মানলে কোন গরিব মানুষই ঘর পাবেন না।”
পার্থ ভৌমিকের কথায়, “আমরা অনেকের সঙ্গেই কথা বলেছি। দু-একজন, চার জন লোক, আমার ধারণা খুঁজলে এরকম অনেক লোক পাওয়া যাবে, যাঁরা বাড়িতে উজ্জ্বলা গ্যাস থাকার কারণে আবাসের টাকা পাননি। কেন্দ্রীয় সরকার একদিকে বলছে, যাতে কাঠকয়লায় গরিব মানুষকে রান্না করতে না হয়, তাদের উজ্জ্বলা গ্যাস দিচ্ছি, আবার উজ্জ্বলা গ্যাস রয়েছে বলে তাঁদেরকেই বাড়ির টাকা দিচ্ছে না। একদিকে বলছে, ডিজিট্যাল ইন্ডিয়া গড়বে, মোবাইলেও সব করো, আবার যাঁদের মোবাইল থাকবে, তাঁরা এক লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা পাবেন না। এটাই বলছি মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে।”
প্রশ্ন উঠছে ১৫টি শর্তের মধ্যে কি আদৌ উজ্জ্বলা গ্যাসের কথা বলা হয়েছে? তা নিয়েই ধন্দে গ্রামবাসীরা। আবাস যোজনা নিয়ে দিকে দিকে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যোগ্যদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, অথচ নাম থাকার অভিযোগ উঠেছে পেল্লাই প্রাসাদ, দালান বাড়ির মালিক নেতামন্ত্রীদের নাম। যা নিয়ে বিদ্ধ শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষই। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি মন্ত্রী ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই এই ধরনের কথা বললেন গ্রামবাসীদের সামনে।
আবার যদি মন্ত্রীর কথাই সঠিক হয়, অর্থাৎ উজ্জ্বলা গ্যাসের সংযোগ থাকলে আবাস যোজনার ঘর পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে অনেকেই ঘর পাবেন না। তা কি সঠিক? বিজেপির যুব সভাপতি পলাশ সরকারের অবশ্য বক্তব্য, “দিকে দিকে দিদির দূতদের মানুষ তাড়া করছেন। এখানে মন্ত্রী মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছেন। এই স্বরূপনগরে এক আশাকর্মীকে জোর করা হচ্ছিল তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিতে। সেই আশাকর্মী পরে আত্মহত্যা করেন। আমি মন্ত্রীকে প্রশ্ন করছি, আপনি এটা বলুন কীভাবে তৃণমূলের সংস্পর্শে যে গ্যারেজ বাড়ি আবাস যোজনায় হল, কীভাবে একতলা বাড়ি দোতলা হল?”