CID on TMC Leader Murder Case: ইছাপুরে তৃণমূল নেতা খুনে তদন্তে CID, ‘কোথায় গলদ?’, প্রশ্ন স্থানীয়দের
North 24 Pargana: গোপাল মজুমদার হত্যাকাণ্ডে রবিবার বিকেলেই একটি তিন সদস্যের সিআইডি প্রতিনিধি দল গিয়ে পৌঁছন। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন তাঁরা।
উত্তর ২৪ পরগনা: অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন ইছাপুরের তৃণমূল নেতা গোপাল মজুমদার। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই খুনের হুমকি পাচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা। তারপরেই শনিবার রাতে তাঁর উপর হামলা চালানো হয়। প্রথমে মাথার পেছনে আঘাত করে পরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও শেষে গুলি করে খুন করা হয় গোপালকে। কেন খুন তৃণমূল নেতা, তদন্তে সিআইডি (CID)।
সূত্রের খবর, গোপাল মজুমদার হত্যাকাণ্ডে রবিবার বিকেলেই একটি তিন সদস্যের সিআইডি প্রতিনিধি দল গিয়ে পৌঁছন। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন তাঁরা। মৃতের পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন। কথা বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গেও। নোয়াপাড়া পুলিশ, ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের সঙ্গে যৌথভাবে তদন্ত করবে সিআইডি এমনটাই খবর সূত্রের।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রকৃত দোষীরা ধরা পড়ুক। কিন্তু অনেকের মনেই প্রশ্ন, ‘গলদ কোথায়? কেন বারবার রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এলাকা?’ স্থানীয়রা চাইছেন আর কিছু না হোক অন্তত শান্তি ফিরুক এলাকায়। অন্তত জানুয়ারি মাসেই এই ব্যারাকপুর ও ব্যারাকপুর সংলগ্ন চত্বরে এমন হিংসার ঘটনা চোখে পড়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে…
১. ১৯ জানুয়ারি ভাটপাড়া ৩৪ ওয়ার্ড-এ তৃণমূল নেতা অসীম রায়কে লক্ষ্য করে গুলি। পরে চপার দিয়ে মাথায় আঘাত করে প্রাণে মারার চেষ্টা।
২. ২৫ জানুয়ারি টীটাগড় ব্রহ্মস্থানে বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীকে কেন্দ্র দলীয় কর্মীদের মধ্যে বচসা, হাতাহাতি ও উত্তেজনা সৃষ্টি
৩. ২৩ জানুয়ারি ভাটপাড়া মানিকপীড় এলাকায় সুভাষ স্মরণে বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং-কে বাধা। চলে গুলিও। প্রায় ১১ রাউন্ড মতো গুলি চলে সেদিন।
৪. ২৭ জানুয়ারি হালিশহরের জগন্নাথ ঘাটে বোমা বিস্ফোরণ হয়ে মৃত সুমিত সিং। এখনও নিখোঁজ রোহিত সিং এবং রোহিত মজুমদার। ঘটনায় আহত ২ কিশোর। এনআইএ তদন্তের দাবি অর্জুন, শুভেন্দু ও সিপিএম-এর। ২৯ জানুয়ারি নোয়াপাড়া বিধানসভার ইছাপুরে গোপাল মজুমদারকে গুলি করে, চপার দিয়ে কুপিয়ে খুন।
প্রশ্ন এখানেই, লাগাতার কেন এত অশান্তি? প্রশাসন কি জেগে ঘুমাচ্ছে? কেন অপরাধের লাগাম টানতে ব্যর্থ পুলিশ? কেনই বা অপরাধীদের পাকড়াও করা যাচ্ছে না? নেপথ্যে কোন চক্রীদের অঙ্গুলিহেলন? নানা প্রশ্নই ভিড় করছে এলাকাবাসীর মনে। পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তাঁরা।
শনিবার রাতে গোপালবাবুর উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। তখনই তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, গোপালবাবুর মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রথমে তাঁকে অজ্ঞান করে তারপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই গোপালবাবুর মৃত্যু হয়। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশিতে নেমেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এক জনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার রাতে, ইছাপুর বাবজি কলোনি এলাকায় নিজের বাড়ি ফিরছিলেন নোয়াপাড়া শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি গোপাল। সেইসময় তাঁর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, শনিবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে খুন করা হয়েছে গোপালকে। তাঁরা জানিয়েছেন, উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিপ্রা মজুমদারের স্বামী গোপাল।
শনিবার ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকেরা। এর পর তাঁর দেহ ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
ঘটনায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকায় পরিচিত বিজয় মুখোপাধ্যায় নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে দলীয় কার্যালয় থেকে একাই বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল নেতা। সেইসময় কিছু দুষ্কৃতী তার পথ আটকে দাঁড়ায়। গুলির শব্দ শুনেই ছুটে আসেন এলাকাবাসী।
শনিবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নোয়াপাড়া থানার পুলিশ। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার মনোজ বর্মা বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে পৌঁছন। খুঁটিয়ে দেখেন ঘটনাস্থল। কে বা কারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তৃণমূলের তরফে দুষ্কৃতীদের শাস্তির পাশাপাশি বিজেপির দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। যদিও সে অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি।
আরও পড়ুন: Seikh Sufiyan on Suvendu Adhikari: ‘ওঁ দেশি ছেলে, দেশি নুন ব্যবহার করেন, আমরা টাটা নুন দেব’