Basirhat: ১২ বছরের ‘একাকীবাস’ শেষে সীতার কাছে রাম, কে ফেরাল জানেন?

Basirhat: ছটপুজোয় সেদিন বাড়িতে বাড়িতে উৎসবের মেজাজ। লোকজনের আনাগোনা, হাসিঠাট্টার মাঝে চলছে রীতি পালনের পালা।

Basirhat: ১২ বছরের 'একাকীবাস' শেষে সীতার কাছে রাম, কে ফেরাল জানেন?
নিখোঁজ ব্যক্তি (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 31, 2022 | 6:52 PM

বসিরহাট: ত্রেতা যুগে কৈকেয়ীর চাওয়া বরে স্ত্রী সীতা ও ভাই লক্ষ্মণকে সঙ্গী করে পাড়ি দিয়েছিলেন বনবাসে। কলিযুগে সীতাহীন রামের ‘একাকীবাস’ কাটল সুদীর্ঘ বারো বছর শেষে। অবশেষে ফের রাম-সীতার মিলন হতে চলেছে পড়শি রাজ্য বিহারে। নিরুদ্দেশ স্বামীর খোঁজে ক্লান্ত সীতার দৃষ্টি ফের সজিব হওয়া অপেক্ষার রামের ছোঁয়ায়।

ছটপুজোয় সেদিন বাড়িতে বাড়িতে উৎসবের মেজাজ। লোকজনের আনাগোনা, হাসিঠাট্টার মাঝে চলছে রীতি পালনের পালা। ছবিটা ১২ বছর আগে বিহারের খাগাড়িয়া জেলার উত্তর হাজিপুর থানার শঙ্কর রামের বাড়ির খন্ড চিত্র। ভাগ্যের ফেরে সেদিনই নিখোঁজ হয়ে যান শঙ্কর। রাস্তা চিনে আর বোধহয় বাড়ি ফিরতে পারেননি তিনি। বিভিন্ন জায়গা ঘুরে শেষমেষ তার ঠাঁই হয় এই বাংলার বসিরহাট হিঙ্গলগঞ্জ বাজারে এলাকায়। বিগত মাস তিনেক যাবৎ কারও দোকান, আবার কখনও কারও উঠোনে কেটে গিয়েছে দিন। শেষমেশ জীর্ণ সম্পর্কে দেখেন এলাকার সমাজসেবী সুশান্ত ঘোষ। তিনি তাঁর সেবা-শুশ্রষা করে দুবেলা দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা করেন। এরপর কথোপকথনে জেনে নেন শঙ্করের বাড়ির ঠিকানা এবং তাঁর হারিয়ে যাওয়ার উপাখ্যান।

শেষমেশ সেই সমস্ত তথ্য নিয়ে সুশান্ বাবু যোগাযোগ করেন হ্যাম রেডিওর সঙ্গে। ওই সংস্থার পক্ষ থেকে পুলিশের সাহায্যে শঙ্করের পরিজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। থানায় পাঠানো হয় ওই প্রৌঢ়ের ছবি সহ নাম। দীর্ঘ বারো বছর পর স্বামীর হাসতে আর নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি শঙ্কর রামের স্ত্রী সীতা। তুমিগঞ্জ বাজারে এসে স্বামীকে এক দেখাতেই চিনে ফেলেন তিনি। স্ত্রীকে চিনতে পারেন শঙ্কর নিজেও। আলিঙ্গনরত স্বামী-স্ত্রী তাই আবেগে কেঁদেও ফেলেন। শঙ্করকে ফিরে পেয়ে আপ্লুত তাঁর পরিবার-পরিজনরাও।

এদিকে, শঙ্করকে ফের তাঁর ঠিকানায় ফেরাতে পেরে খুশি সমাজসেবী সুশান্ত বাবু এবং হ্যাম রেডিও-র সদস্যরাও। সুশান্তবাবু বলেন, ‘এই ধরনের মানুষকে বাড়ি ফেরাতে পারলে এক অদ্ভুত মানসিক শান্তি হয়।’ শঙ্করের এক আত্মীয় বলেন, টওনার মাথার একটু সমস্যা রয়েছে। দুইবার চিকিৎসার জন্য রাঁচিতে দেওয়া হয়েছিল। বছর বারো আগে হঠাৎ বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। আমরা ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। অবশেষে ওকে ফিরে পেয়ে ভাল লাগছে।’